ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পার্বত্য জেলা বান্দরবানে উদযাপন করা হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। উৎসবকে ঘিরে পার্বত্য জেলায় এখন আনন্দের আমেজ।
জেলা সদর ছাড়া ও পাহাড়ি পল্লিগুলোতে চলছে ধর্মীয় ও আদি সামাজিক নানান ঐতিহ্যের অনুষ্ঠান উদযাপন। জগতের মঙ্গল কামনায় বিহারে বিহারে চলছে প্রার্থনা।
প্রবারণা পূর্ণিমা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। এটি একদিনের অনুষ্ঠান হলেও বান্দরবানে মারমা আদিবাসীরা দুই দিনব্যাপী এই উৎসব পালন করেন নানান আয়োজনে। আষাঢ়ী পূর্ণিমার পর দিন থেকে টানা তিন মাসের বর্ষাবাস শেষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দিরে গিয়ে পঞ্চশীল, অষ্টশীল ও দশশীল গ্রহণ করেন এবং প্রবারণা পালন করেন। এ সময় সব অহিংসা ও পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার মন্ত্রে দীক্ষিত হন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মানুসারীরা।
প্রবারণা পূর্ণিমা পালন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকাল থেকে বান্দরবানের বিভিন্ন বিহারে বিহারে চলছে ভিক্ষুদের উদ্দেশে অর্থ ও অন্নদান, ফুল পূজা। আর উপাসক-উপাসিকারা গ্রহণ করছেন অষ্টশীল ও দশশীল। বিহারে বিহারে চলছে ধর্মীয় দেশনা ও জগতের সব প্রাণীর মঙ্গল কামনায় করা হচ্ছে বিশেষ প্রার্থনা। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিভিন্ন বিহারে বিহারে উপস্থিত হয়ে সুখ শান্তি লাভ ও পারিবারিক সুস্থতার জন্য প্রার্থনায় জড়ো হচ্ছেন। দায়ক-দায়িকারা মোমবাতি, ধুপকাটি প্রজ্বালন আর বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ছোয়াইং (বিভিন্ন ধরনের খাবার) প্রদান করে দিনটি পালন করছেন মহাআনন্দে।
প্রতিবার প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসবকে ঘিরে উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে বান্দরবানে ঘটা করে অনুষ্ঠিত হয় পিঠা উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তবে এবার তা হচ্ছে না। শুধুমাত্র আজ বিকালে বান্দরবানের পুরাতন রাজবাড়ী থেকে রথ টেনে রাজগুরু বৌদ্ধ বিহার ও উজানী পাড়া বৌদ্ধ বিহারে নেওয়া হবে। শুক্রবার বিকালে আবার সেই রথ টেনে সাঙ্গু নদীতে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের আয়োজন।