বান্দরবানের আলীকদমে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত আটদিনে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ জনে। বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) সকালে বান্দরবান সেভেন ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্সের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর মো. সাইফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মৃতরা হলেন- মাংদম ম্রো, ঙানলি ম্রো, রেংচং ম্রো, য়ুংচা পাড়ার তুমলত ম্রো, কাইসার ম্রো, রামদন ম্রো, চিংলে ম্রো, জনেরুং ত্রিপুরা, জেনোরং ত্রিপুরা (৪৪) সংপুর ম্রো (৪১) সংরিং ম্রো (৬) ও কাইকেউ ম্রো (১৮)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১০ জুন থেকে ১৩ জুন পর্যন্ত আলীকদম উপজেলার দুর্গম কুরুকপাতা ইউনিয়নের তিনটি পাড়ায় ডায়রিয়ায় আটজন মারা যান। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন আরও অর্ধ শতাধিক মানুষ। দুর্গম এবং ভালো যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকার কারণে ও সঠিক চিকিৎসার অভাবে বুধবার (১৬ জুন) আরও তিনজন মারা যান।
খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা হেলিকপ্টারে করে ওষুধপত্র ও বিশুদ্ধ খাবার পানি পৌঁছে দেয় এবং আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে সেখানে একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করে। আরও তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাদেরকে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
বান্দরবান সেভেন ফিল্ড অ্যাম্বুলেন্সের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মোট ১১জন মারা গেছে। আশঙ্কাজনক তিনজনকে হেলিকপ্টারে নিয়ে আসা হয়েছে। তাদের বান্দরবান সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আক্রান্ত এলাকায় সেনা সদস্যরা কাজ করছে। সেখানে একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর চিকিৎসকরা তাদের সেবা দিচ্ছে। খাবার পানি স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিস্থিতি এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে দুর্গতদের সব ধরনের সহায়তার জন্য ২৪পদাতিক ডিভিশনের ৬৯পদাতিক ব্রিগেড সর্বদা প্রস্তুত রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর যেকোনো আপদকালে পাশে থেকে সর্বাত্মক সহায়তা দিয়ে আসছে। এটি তারই একটি দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ।’ বান্দরবানের সিভিল সার্জন অংশৈপ্রু মার্মা জানান, সদর হাসপাতালে ভর্তি তিনজনের অবস্থা উন্নতির দিকে। তাদের মধ্যে মেনলে ম্রো (৫) ম্যালেরিয়ার শনাক্ত হওয়ায় তাকে ম্যালেরিয়ার চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।