Image default
জীবনীরাজনীতি

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জীবনী

প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা

নরেন্দ্র মোদী ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই সেপ্টেম্বর বম্বে প্রেসিডেন্সির (বর্তমান গুজরাত রাজ্যের) মহেসানা জেলার বড়নগর নামক স্থানে গুজরাটি হিন্দু মুদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । তিনি তার পিতামাতার ছয় সন্তানের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন। তার পিতার নাম দামোদারদাস মূলচাঁদ মোদী ও মায়ের নাম হীরাবেন মোদী। বড়নগর রেলস্টেশনে তিনি তার পিতাকে চা বিক্রি করতে সহায়তা করতেন এবং কৈশোরে বাস স্ট্যান্ডের কাছে ভাইয়ের সাথে চা বিক্রি করুতেন। পুরো পরিবার একটি ছোট ৪০ ফুট X ১২ ফুট মাপের একতলা বাড়িতে বসবাস করতেন। তিনি এই শহরেই একজন সাধারণ মানের ছাত্র হিসেবে তার বিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করেন।

ছোট বেলায় স্বামী বিবেকানন্দের জীবন তাকে বিশেষ ভাবে অনুপ্রাণিত করে। আট বছর বয়সে মোদী রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের স্থানীয় শাখায় তার রাজনৈতিক গুরু লক্ষ্মণরাও ইনামদার নামক এক সাংগঠনিক কর্মীর সংস্পর্শে আসেন। ইনামদার তাকে সঙ্ঘের বালস্বয়ংসেবক হিসেবে দলে নেন।এই সময় তিনি জন সংঘের নেতা বসন্ত গজেন্দ্রগড়কর ও নথালাল জঘদার সংস্পর্শে আসেন।

ঘাঞ্চী সম্প্রদায়ের রীতি অনুসারে মোদীর পিতা মাতা কৈশোর অবস্থায় তার বিবাহ স্থির হয়। তেরো বছর বয়সে যশোদাবেন চিমনলাল নামক এক মেয়ের সঙ্গে তার বিবাহ স্থির হয় এবং আঠারো বছর বয়সে তাদের মধ্য বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। খুব কম সময় তারা একসঙ্গে সময় অতিবাহিত করেন কারণ এরপর মোদী পরিব্রাজকের জীবন অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নিলে তারা বিচ্ছিন্ন হন।মোদীর জীবনীকার নীলাঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের মতে এই বিবাহ কখনোই বিচ্ছেদ হিসেবে শেষ হয়ে যায়নি। চারটি নির্বাচন প্রচারে মোদী নিজের বিবাহিত জীবন নিয়ে নীরবতা অবলম্বন করলেও ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত ষোড়শ সাধারণ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় তিনি যশোদাবেনকে নিজের আইনতঃ বৈধ পত্নী রূপে স্বীকার করে নেন।

২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত কিশোর মাকওয়ানা রচিত কমন ম্যান নরেন্দ্র মোদী গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে সতেরো বছর বয়সে ঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার পর তিনি রাজকোট শহরে অবস্থিত রামকৃষ্ণ মিশন ও তারপর বেলুড় মঠ যাত্রা করেন। এরপর তিনি আলমোড়া শহরে স্বামী বিবেকানন্দ প্রতিষ্ঠিত আশ্রমে যোগ দেন। দুই বছর পরে তিনি বাড়ি ফিরে এসে আমেদাবাদ শহরে নিজের কাকার চায়ের দোকানে যোগ দেন। এই সময় তিনি পুনরায় লক্ষ্মণরাও ইনামদারের সংস্পর্শে আসেন। এরপর তিনি গুজরাত রাজ্য মার্গ বাহন ব্যবহার নিগমের ক্যান্টিনের কর্মচারী হিসেবে যোগ দেন, যত দিন না তিনি ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের একজন পূর্ণসময়ের প্রচারক হিসেবে যোগ দেন। এই সময় তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দূরশিক্ষার মাধ্যমে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক এবং গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন।

 

নরেন্দ্র মোদী ব্যক্তিগত জীবন

 

