মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলায় র্যাব পরিচয়ে সুমন বৈদ্য নামে এক ব্যবসায়ীর ৯৫ ভরি স্বর্ণ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় র্যাব পরিচয় দেওয়া পাঁচ ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয়রা।
শনিবার (০১ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিংগাইর উপজেলার জামশা ইউনিয়নের আমতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তবে পাঁচ জনকে আটক করা হলেও ছিনতাই হওয়া স্বর্ণ উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
আটককৃতরা হলো—ফরিদপুরের রাধানগর এলাকার সিকান্দারের ছেলে মো. শামীম, একই এলাকার মালেক শেখের ছেলে মিরাজুল শেখ (২৮), মেঘমাচি এলাকার সোলেমান মৃধার ছেলে সম্রাট (২৮), পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার পাটেশ্বর গ্রামের মৃত ফরমান প্রামাণিকের ছেলে আমিজ উদ্দিন (৫০) ও মাইক্রোবাসচালক সাভারের আশুলিয়ার খেজুরটেক গ্রামের মৃত আব্দুর রহিম বক্সের ছেলে জানিব (৬২)। এ সময় তাদের সঙ্গে মোটরসাইকেলে থাকা সিদ্দিক নামে আরেক ব্যক্তি ছিনতাইকৃত স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ, ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকাল ৭টার দিকে ঢাকার দোহারের জয়পাড়া বাজারের ‘নির্ঝর অলঙ্কার নিকেতন’-এর মালিক সুমন বৈদ্য ৯৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে অটোরিকশাযোগে সিংগাইরের চারিগ্রাম বাজারে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে এক ঘনিষ্ঠজন ও অটোরিকশাচালক ছিলেন। নবাবগঞ্জের নয়নশ্রী এলাকা থেকে র্যাবের স্টিকারযুক্ত একটি মাইক্রোবাস তাদের পিছু নেয়। অটোরিকশাটি আমতলা গ্রামে পৌঁছালে মাইক্রোবাস থেকে পাঁচ জন নেমে র্যাবের সদস্য পরিচয় দিয়ে তাদের তিন জনকে গাড়িতে তুলে নেয়। এরপর তাদের চোখ-মুখ বেঁধে সুমনের স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়। গাড়িটি আমতলা বাজার অতিক্রমের সময় যানজটে আটকা পড়ে। এ সময় গাড়ি থেকে চিৎকার দেন তারা। স্থানীয়রা ভেতরে তিন জনকে চোখ বাঁধা অবস্থায় দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে গাড়িটি ঘিরে ধরেন। পরিস্থিতি বুঝে একজন স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে যায়। বাকি পাঁচ জনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় পুলিশে সোপর্দ করে জনতা।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সুমন বৈদ্য বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সকাল ৭টার দিকে অটোরিকশাযোগে দোহার থেকে ২১ ক্যারেটের ৫৫ ভরি ও পাকা ৪০ ভরি স্বর্ণ বিক্রির জন্য চারিগ্রামে যাচ্ছিলাম। আমতলা গ্রামে পৌঁছালে র্যাব পরিচয় দিয়ে পাঁচ ব্যক্তি আমাদের অটোরিকশা থেকে নামিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। এরপর চোখ-মুখ বেঁধে ৯৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ছিনিয়ে নেয়। চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন গাড়িটি আটকে আমাদের উদ্ধার করেন। কিন্তু এর ফাঁকে এক ব্যক্তি ছিনতাইকৃত স্বর্ণ নিয়ে মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়।’
সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘র্যাবের স্টিকারযুক্ত মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়েছে। চালকসহ আটক পাঁচ জনকে চিকিৎসা দিয়ে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। চক্রের আরেক সদস্য পলাতক আছে। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় মামলা হবে। ছিনতাই হওয়া স্বর্ণ উদ্ধার করা যায়নি। পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিকে আটকের পর স্বর্ণ উদ্ধার করা সম্ভব হবে।’