করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকাতে উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা রাজশাহীতে ‘বিশেষ লকডাউন’র মেয়াদ আরও এক সপ্তাহের জন্য বাড়ানো হয়েছে। বুধবার রাতে রাজশাহী সার্কিট হাউসে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সভা শেষে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এই ‘বিশেষ লকডাউন’র মেয়াদ বাড়ানোর কথা গণমাধ্যমকে জানান।
সভায় রাজশাহী জেলায় করোনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ও মৃত্যু হার বিশ্লেষণ করেন জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল। পরে মেয়র এ সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন। এর আগে গত ১০ জুন রাতে রাজশাহী সার্কিট হাউসে অনুষ্ঠিত জরুরি বৈঠক থেকে বিশেষ লকডাউনের আদলে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে জেলা প্রশাসন। ১১ জুন বিকাল ৫টা থেকে ১৭ জুন মধ্যরাত (১২টা) পর্যন্ত এক সপ্তাহের জন্য সর্বাত্মক এই লকডাউন দেওয়া হয়েছিল।
বিশেষ লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো প্রশ্নে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীতে কয়েক দিনের ব্যবধানে ফের সংক্রমণের হার বেড়েছে। আর মৃত্যুও কমছে না। এ কারণে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিটি মেয়র আরও বলেন, রাজশাহীতে প্রথমে সন্ধ্যা ৭টা থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। তারপর গত ২ জুন আরও দুই ঘণ্টা এগিয়ে বিকেল ৫টা থেকেই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এই ক’দিন আমরা পর্যবেক্ষণ করছিলাম। কোথাও করোনার নিম্নমুখী সংক্রমণ, কোথাও ঊর্দ্ধমুখী। কিন্তু ঊর্দ্ধমুখী সংক্রমণই বেশি।
তাই গেল শুক্রবার (১১ জুন) বিকাল ৫টা থেকে ১৭ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত রাজশাহী শহরে সর্বাত্মক লকডাউনের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সংক্রমণ কমার হার এখনও সন্তোষজনক নয়। এই কারণে বিশেষ লকডাউনের মেয়াদ আরেক সপ্তাহের জন্য বাড়ানো হলো। লকডাউন চলবে ২৪ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত।
এদিকে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল জানান, লকডাউনের সময় সব ধরনের ব্যবসায়িক দোকানপাট ও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁসহ আশপাশের অন্য কোনো জেলা থেকে যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না, রাজশাহী থেকেও কোনো যানবাহন জেলার বাইরে যেতে পারবে না। রাজশাহী থেকে ঢাকাসহ সব দূর পাল্লার রুটের যানবাহন ও ট্রেন চলাচল আগের মতই বন্ধ থাকবে। তবে রোগী, খাদ্য, ওষুধ ও পণ্যবাহী পরিবহন, সংবাদমাধ্যাম এবং মৃতদেহ দাফন ও সৎকার কাজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিসহ অন্য সব জরুরি সেবাদানকারীর ক্ষেত্রে জারিকৃত এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না। আমের বাজারগুলো বড় পরিসরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাজার পরিচালনা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সভায় রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক, রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক, রাজশাহী সিভিল সার্জন ডা. কাইয়ুম তালুকদারসহ জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।