পুরো নাম নরেন্দ্র মোদী
জন্ম-তারিখ 17 Sep 1950 (বয়স 74)
জন্মস্থান ভদনগর, মেহসানা (গুজরাট)
রাজনৈতিক দলের নাম Bharatiya Janta Party
শিক্ষা Post Graduate
পেশা সমাজসেবী
পিতৃ পরিচয় দামোদরদাস মূলচাঁদদাস মোদী
মাতৃ পরিচয় শ্রীমতি হীরাবেন দামোদরদাস মোদী
ধর্ম হিন্দু
ওয়েবসাইট http://www.narendramodi.in
সোশ্যাল মিডিয়া

নরেন্দ্র মোদী মোট সম্পদ মূল্য

মোট সম্পদ মূল্য:₹3.02 CRORE
সম্পদ:₹3.02 CRORE
দায়বদ্ধতা:N/A

নরেন্দ্র মোদী রাজনৈতিক টাইমলাইন

2007
  • ২০০৭ সালের ২৩ ডিসেম্বর মোদী মনিনাগর কেন্দ্র থেকে জয়ী হন বিধায়ক হিসাবে । গুজরাত বিধানসভা ভোটে সেবার মোদী এই জয় পেতেই তৃতীয়বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন।তিনি সেইবার কংগ্রেসের দিশা প্যেটেলকে হারিয়েছিলেন।
2012
  • গুজরাতের মনিননগর থেকে জয় লাভ করেন মোদী। শ্বেতা ভটকে হারিয়ে তিনি এই জয় পান। ২০১২ সালে তিনি চতুর্থবার দেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত হন।

 

2014
  • দেশের জন্য প্রথমবার সাংসদ ও প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেনে মোদী। ২০১৪ সালের ২৬ মে তিনি শপথ পাঠ করেছিলেন। ভারতের স্বাধীনতার পর জন্মগ্রহণকারী প্রথম প্রধানমন্ত্রী মোদী।
2019
  • ৫ বছরের জন্য ফের একবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর তখতে বসেন নরেন্দ্র মোদী।। এই নির্বাচনে তিনি বিপুল পরিমাণ ভোটে জয়ী হন।

 

প্রাথমিক রাজনৈতিক জীবন

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের বাংলাদেশ পাকিস্তান যুদ্ধ শেষ হলে মোদী আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘে যোগ দেন। নাগপুর শহরে প্রশিক্ষণের পর তাকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৭৫ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী কর্তৃক ঘোষিত জরুরীকালীন অবস্থায় বিরোধীদের গ্রেপ্তার করা হলে এবং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলে মোদী গ্রেপ্তারী এড়ানোর জন্য কখনো শিখ, কখনো বয়স্ক ব্যক্তির ছদ্মবেশে গোপণে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারপুস্তিকা বিতরণ ও বিক্ষোভ সমাবেশ সংগঠিত করতেন। তিনি জয়প্রকাশ নারায়ণের নেতৃত্বে জরুরীকালীন অবস্থা আন্দোলনে সামিল হন। এই সময় তিনি গুজরাত লোকসংঘর্ষ সমিতি নামক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে গুজরাতে বিভিন্ন আন্দোলনকারীদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করেন। এই সময় তিনি গুজরাতী ভাষায় সংঘর্ষ্ মা গুজরাত (গুজরাতের সংঘর্ষ) নামক একটি পুস্তক রচনা করেন যেখানে তিনি এই সময়ে ঘটিত বিভিন্ন ঘটনার নিরিখে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।

১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ মোদীকে ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগদান করায়। এই সময় শঙ্করসিনহা বাগেলা ও কেশুভাই পটেল ভারতীয় জনতা পার্টির গুজরাত শাখার উল্লেখযোগ্য নেতৃবৃন্দ হলেও নরেন্দ্র মোদী মুরলী মনোহর যোশীর কন্যাকুমারী-শ্রীনগর একতা যাত্রা সংগঠিত করে রাজ্য শাখায় উল্লেখযোগ্য সংগঠক হিসেবে উঠে আসেন।[১৯] ১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ভারতীয় জনতা পার্টির গুজরাত শাখার কার্যনির্বাহী সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। এই পদে তার ভূমিকায় ভারতীয় জনতা পার্টি ১৯৯৫ সালে অনুষ্ঠিত গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভে সহায়তা করে।

