চাইলেই ৩০০-৩২০ রান করতে পারত বাংলাদেশ, তবে দলের মনোভাব শুরু থেকেই জেতার জন্যই ছিল বলে জানিয়েছেন অধিনায়ক লিটন দাস। লক্ষ্যটা ৩৫০-এর মধ্যে থাকলে চিত্রটা ভিন্ন থাকত বলেও মনে করেন তিনি। আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার চেষ্টা ব্যর্থ হলেও পরে এমন পরিস্থিতি এলে আবারও এভাবেই খেলবেন, এমনও জানিয়েছেন লিটন।
চট্টগ্রামের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ভারতের ৪০৯ রান তাড়া করতে গিয়ে ৩৪ ওভারে ১৮২ রানেই থেমেছে বাংলাদেশ। ভারতকে ধবলধোলাই করতে এসে বড় ব্যবধানের হারে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। বড় রান তাড়া করার চাপ থাকলেও এমন ব্যাটিং ব্যর্থতা স্বাভাবিকভাবেই এসেছে আলোচনায়।
সিরিজে আগের দুটি ম্যাচে মেহেদী হাসান মিরাজের দুর্দান্ত দুটি পারফরম্যান্স বাদ দিলে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা আলোচনাতেই ছিল। এক মাহমুদউল্লাহ ছাড়া শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যানের কেউই ৩০ রানের ইনিংসও খেলতে পারেননি।
প্রথম দুটি ম্যাচে মিরপুরের উইকেট আর আজ ব্যাটিং অ্যাপ্রোচের কথাই এর ব্যাখ্যা হিসেবে ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে দিলেন লিটন, ‘দেখেন, দুটি ম্যাচ ছিল মিরপুরে। সেখানে খারাপ হয়েছে তা নয়। যে দুটি ম্যাচের কথা বলছেন, ভারতেরও তেমনই ধস ছিল। উইকেটটার আচরণই তেমন ছিল কিছুটা। যদিও আজ খুব ভালো ব্যাটিং উইকেট ছিল। আমরা খুব ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি। তবে রানরেটের চাপটা এত ছিল, যে কারণে দ্রুত এগোতে হয়েছে। অবশ্যই ভালো উইকেটে খেললে ব্যর্থ হবেন বড় দলগুলোর সঙ্গে। তবে এর থেকেও পাওয়ার আছে, পরে কী কী করলে উন্নতি করতে পারবেন, এগুলো বোঝা যায়।’
বাংলাদেশ চাইলেই একটা মোটামুটি স্কোর গড়তে পারত, লিটন মনে করেন এমন, ‘আজ যদি ধরে খেলতেন, ৩০০ করতেন বা ৩২০ করতেন। কিন্তু দিন শেষে ম্যাচ হারতেন। আমরা কখনোই ম্যাচ হারার জন্য ব্যাটিং করিনি। চেষ্টা করেছি, যে যখনই যাবে, জেতার জন্য খেলবে। শিশিরের প্রভাব ছিল, অনেক কিছুই ছিল, কিন্তু দিন শেষে ম্যাচ জিততাম না। আমরা যে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট দরকার ছিল, সেটিরই চেষ্টা করেছি। ব্যর্থ হয়েছি। পরে এমন কোনো পরিস্থিতি আসলে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটই খেলব।’
অবশ্য এরপরও বড় রান তাড়া করতে গেলে উইকেট ধরে রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ, লিটন মনে করিয়ে দিয়েছেন সেটিও, ‘৪০০ হওয়ার পর টিম টক ছিল আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলব। একই সঙ্গে উইকেটও রাখার চিন্তাভাবনা ছিল। তবে আক্রমণ করলে কিছু সময় আপনার উইকেট চলেই যাবে। তবে আমরা যদি ২০ ওভারে ১ উইকেটে ১২০-১৩০ রান করতাম তাহলে ভিন্ন খেলা হতো। সে জিনিসটা আমরা করতে পারিনি। তবে পরবর্তীতে যদি আমরা এমন সুযোগ পাই যে ৩৭০-৩৮০ তাড়া করতে হবে, তাহলে এ রকম আক্রমণেই যাব। তবে এটি নিশ্চিত করব যেন তাড়াতাড়ি উইকেটগুলো না হারাই।’
অবশ্য লক্ষ্যটা বাংলাদেশের জন্য একটু বেশিই বড় হয়ে গেছে, সেটিও স্বীকার করেছেন এ সিরিজের অধিনায়ক, ৪০০ তাড়া করতে গেলে তো বিশাল চাপ থাকেই। ৩০০-৩৫০ করলে চিত্রটা ভিন্ন হতে পারত। এরপর অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘আমাদের স্কিল আছে, ৩০০ কীভাবে তাড়া করতে হয়।’
দল জিততে থাকায় অধিনায়কের কাজটাও সহজ হয়ে যায়। দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার চাপও তখন উপভোগ্য মনে হয়। লিটনের কথায়ও আজ সে আভাস পাওয়া গেল। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে অধিনায়কত্ব করতে চান কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলছিলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই। বিসিবি সুযোগ দিলে আবারও এ কাজ (অধিনায়কত্ব) করব। তবে আমি খুশি। তারা আমাকে সুযোগটি দিয়েছে।’