যশোরে জমজমাট চামড়ার হাট, দামে হতাশ মৌসুমি ব্যবসায়ীরা
বাংলাদেশ

যশোরে জমজমাট চামড়ার হাট, দামে হতাশ মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

যশোরের রাজারহাট এলাকায় শনিবার (২২ জুন) বসা ঈদপরবর্তী হাটে চামড়া উঠেছে আশানুরূপ। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, চামড়া কেনা থেকে বাজারজাত করতে যা খরচ হয়েছে, বিক্রি করতে হচ্ছে তার চেয়ে কম দামে। এতে চালান বাঁচানো দায় হয়ে পড়েছে। তবে ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের দাবি, সরকার নির্ধারিত দামেই চামড়া বিক্রি করছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।

রাজারহাট দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম বড় চামড়ার হাট। এখানে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজশাহী, পাবনা, ঈশ্বরদী, নাটোরের বড় বড় ব্যবসায়ীরা চামড়া বেচা-কেনা করেন। ঈদপরবর্তী প্রথম হাটে অল্পকিছু চামড়া আনলেও শনিবারের হাটে প্রায় ৬০ হাজার চামড়া আনা হয়েছে বলে দাবি ইজারাদার ও ব্যবসায়ী নেতাদের।

খুলনার ফুলতলা উপজেলার রঘুনাথপুর থেকে ২১৬ পিস গরুর চামড়া নিয়ে এসেছেন লক্ষ্মণ চন্দ্র দাস নামে এক ব্যবসায়ী। ১৯৮২ সাল থেকে তিনি চামড়া কেনা-কেনা করে আসছেন। তিনি বলেন, ‘সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ছোট আকারের ৪০ পিস গরুর চামড়া বিক্রি করেছি ৪০০ টাকা দরে। বড়গুলোর দাম ৬০০ টাকার নিচে।’

তিনি জানান, প্রতিটি চামড়া কেনা, লবণ দেওয়া, পরিবহন, শ্রমিক খরচ দিয়ে গড়ে খরচ হয়েছে ৮০০ টাকার মতো। কিন্তু বাজারের যে দর, তাতে চামড়া বিক্রি করে লাকসান হবে।

ভোর ৪টায় নড়াইলের তুলারামপুর থেকে ২৭৫ পিস গরু আর ১০০ পিস ছাগলের চামড়া এনেছেন বাবু দাস। এবার কোরবানি ঈদে তিনি ৪০০ পিস গরুর চামড়া কিনেছেন। এতে গড়ে খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে ৭০০ টাকা। কিন্তু বাজারে দাম বলছে ৫০০ টাকা। ছাগলের চামড়ার দাম বলা হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।

মাগুরার শালিখা থেকে লিটন লিটন দাস ১০০ পিস গরুর চামড়া এনেছেন। বিক্রি হয়েছে ৮০ হাজার টাকায়। তিনি বলেন, ‘কেনাকাটাসহ সব মিলিয়ে খরচ ৭৫ হাজার টাকা। কিন্তু নিজের শ্রমের দাম আসছে না।’

হাটের বড় ব্যবসায়ী হাসিব চৌধুরী বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি হচ্ছে না। ভালো মানের গরুর চামড়া ৫০ থেকে ৫৫ টাকা বর্গফুট এবং ছাগলের চামড়া প্রতি পিস ১৫ থেকে ২০ টাকা নির্ধারিত। কিন্তু আমরা গরুর ভালো চামড়া প্রতি বর্গফুট ৩০ থেকে ৩৫ টাকা দরে কিনছি।’

চামড়ার দাম কম হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘ট্যানারি স্থানান্তর হওয়ার কারণে অনেক আড়তদার চামড়া সংগ্রহ করছেন না। ট্যানারি এক জায়গায়, আড়ত আরেক জায়গায়। অনেক আড়তে আমাদের টাকা বকেয়া রয়েছে। এছাড়া চামড়া প্রক্রিয়াজাতের সঙ্গে যেসব কেমিক্যাল দরকার, সেগুলোর দামও বেড়েছে।’

যশোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন মুকুল বলেন, ‘ঈদপরবর্তী আজকের হাটে আশানুরূপ চামড়া উঠেছে। প্রায় ৬০ হাজার গরুর চামড়া আজকের হাটে বেচা-কেনা হবে। আগামীতে আরও দুই-তিনটি হাট রয়েছে। আজকের হাটে নগদ বেচাবিক্রি তিন কোটি ছাড়াতে পারে।’

মৌসুমি ব্যবসায়ীদের দাবি নাকচ করে তিনি বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত দামেই এই হাটে চামড়া বিকিকিনি হচ্ছে।’

Source link

Related posts

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ২৫ কিলোমিটারে যানজট

News Desk

বিজয়া দশমীতে মণ্ডপে মণ্ডপে সিঁদুর খেলা

News Desk

পানির নিচে কৃষকের স্বপ্ন, তলিয়েছে ৫০০ একর জমির ধান

News Desk

Leave a Comment