১৯৯৫ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে মোদী ভারতীয় জনতা পার্টির জাতীয় সম্পদক হিসেবে নির্বাচিত হন। এই সময় তিনি হরিয়াণা ও হিমাচল প্রদেশ রাজ্যে পার্টির সাংগঠনিক কাজকর্মের দায়িত্ব সামলান। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর শঙ্করসিনহা বাগেলা পার্টি থেকে বেরিয়ে যান। ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে তিনি পার্টির কার্যনির্বাহী সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সালে অনুষ্ঠিত গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের নির্বাচনী কমিটিতে তিনি বাগেলার সমর্থকদের পরিবর্তে কেশুভাই পটেলের সমর্থকদের দলীয় প্রার্থী হিসেবে সমর্থন করলে পার্টির মধ্যেকার বিচ্ছিন্নতাবাদী বিরোধিতা থেমে যেতে বাধ্য হয় এবং ভারতীয় জনতা পার্টি ঐ নির্বাচনে জয়লাভ করে।

 

গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী

২০০১ খ্রিষ্টাব্দে কেশুভাই পটেলের স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ে এবং তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ভূজ ভূমিকম্পে প্রশাসনিক দুর্বলতার অভিযোগ ওঠে। এর ফলে পার্টির জাতীয় নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রী পদের জন্য নরেন্দ্র মোদীকে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে হিসেবে তুলে ধরে। পার্টির বরিষ্ঠ নেতা লাল কৃষ্ণ আডবাণী মোদীর অনভিজ্ঞতার ওপর চিন্তিত থাকলেও মোদী পটেলের সহায়ক হিসেবে গুজরাতের উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব নাকচ করে দেন। এর ফলশ্রুতিতে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই অক্টোবর মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের সরকারীকরণ ও বিশ্বায়নবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে বেসরকারীকরণের নীতি গ্রহণ করেন।

প্রথম মেয়াদ (২০০১-২০০২)
২০০২ সালের গুজরাত দাঙ্গা

২০০২ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে ফেব্রুয়ারি গোধরা শহরের নিকটে বহু হিন্দু তীর্থযাত্রী ও শতশত যাত্রীসহ একটি ট্রেন আগুনে পুড়ে গেলে প্রায় ৬০ জনের মৃত্যু ঘটে। উগ্র মুসলিমদের দ্বারা এই অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, এরকম খবর ছড়ালে, গুজরাত জুড়ে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গা শুরু হয়ে যায়। এই দাঙ্গায় ৯০০ থেকে ২০০০ ব্যক্তির মৃত্যু হয় এবং কয়েক হাজার ব্যক্তি আহত হন। মোদী সরকার বড় সহরগুলিতে কারফু জারী করে দেখামাত্রই গুলি করার নির্দেশ দেয় এবং দাঙ্গা প্রতিরোধে সেনাবাহিনী ডাকা হয়। এতৎসত্ত্বেও মানবাধিকার সংগঠনগুলি, বিরোধী দল এবং সংবাদপত্রের কিছু অংশ গুজরাত সরকারের দাঙ্গাবিরোধী পদক্ষেপের সমালোচনা করে। গোধরা অগ্নিকান্ডে মৃত করসেবকদের দেহ আমেদাবাদ নিয়ে যাওয়ার মোদীর নির্দেশকে দাঙ্গায় উস্কানিমূলক পদক্ষেপ বলে সমালোচনা করা হয়।

