রংপুর নগরীর কেন্দ্রস্থল বলে পরিচিত পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে দুটি গণশৌচাগার স্থাপন করে শহীদ মিনারের পরিবেশ দূষিত করার অভিযোগ উঠেছে। শহীদ মিনারের বেদির পেছনে একটি গণশৌচাগার অপরটি পাশে বসানো হয়েছে। পাশাপাশি ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। এতে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে শহীদ মিনারের আশপাশ।
এদিকে, একই স্থানে সন্ধ্যার পর মাদকসেবীদের আসর বসে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন কিংবা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না বলে অভিযোগ সাংস্কৃতিককর্মী, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষের।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মহান ভাষা আন্দোলনের প্রতীক শহীদ মিনার অবহেলায় পড়ে আছে। শহীদ মিনারের সামনে পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ১০ দিন আগে বই মেলার আয়োজন করা হয়েছিল। মেলায় আগতদের জন্য ওই দুটি গণশৌচাগার বসানো হয়েছে। সেখান থেকে এখন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে শহীদ মিনারসহ আশপাশের এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বই মেলা শেষ হলেও গণশৌচাগার দুটি সরানো হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
রংপুর সিটি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর মানিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শহীদ মিনার হলো আমাদের অস্তিত্ব। ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে যে স্বাধিকার আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল তারই ধারাবাহিকতায় মহান মুক্তিযুদ্ধ ও আজকের বাংলাদেশ। অথচ আজ আমরা শহীদ মিনারকে অবহেলা করছি।
তিনি বলেন, শহীদ মিনারের পাশে গণশৌচাগার স্থাপন করা খুবই গর্হিত কাজ। এই কাজটি তারা ঠিক করেননি। দ্রুত সরানোর দাবি জানাই।
নগরীর মডার্ন মোড় এলাকা থেকে শহীদ মিনার দেখতে আসা শিক্ষার্থী আকসা সুলতানা বলেন, মহান শহীদ মিনারের এমন অসম্মান মেনে নেওয়া যায় না। দুর্গন্ধের কারণে এখানে অবস্থান করা যাচ্ছে না। যারা এই কাজটি করেছেন, তারা অন্যায় করেছেন।
সাংস্কৃতিককর্মী সামিউল ও মমতাজ উদ্দিন জানান, শহীদ মিনারের বেদির পেছনে একটি গণশৌচাগার, পাশেই আরেকটি। এটি দেখেও ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্টরা। একইভাবে ময়লার ভাগাড় বানানো হয়েছে পুরো এলাকাকে। এসব দেখভাল করার দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। তারা দায়িত্ব পালন করে বলে মনে হচ্ছে না। শহীদ মিনারের পাশে গণশৌচাগার স্থাপনের তীব্র নিন্দা জানান তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পাবলিক লাইব্রেরির এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের কথা কে শোনে। শহীদ মিনারটি বছরের বেশিরভাগ সময় ঢেকে রাখা হয়। সামনেই আয়োজন কর হয় বিভিন্ন মেলার। এ জন্য পাশেই গণশৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে। এটি অন্যায়। দেশের কোথাও শহীদ মিনার এলাকা দখল করে মেলা বসানো হয় না।
সার্বিক বিষয় জানতে চাইলে রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন মিয়া বলেন, সিটি করপোরেশন শহীদ মিনার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি দেখভাল করে। তবে সেখানে গণশৌচাগার স্থাপন ঠিক হয়নি। ওখান থেকে গণশৌচাগার সরিয়ে ফেলা হবে।