বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ও ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে গোপালগঞ্জে মানববন্ধন এবং দিনাজপুরে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে দুই জেলায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
দিনাজপুর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ও ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে দুপুরে দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন মুক্তিযোদ্ধারা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দিনাজপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মকসেদ আলী মঙ্গোলীয়া। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘যদি মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু কোনও অপরাধ করে থাকেন তাহলে দেশের প্রচলিত আইনে তার বিচার হতে পারে। কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধাকে এভাবে অপমানিত করা আমাদের সবার জন্য লজ্জার। একাত্তরের পরাজিত শক্তি আবারও প্রমাণ করলো তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব স্বীকার করে না। এর সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় আমরা কঠোর কর্মসূচি দেবো।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হৃদয়ে মুক্তিযুদ্ধ-৭১-এর আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল হক ছুটু, কুদরত-ই-খোদা, মতিয়র রহমান সরকার, আনোয়র হোসেন, আলীমউদ্দিন, আনোয়ারুল কাদির জুয়েলসহ অর্ধশতাধিক মুক্তিযোদ্ধা।
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ও ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় মানববন্ধন করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। মানববন্ধন শেষে ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
উপজেলা শহীদ মিনারের সামনে কোটালীপাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এ কর্মসূচি পালন করে। এতে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মান্নান শেখ, আতিয়ার রহমান, হরলাল বিশ্বাস প্রমুখ।
মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানুকে লাঞ্ছিত করা মানে মুক্তিযুদ্ধের ওপর আঘাত করা। এর মধ্য দিয়ে সব মুক্তিযোদ্ধাকে অপমান করা হয়েছে। আমরা ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি চাই।
মানববন্ধন শেষে ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার দুপুরে চৌদ্দগ্রামের বাতিসা ইউনিয়নের কুলিয়ারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইকে (৭৮) জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে রাতে এ ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচ জনকে আটক করেছে পুলিশ।