২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে ভারতের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় রাজ্য সরকারকে ২০০২ গুজরাত দাঙ্গার নয়টি কেস সম্বন্ধে পুনরায় অনুসন্ধানের নির্দেশ দিলে সরকার নতুন করে তদন্তের জন্য একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করে। গুলবার্গ সোসাইটি হত্যাকান্ডে মৃত এহসান জাফরির বিধবা স্ত্রী জাকিয়া জাফরি ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে ভারতের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে মামলা করলে সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় বিশেষ তদন্তকারী দলকে এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেয়। এই তদন্তকারী দল মোদীকে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে জিজ্ঞাসাবাদ করে মে মাসে তাদের এই মর্মে প্রতিবেদন জমা দেন যে তারা এই অভিযোগের সত্যতার কোনক্রমেই প্রমাণ পাননি। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে রাজু রামচন্দ্রন ভারতের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ে তার অন্তিম প্রতিবেদনে বলেন যে মোদীকে সাক্ষ্য প্রমাণের সাহায্যে দোষী সাব্যস্ত করা সম্ভব। সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় এই মামলা ম্যাজিস্ট্রেটের কোর্টে পাঠিয়ে দেন এবং বিশেষ তদন্তকারী দলকে রামচন্দ্রনের প্রতিবেদন পরীক্ষার জন্য দায়িত্ব দেন। বিশেষ তদন্তকারী দল এই প্রতিবেদনের তীব্র সমালোচনা করে কারণ এই প্রতিবেদনে মিথ্যে তথ্যপ্রমাণের ওপর সাজানো সঞ্জীব ভট্টের সাক্ষ্যের ওপর নির্ভর করা হয়েছিল। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে তদন্তকারী দল এই অনুসন্ধান বন্ধ করার আর্জি জানালে জাকিয়া জাফরি এর প্রতিবাদে একটি মামলা দায়ের করেন যা ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে ম্যাজিস্ট্রেটের কোর্টে এই মর্মে গৃহীত হয় না যে মোদীর বিরুদ্ধে কোন রকম সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

২০১২ খ্রিষ্টাব্দে মায়া কোদনানি নামক মোদী মন্ত্রিসভার একজন প্রাক্তন মন্ত্রীকে ২০০২ গুজরাত দাঙ্গার সময় নারোদা পাটিয়া হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। যদিও কোদনানির মৃত্যুদন্ডের জন্য আবেদন করা হবে বলে স্থির করা হলেও পরে মোদী সরকার ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে তার কারাদন্ডের আর্জি জানান।

২০০২ সালের নির্বাচন

দাঙ্গার কারণে রাজ্যের ভেতর ও বাইরে থেকে মোদীকে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার জন্য চাপ বাড়তে থাকে। এমনকি কেন্দ্রে তেলুগু দেশম পার্টি ও দ্রাবিড় মুন্নেত্রা কঝগম নামক ভারতীয় জনতা পার্টির দুই বন্ধু দলও এই মত প্রকাশ করে। বিরোধীরা এই বিষয়ে লোকসভা অচল রাখে। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে গোয়াতে অনুষ্ঠিত ভারতীয় জনতা পার্টির জাতীয় কার্যনির্বাহী সভায় মোদী তার ইস্তফা দিতে চাইলে পার্টি তা গ্রহণ করেনি। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের ১৯শে জুলাই মোদীর মন্ত্রিসভা একটি জরুরীকালীন সভার সিদ্ধান্তে গুজরাতের রাজ্যপালের নিকট ইস্তফা পেশ করলে বিধানসভা ভেঙ্গে যায়। পরের বিধানসভা নির্বাচনে মোদীর নেতৃত্বে ভারতীয় জনতা পার্টি ১৮২টির মধ্যে ১২৭টি আসন দখল করে। এই নির্বাচনের প্রচারকার্যে মোদী মুসলিম বিরোধী প্রচার করলেও পরে তা অস্বীকার করেন।

দ্বিতীয় মেয়াদ (২০০২-২০০৭)

মোদীর দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রীত্বের কালে তিনি হিন্দুত্ব থেকে সরে এসে গুজরাতের উন্নয়নের দিকে জোর দেন। তার এই সিদ্ধান্তে গুজরাতে ভারতীয় কিশান সঙ্ঘ এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মত হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির প্রভাব হ্রাস পায়। মোদী তার মন্ত্রিসভা থেকে গোর্ধান জাদাফিয়া এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের রাজ্যস্তরের প্রধান প্রবীণ তোগাড়িয়াকে সরিয়ে দেন। ভারতীয় কিশান সঙ্ঘ কৃষকদের নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলে মোদী তাদের রাজ্য সরকার দ্বারা প্রদত্ত বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি গান্ধীনগরে দুইশোটি বেআইনি মন্দির নির্মাণকে ভেঙ্গে দেওয়ার নির্দেশ জারী করেন। তিনি গুজরাতকে শিল্পে বিনিয়োগের একটি আকর্ষণীয় স্থানে পরিণত করেন। ২০০৭ সালে ভাইব্র্যান্ট গুজরাত সমাবেশে নির্মাণ কার্যে ₹৬.৬ ট্রিলিয়ন বিনিয়োগের চুক্তি হয়।

