বরিশালে পুলিশের লাঠিচার্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্মসূচি পণ্ড হয়েছে। এতে বিপুলসংখ্যক আন্দোলনকারী আহত এবং বেশ কয়েকজনকে আটকের অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আন্দোলনে বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে মৃদু লাঠিচার্জ করা হয়েছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মৌসুমী জানান, আজ (বুধবার) বেলা ১২টার দিকে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি নিয়ে বরিশাল আদালত প্রাঙ্গণে যাওয়ার চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় পুলিশের ধাওয়ার মুখে তারা ওই স্থান ত্যাগ করে সদর রোড টাউন হলের সামনে অবস্থান নেয়। সেখানে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে লাঠিচার্জ করে তাদের সেখান থেকে হটিয়ে দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে কোটা আন্দোলনকারীরা কাকলীর মোড় এলাকা হয়ে আদালতের সম্মুখে অবস্থান নেয়। পুলিশকে তারা বারবার বোঝানোর চেষ্টা করে এটা তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি। এখানে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না। কর্মসূচি পালনে বাধা না দিতে অনুরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু পুলিশ তাদের কোনও ধরনের অনুরোধ না শুনে নারী পুলিশ দিয়ে বেদম লাঠিপেটা করে। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। এ সময় অর্ধশত শিক্ষার্থীকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার দাবি করেন এ শিক্ষার্থী।
আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করা বাসদের জেলা সদস্যসচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছিল শিক্ষার্থীরা। কিন্তু পুলিশ সেই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বেধড়ক লাঠিচার্জ করায় শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী আহত হয়। এমনকি সেখান থেকে অর্ধশত শিক্ষার্থীকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।’ তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে অনতিবিলম্বে শিক্ষার্থীদের ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানান।
আন্দোলনে থাকা শিক্ষক বিপ্লব দাস বলেন, আমাদের সন্তানদের ডাকে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছি। কিন্তু সেখানেও পুলিশের লাঠিচার্জে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ একদমই কাম্য নয়।’
এ ব্যাপারে ঘটনাস্থলে থাকা বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের (বিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার তানভীর আরাফাত বলেন, ‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করে। এমনকি গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে মৃদু লাঠিচার্জ করা হয়।’ এ ঘটনায় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ কমিশনার জিহাদুল কবির বলেন, ‘আটককৃতদের বিরুদ্ধে যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে তাদের পরিচয় জেনে ছেড়ে দেওয়া হবে। সাধারণ মানুষের ভয়ের কিছু নেই। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে যাদের দোষী মনে হবে তাদেরই ধরা হবে।’