টানা ছুটিতে রাঙামাটির সাজেকে বেড়াতে এসে রিসোর্ট-কটেজে কক্ষ না পেয়ে কয়েক শ’ পর্যটক রাস্তা, বারান্দা, স্টোর রুম, গাড়িতে রাত কাটিয়েছেন।
সাজেক রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ঈদে মিলাদুন্নবী এবং শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় গত মঙ্গলবারের আগে রুইলুই ভ্যালির রিসোর্ট-কটেজের সব কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সারাদিন কক্ষ বুকিং ছাড়া পাঁচ শতাধিক পর্যটক আসেন। এর মধ্যে কিছু ফিরে গেলেও চার শতাধিক পর্যটক রুইলুই ভ্যালিতে রয়ে যান। পর্যটকের চাপে হিমশিম খাচ্ছে রিসোর্ট মালিকরা।
মাসেখানেক আগে থেকেই সাজেকের হোটেল-মোটেলগুলো বুকিং হয়ে যায়। এবারের টানা তিন দিনের বন্ধ শুরু হওয়ার পরপরই বেশি পরিমাণে পর্যটক সাজেকে গেছেন। যাদের মধ্যে অনেকেই অগ্রিম বুকিং না করেই গেছেন, তাই রুম না পেয়ে রাতে তাঁবু এবং স্থানীয় গ্রামগুলোর বাসা-বাড়িতে রাত কাটাতে হয়েছে তাদের।
দুপুর থেকে এসব পর্যটক বিভিন্ন রিসোর্ট-কটেজে কক্ষ খুঁজতে থাকেন, কিন্তু খালি না থাকায় কোথাও ভাড়া পাননি। পরে বিকালের দিকে যে-যেভাবে পারেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরে, স্টোর রুমে আশ্রয় খোঁজেন। এভাবে দুই শতাধিক পর্যটকের কোনোরকমে থাকা ও ব্যাগ-জিনিসপত্র রাখার সুযোগ হয়। আরও দুই শতাধিক পর্যটক রাস্তা, বারান্দা ও গাড়িতে রাত কাটিয়েছেন বলে রুইলুই রিসোর্ট-কটেজমালিক সূত্রে জানা গেছে।
ঢাকা থেকে পাঁচ জনের একটি দলের সঙ্গে ঘুরতে এসেছেন তরুণ মো. মনির হোসেন। তিনি বলেন, ‘দুপুর থেকে রিসোর্ট-কটেজগুলোয় কক্ষ ভাড়া নেওয়ার জন্য চেষ্টা করছি, কিন্তু কোথাও খালি নেই। আমরা সবাই রাস্তায় ঘুরে রাত কাটিয়েছি। আমাদের সঙ্গে আরও অনেক পর্যটক ছিলেন। পূর্ণিমার রাত থাকায় খারাপ লাগেনি।’
সাজেক জুমঘর ইকো রিসোর্টের ব্যবস্থাপক ইয়ারং ত্রিপুরা বলেন, ‘গতকাল অনেক পর্যটক এসেছেন সাজেকে। আমাদের কটেজগুলো শতভাগ বুকিং রয়েছে। যারা বুকিং না করে এসেছিলেন তাদের রুম পেতে কষ্ট হয়েছে বলে জেনেছি।’
রুইলুই ভ্যালির রিসোর্ট-কটেজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জেরি লুসাই বলেন, ‘যারা রুম পাননি তাদের জন্য লুসাই ক্লাব ও ত্রিপুরাপল্লীর বাসা-বাড়িতে ব্যবস্থা করা হয়েছে। সব মিলিয়ে গতকাল আড়াই হাজারের মতো পর্যটক এসেছিলেন। আজ সকালে অনেকে চলে গেছেন। তবে যে পরিমাণ পর্যটক সাজেক ছাড়বেন তার চেয়ে বেশি প্রবেশ করবেন।’
তিনি আরও জানান, বর্তমানে ১১২টি রিসোর্ট-কটেজ রয়েছে। এগুলোয় চার হাজারের বেশি অতিথি থাকতে পারেন।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমানা আক্তার বলেন, ‘সাজেক পর্যটন কেন্দ্রের একটি নির্দিষ্ট ধারণ ক্ষমতা আছে। তার বেশি পর্যটক আসলেই রুম না পাওয়া বা বাইরে থাকার মতো সমস্যাগুলো তৈরি হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে সাজেকের সবকটি রিসোর্ট ও কটেজের অনলাইন বুকিং সিস্টেম চালু আছে। তাই পর্যটকরা অ্যাডভান্স বুকিং দিয়ে আসলেই ভালো, নতুবা সমস্যায় পড়তে হয়। উপজেলা প্রশাসন থেকে পর্যটকদের প্রতি আমাদের অনুরোধ, বিশেষ করে টানা বন্ধের দিনগুলোতে সাজেকে অ্যাডভান্স বুকিং দিয়ে আসার জন্য।’