অর্থনৈতিক দিকে মোদীর নজর থাকলেও বিভিন্ন সময়ে তাকে মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্কের জন্য সমালোচিত হতে হয়। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী দাঙ্গা পরবর্তী সময়ে মোদীকে গুজরাতের সমস্ত্য নাগরিকদের সমান চোখে দেখার অনুরোধ করেন এবং তার পদত্যাগের দাবী করেন। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টির পরাজয়ের পর অটল বিহারী বাজপেয়ী এই হারের জন্য ২০০২ গুজরাত দাঙ্গাকে দায়ী করেন এবং স্বীকার করেন দাঙ্গার ঠিক পরেই মোদীকে সরিয়ে না দেওয়া একটি ভুল পদক্ষেপ ছিল।

২০০৭ সালের নির্বাচন

২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারকার্যে ভারতীয় জনতা পার্টি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রচারকে তাদের প্রধান হাতিয়ার করে। ২০০৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ই জুলাই মোদী সন্ত্রাসবাদবিরোধী কঠোর আইন প্রণয়নের ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতার জন্য প্রধামনন্ত্রী মনমোহন সিংকে তীব্র সমালোচনা করেন এবং ২০০৬ মুম্বই বিস্ফোরণের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারগুলিকে সন্ত্রাসবাদবিরোধী কঠোর আইন প্রণয়নের অনুমতি প্রদানের জন্য কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানান। এই সময় তিনি ২০০১ ভারতীয় সংসদ আক্রমণের প্রধান অভিযুক্ত আফজল গুরুর মৃত্যুদন্ডের বার বার দাবী জানাতে থাকেন। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বএ মুম্বই শহরে সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের নিরিখে মোদী গুজরাতের ১,৬০০ কিমি (৯৯০ মা) লম্বা সমুদ্র উপকূলের নিরাপত্তা জোরদার করেন। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে মোদী মুখ্যমন্ত্রী পদে টানা ২,০৬৩ দিন থেকে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দীর্ঘতম মেয়াদের রেকর্ড গড়েন। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি ১৮২টির মধ্যে ১২২টি আসন দখল করে জয়ী হন এবং মোদী তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী পদ লাভ করেন।

তৃতীয় মেয়াদ (২০০৭-২০১২)

তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসে মোদী ভূগর্ভস্থ জল সংরক্ষণের ব্যাপারে নজর দেন। ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে ১১৩,৭৩৮টি ছোট বাঁধ নির্মাণ করা হয়। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে ৬০টি তহসিলে ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এরফলে গুজরাতে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে বিটি তুলার চাষ শুরু হয়। তুলা চাষের বৃদ্ধি এবং শুষ্ক মৃত্তিকাকে চাষের উপযোগী করে তোলায় গুজরাতের কৃষির বৃদ্ধির হার ২০০৭ সালের মধ্যে ৯.৬% এবং ২০১০ সালের মধ্যে বার্ষিক কৃষির বৃদ্ধির হার দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ ১০.৯৭% হয়ে যায়।

