অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, সৌম্য-মোস্তাফিজ, সাবিনা-মাসুরার মতো খেলোয়াড়দের জেলায় জিমনেশিয়াম নেই। স্টেডিয়ামের অবস্থাও খুবই নাজুক। এটি খুবই দুঃখজনক। সাতক্ষীরায় জিমনেশিয়ামসহ যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলো সার্ভে করে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে সেগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো। স্টেডিয়ামের সংস্কারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যেসব খেলা আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করার সুযোগ আছে সেখানে সুযোগ-সুবিধা বেশি দেওয়া হবে। এছাড়া যেসব অঞ্চল থেকে খেলোয়াড় উঠে আসছে সেসব এলাকায় বেশি নজর দেওয়া হবে। অনেক জেলায় টুর্নামেন্ট হয় না অনেক বছর। আগের সরকারের আমলে জবাবদিহি ছিলো না। জবাবদিহি নিশ্চিত করবো এবং টুর্নামেন্টের আয়োজন করবো।
শনিবার (১২ অক্টোবর) রাতে সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসন আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন তিনি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেওয়া সেই সোনার মুকুট চুরির ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, আমি মন্দির পরিদর্শন করেছি। মন্দির কমিটির সভাপতির সাথে কথা বলেছি। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, মন্দিরের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের গাফিলতি ছিলো। দরজা খোলা রেখে চলে গিয়েছিল, সেজন্য চুরির ঘটনা ঘটছে। এই ঘটনায় মামালা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যাকে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে তাকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এখানকার স্থানীয় কেউ তার ছবি দেখে শনাক্ত করতে পারেনি। প্রয়োজনে আমার জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাকে শনাক্ত করার চেষ্টা করবো। এই বিষয়টিকে আমার খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখছি।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আরও বলেন, সাতক্ষীরা থেকে সুন্দরবন যাওয়ার রাস্তা খুবই খারাপ। সড়ক পথে সুন্দরবন ভ্রমণ করে খুব কষ্ট হয়ে গেছে। এটির উন্নয়ন খুবই দ্রুত প্রয়োজন। যার বাড়ি যে এলাকায় সেই এলাকায় উন্নয়ন করেছে। আগের সরকার গোপালগঞ্জের রাস্তাঘাট উন্নয়ন করেছে। কিন্তু তার আশেপাশের এলাকায় সেইভাবে উন্নয়ন হয়নি। এই রাস্তার কথা ঢাকায় যেয়ে জানাবো। পর্যটন শিল্প এগিয়ে নিতে এই সরকারের সদিচ্ছা আছে। সুন্দরবন কেন্দ্রীয় পর্যটন শিল্প নিয়ে এই সরকার কাজ করবে। কিন্তু এটি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা প্রয়োজন।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসবকে ঘিরে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি, যাতে কোনও প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। স্থানীয় পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কীভাবে বাস্তবায়ন করছে। আমরা সারাদেশে সফর করছি। জেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখেছি, এখানকার পরিবেশ খুবই ভালো। এখানকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি দেখেছি, আমার খুবই ভালো লেগেছে।
তিনি আরও বলেন, বিপিএলকে সামনে রেখে শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম স্টেডিয়াম দ্রুত সংস্কার করা হবে। আমরা চিন্তা করছি, সব কিছু রাজধানী ঢাকা কেন্দ্রিক না রেখে বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, সব জায়গায় সংস্কার চলছে। জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও ডিএফএসর কমিটিতে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুবই দ্রুত আমাদের কার্যক্রম শুরু হবে। সবকিছু সংস্কার করতে আমাদের দেরী হচ্ছে। আমরা যা পেয়েছি আওয়ামী লীগ সরকার থেকে পেয়েছি। শুধু মাথাগুলো পরিবর্তন হয়েছে, সিস্টেম পরিবর্তন হয়নি। রাতারাতি সিস্টেম পরিবর্তন সম্ভব না। সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে সিস্টেমের পরিবর্তন করা হবে। তারপর আমরা ভালো ফলাফল পাবো।
এসময় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ, জেলা পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব খান চৌধুরীসহ জেলায় কর্মরত ইলেট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে, তিনি দেবহটায় মিনি স্টেডিয়াম স্থাপনের জায়গা পরিদর্শন শেষে পারুলিয়া জেলিয়াপাড়া ও গাজীরহাট পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন। পরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত শহীদ আসিফ হাসানের কবর জিয়ারত ও তার পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করে সমবেদনা জানান। পরে তিনি শ্যামনগররে ঐতিহাসিক যশোরেশ্বরী কালী মন্দির মন্দির পরিদর্শন শেষে উপদেষ্টা মুন্সীগঞ্জে অবস্থিত আকাশলীনা ইকো ট্যুরিজম হয়ে সুন্দরবনের কলাগাছিয়া ভ্রমণে যান।