সাতক্ষীরার উপকূল এলাকায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। তবে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি এই ঘূর্ণিঝড় করে যাচ্ছে তা সকাল ছাড়া পুরোপুরি বোঝা যাবে না। এদিকে, এবারও ঢাল হয়ে খুলনা অঞ্চলকে আরও ভয়ানক ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছে সুন্দরবন। বাতাসের গতিবেগ অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে এই বন।
রবিবার (২৬ মে) রাতে সাতক্ষীরা উপকূলের বুড়িগোয়ালীনি এলাকায় অবস্থান করা সাংবাদিক আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমাল জেলাজুড়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। অনেক গাছপালা উপড়ে গেছে। জোয়ারে মাছের ঘের ভেসে গেছে। তবে সুন্দরবনের এবারও রক্ষা করেছে। বাতাসের গতিবেগ অনেক কমিয়ে দিয়েছে।
আশাশুনির প্রতাপনগর এলাকার সাইদুল ইসলাম জানান, বর্তমানে প্রতাপনগর অঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ কমেছে। ঘূর্ণিঝড় রিমাল দুর্বল হয়েছে কিছুটা।
সাতক্ষীরার স্থানীয় দৈনিক কালের চিত্রের সাংবাদিক গাজী হাবিব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, রিমালের কবল থেকে সাতক্ষীরার উপকূল এখন প্রায় বিপদমুক্ত বলা যায়। শুধু বেড়িবাঁধের দিকে খেয়াল রাখতে হবে যেন নদীর পানি ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে।
তিনি আরও জানান, সাতক্ষীরা শহর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় ঝোড়ো বাতাসের গতিবেগ মাঝে মাঝে এতো বেশি যে, অফিস থেকে বাইক চালিয়ে বাসা পর্যন্ত আসা খুবই কষ্টকর ছিল। মাঝে মাঝে মনে হয়েছে, এই বুঝি বাইকসহ উল্টে গেলাম। যদিও বাইক ১০ কিলোমিটারের নিচে ছিল। বাসায় আসার পথে দেখলাম, অধিকাংশ দোকানের সাইনবোর্ড ছিঁড়ে পড়ে গেছে। কোনোটা ঝুলে আছে।
শ্যামনগরের সুলতান শাহজাহান বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমাল সাতক্ষীরা উপকূলে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। অনেক গাছগাছালি উপড়ে চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এখনো গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়া বয়ে চলছে। নদ-নদীগুলো এখনও উত্তাল। জোয়ারের পানি এখনও কমেনি।
তিনি আরও বলেন, বৃষ্টিতে বাঁধের মাটি নরম হয়ে গেছে। ভাটিতে পানি কমার কথা থাকলেও পানি কমছে না। এতে অনেক এলাকায় বাঁধে ফাটল দেখা দিতে পারে। ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা সকাল ছাড়া জানা যাবে না।
রাত ৩টার ৫৫ মিনিটের দিকে বাংলা ট্রিবিউনকে সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি সাতক্ষীরা অতিক্রম করেছে। রাত ১টায় এখানে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ৭২ কিলোমিটার। সন্ধ্যা থেকে রাত ৩টা পর্যন্ত এই জেলায় ৬৬ মিলিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।