এই সময়কালে মোদী সরকার গুজরাতের সমস্ত গ্রামে বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে সক্ষম হন। মোদি বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে কৃষকদের অনেকটাই প্রাধান্য দেন। রাজ্যে জ্যোতি গ্রাম যোজনা নামক প্রকল্পের ব্যাপক প্রয়োগ হয়, এই প্রকল্প অনুসারে গ্রামীণ বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে কৃষি বিদ্যুৎ সংযোগগুলিকে আলাদা করে দেওয়া হয়। বিদ্যুতের খরচ কমাতে চাষের চাহিদা অনুযায়ী এই বিদ্যুৎ সরবরাহের নীতি প্রচলিত হয়। প্রথম দিকে চাষীরা প্রতিবাদ করলেও নতুন নিয়মে বিদ্যুতের সরবরাহের ফলে লাভের মুখ দেখলে সেই প্রতিবাদ স্তিমিত হয়ে পড়ে।[৮৯] একতি সমীক্ষায় দেখা যায়, সমবায় খামার ও বৃহৎ চাষীরা এই প্রকল্পে লাভবান হলেও ক্ষুদ্র চাষী ও কৃষিমজুরেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মোদীর তৃতীয়বারের মুখ্যমন্ত্রীত্বের কালে গুজরাত ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স টেক-সিটি প্রকল্পে অগ্রগতি ঘটে। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে গিফট-১ ও গিফট-২ নামক দুইটি উচ্চ অট্টালিকার নির্মাণ সম্পন্ন হয়।

গুজরাত উন্নয়ন বিতর্ক

মোদীর সরকার ভাইব্র্যান্ট গুজরাত স্লোগানের মাধ্যমে গুজরাতকে একটি চলমান উন্নয়নশীল এবং অর্থনৈতিক ভাবে সমৃদ্ধ রাজ্য হিসেবে তুলে ধরেন। যদিও সমালোচকরা গুজরাত মানবোন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণ, শিক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে অনগ্রসরতার দিকে আঙুল তুলেছেন। এই রাজ্য দারিদ্র্যে দেশের মধ্যে ত্রয়োদশ, শিক্ষায় একুশতম, পাঁচ বছরের নীভে ৪৪.৭% শিশু গড় ওজনের থেকে কম ওজনবিশিষ্ট এবং ২৩% অপুষ্টির শিকার। এর বিপরীতে গুজরাত রাজ্য সরকার দাবী করে যে এই রাজ্যে মহিলা শিক্ষার হার জাতীয় হারের চেয়ে বেশি, স্কুলছুট ছাত্রের হার ২০০১ সালের হিসেব অনুযায়ী ২০% থেকে কমে ২০১১ সালের মধ্যে ২% হারে নেমে এসেছে, মাতৃমৃত্যুর হার ২০০১ সাল থেকে ২০১১ সালের মধ্যে ৩২% কমেছে।

রাষ্ট্রবৈজ্ঞানিক ক্রিষ্টোফ জেফারলটের মতে গুজরাতের উন্নয়ন শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে সীমাবদ্ধ, অপরদিকে গ্রামীণ ও নিম্নবর্গের মানুষেরা আরো বেশি করে পিছিয়ে পড়েছেন। তার মতে মোদীর শাসনকালে দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা বেড়ে গেছে। ২০১৩ সালের জুলাই মাসে অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন মোদী প্রশাসনের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কঠোর সমালোচনা করেন, যদিও অর্থনীতিবিদ অরবিন্দ পনগরিয়া এবং জগদীশ ভগবতী মত প্রকাশ করেন যে গুজরাতের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের বিভিন্ন সামাজিক সূচকগুলি দেশের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় দ্রুত হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

সদ্ভাবনা মিশন

২০১১ সালের শেষের দিকে মোদী গুজরাতের মুসলিম সম্প্রদায়ের নিকটে পৌছুতে সদ্ভাবনা মিশনের অংশ হিসেবে বেশ কয়েকবার উপবাস অনশন করেন। এই অনশন গুজরাতের শান্তি, সমৃদ্ধি ও একতার জন্য বলে তিনি ঘোষণা করেন। ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই সেপ্টেম্বর আমেদাবাদ শহরে তিন দিনের অনশন দিয়ে এই কর্মসূচী শুরু হয়, যার পর তিনি ছাব্বিশটি জেলা ও আটটি শহরে ছত্রিশ বার অনশন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন, তবুও এই কর্মসূচী মুসলিম সম্প্রদায় ভালো ভাবে নিতে পারেননি। সৈয়দ ইমাম শাহী সায়েদ নামক এক মুসলিম ধর্মীয় প্রচারক এক সভায় মোদীকে মুসলিমদের টুপি দিতে গেলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। গোধরা শহরে অনশনের সময় মোদী বিরোধী এক মোর্চা সংগঠিত করার অভিযোগে কয়েকজনকে আটক করা হয়। এই কর্মসূচী একটি জনমোহিনী কর্মসূচী হিসেবে অনেকের নিকট সমালোচিত হলেও মোদী নিজে তা অস্বীকার করেন।

