প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও চার কমিশনারের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ। পাঁচ বছরের সফলতা-ব্যর্থতা তুলে ধরতে সোমবার সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় ।
তবে শেষ দিনেও আলাদা ছিলেন ইসি মাহবুব তালুকদার। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সংবাদ সম্মেলন শেষে ইসি সচিবালয়ের নিজ কক্ষের সামনে পৃথক বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ইসি মাহবুব তালুকদার বলেন, এটিই আমার শেষ প্রেস ব্রিফিং। একজন সাংবাদিক মানবাধিকার সম্পর্কে অভিমত জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশের মানবাধিকার সম্পর্কে কথা বলা অমূলক। মানবাধিকার নেই, মানবিক মর্যাদা নেই; গণতন্ত্র না থাকলে এসব থাকে না।
তিনি বলেন, বিশ্বে সম্মানজনক রাষ্ট্র হিসেবে আসীন হতে হলে গণতন্ত্রের শর্তসমূহ অবশ্যই পূরণ করতে হবে। ভোটাধিকার ও মানবাধিকার একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা থেকে এর উৎপত্তি।
মাহবুব তালুকদার বলেন, বর্তমান অবস্থায় উন্নয়নকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। আইন প্রণেতারা আইন প্রণয়নের চেয়ে উন্নয়নেই বেশি আগ্রহী। কিন্তু উন্নয়ন কখনও গণতন্ত্রের বিকল্প ব্যবস্থা নয়।
তিনি বলেন, ইউপি নিবার্চন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে— ওই নির্বাচনে গণতন্ত্র নেই, গণতন্ত্রের লাশ পড়ে আছে। এই লাশ সৎকারের দায়িত্ব কে নেবে? কথাটা রূপক অর্থে বলা হলেও এটিই সত্য।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের নামে সারা দেশে এমন অরাজকতা কখনও কাঙ্ক্ষিত ছিল না। তৃণমূল পর্যায়ে এই নির্বাচন দ্বন্দ্ব-সংঘাতের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে দিয়েছে। অন্যদিকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পদে আসীন হওয়া নির্বাচন বলা যায় কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
বিদায়কালে আত্মবিশ্লেষণের তাগিদে বলি— নির্বাচন কমিশনের বড় দুর্বলতা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের অনিয়ম, পক্ষপাতিত্ব ও জালিয়াতি ইত্যাদি সম্পর্কে ভুক্তভোগীরা যেসব অভিযোগ করেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দৃষ্টান্ত বিরল। লিখিতভাবে যেসব অভিযোগ পাঠানো হয়, তারও যথাযথ নিষ্পত্তি হয় না। অধিকাংশ অভিযোগই আমলে না নিয়ে নথিভুক্ত করা হয় বা অনেক ক্ষেত্রে নথিতেও তার ঠাঁই হয় না। আমাদের কার্যকালের শেষ পর্যায়ে এসে বিগত কয়েক মাসে অবশ্য এর কিছু ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা যাচ্ছে।