চতুর্থ মেয়াদ (২০১২–২০১৪)

২০১২ সালের গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনে মোদী মণিনগর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ৮৬,৩৭৩ ভোটের বড় ব্যবধানে জয়লাভ করেন। এই নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি ১৮২টি আসনের মধ্যে ১১৫টি দখল করলে মোদী চতুর্থ বার মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। পরে উপনির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি আরো চারটি আসন দখল করতে সমর্থ হয়।[১১৭] ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত ভারতের লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভের পর ভারতীয় জনতা পার্টির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদী ২১শে মে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রি পদ থেকে ইস্তফা দেন এবং পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আনন্দীবেন পটেলকে বেছে নেওয়া হয়।

জাতীয় রাজনীতি

কেশুভাই শঙ্কর সিং দ্বন্দ্বর সময় তিনি প্রথম দিল্লীর রাজনীতিতে আসলেও তেমন প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি৷

পরে ২০১৩ তে তাকে বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করা হয় ও নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জিতে ২৬শে মে ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ভারতের পঞ্চদশ প্রধানমন্ত্রীর পদে শপথ নেন ।

প্রধানমন্ত্রী

ভারতীয় জনতা পার্টির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভূমিধস জয়ী হওয়ার পর, মোদি ২০১৪ সালের ২৬ মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন। তিনি ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে দেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর জন্মগ্রহণকারী প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন।[১১৯] ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ-এর জয়ের পর মোদি দ্বিতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০২০ সালের ৬ ডিসেম্বর, তিনি ভারতের চতুর্থ-দীর্ঘকালীন প্রধানমন্ত্রী এবং দীর্ঘতম সময়ের জন্য অ- কংগ্রেস প্রধানমন্ত্রী হন।

শাসন ​​এবং অন্যান্য উদ্যোগ

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদির প্রথম বছরে ক্ষমতার উল্লেখযোগ্য কেন্দ্রীকরণ দেখা গেছে। মোদি, যার প্রাথমিকভাবে ভারতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না, তিনি তার নীতিগুলি কার্যকর করার জন্য অনেকগুলি অধ্যাদেশ পাস করেন, যার ফলে ক্ষমতার আরও কেন্দ্রীকরণ হয় । তার প্রশাসন বিচারক নিয়োগের উপর নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি এবং বিচার বিভাগের হ্রাস করার জন্য একটি বিল প্রণয়ন করে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে, তিনি পরিকল্পনা কমিশন বিলুপ্ত করেন, এটিকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশন ফর ট্রান্সফর্মিং ইন্ডিয়া (NITI Aayog) দিয়ে প্রতিস্থাপন করেন, পূর্বে পরিকল্পনা কমিশনের ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত করা। পূর্ববর্তী বছরগুলিতে পরিকল্পনা কমিশন সরকারের অদক্ষতা তৈরির জন্য এবং সামাজিক কল্যাণের উন্নতিতে তার ভূমিকা পালন না করার জন্য সমালোচিত হয়েছিল। কিন্তু ১৯৯০ এর অর্থনৈতিক উদারীকরণের পর থেকে, এটি সামাজিক ন্যায়বিচার সম্পর্কিত ব্যবস্থাগুলির জন্য দায়ী প্রধান সরকারী সংস্থা ছিল।

প্রশাসনের প্রথম বছরে, মোদি সরকার ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর মাধ্যমে অসংখ্য সুশীল সমাজ সংস্থা এবং বিদেশী বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছিল কারণ এই সংস্থাগুলি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর করছে৷ তদন্ত একটি জাদুকরী শিকার হিসাবে সমালোচিত হয়। আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থা মেডিসিনস সানস ফ্রন্টিয়েরস এবং পরিবেশগত অলাভজনক সংস্থা সিয়েরা ক্লাব এবং আভাজ তদন্ত করা গ্রুপগুলির মধ্যে ছিল। রাষ্ট্রদ্রোহ ও সন্ত্রাসবাদের আইনের মামলা করা হয়েছে যারা সরকারের সমালোচনা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে। এর ফলে বিজেপির মধ্যে তার কার্যপ্রণালী নিয়ে অসন্তোষ সৃষ্টি হয় এবং ইন্দিরা গান্ধীর শাসন শৈলীর সাথে তুলনা করা হয়।

মোদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম তিন বছরে ১,২০০টি অপ্রচলিত আইন বাতিল করেছেন; পূর্ববর্তী ৬৪ বছরে পূর্ববর্তী সরকারগুলি দ্বারা এই ধরনের ১,৩০১টি আইন বাতিল করা হয়েছিল। মোদি ডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্মসূচি চালু করেন যাতে সরকারি পরিষেবাগুলি ইলেকট্রনিকভাবে পাওয়া যায়, গ্রামীণ এলাকায় উচ্চ-গতির ইন্টারনেট অ্যাক্সেস প্রদানের জন্য অবকাঠামো তৈরি করা, দেশে ইলেকট্রনিক পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং ডিজিটাল সাক্ষরতা প্রচার করা।

২০১৯ সালে, অর্থনৈতিকভাবে সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তিদের জন্য শিক্ষাগত ভর্তি এবং সরকারি চাকরির ১০ শতাংশ সংরক্ষণের একটি আইন পাস হয়েছিল।২০১৬ সালে, মোদির প্রশাসন গ্রামীণ পরিবারগুলিতে বিনামূল্যে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) সংযোগ প্রদানের জন্য উজ্জ্বলা প্রকল্প চালু করে।

স্বাস্থ্য এবং স্যানিটেশন

প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তার প্রথম বছরে, মোদি কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় কমিয়েছিলেন। জানুয়ারী ২০১৫ সালে, মোদি সরকার তার নতুন স্বাস্থ্য নীতি (NHP) চালু করে, যা স্বাস্থ্যসেবায় সরকারের ব্যয় বৃদ্ধি করেনি। কিন্তু বেসরকারী স্বাস্থ্যসেবা সংস্থাগুলির ভূমিকার উপর জোর দেয়। এটি পূর্ববর্তী কংগ্রেস সরকারের নীতি থেকে দূরে সরে যাওয়ার প্রতিনিধিত্ব করে, যা শিশু এবং মাতৃমৃত্যুর হার হ্রাস সহ জনস্বাস্থ্য লক্ষ্যে সহায়তা করার জন্য প্রোগ্রামগুলিকে সমর্থন করেছিল। ন্যাশনাল হেলথ মিশন, যা এই সূচকগুলিতে লক্ষ্য করে জনস্বাস্থ্য কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত করে। গত বছরের তুলনায় ২০১৫ সালে প্রায় ২০ শতাংশ কম তহবিল পেয়েছে। মোদি প্রশাসন তার দ্বিতীয় বছরে স্বাস্থ্যসেবা বাজেট আরও ১৫% কমিয়েছে। পরের বছরের জন্য স্বাস্থ্যসেবা বাজেট ১৯% বেড়েছে; বেসরকারী বীমা প্রদানকারীরা বাজেটটিকে ইতিবাচকভাবে দেখেছে কিন্তু জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের ভূমিকার উপর জোর দেওয়ার সমালোচনা করেছেন এবং বলেছেন যে এটি জনস্বাস্থ্য সুবিধা থেকে দূরে সরে যাওয়ার প্রতিনিধিত্ব করে। ২০১৮ সালে স্বাস্থ্যসেবা বাজেট ১১.৫% বেড়েছে; পরিবর্তনের মধ্যে একটি সরকারী অর্থায়িত স্বাস্থ্য বীমা কর্মসূচির জন্য ₹ ২০ বিলিয়ন (US$250 মিলিয়ন) বরাদ্দ এবং জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের বাজেট হ্রাস অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ।

মোদি সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার উপায় হিসাবে স্যানিটেশনে তার সরকারের প্রচেষ্টার উপর জোর দিয়েছেন। ২ অক্টোবর ২০১৪-এ, মোদি স্বচ্ছ ভারত মিশন (“পরিচ্ছন্ন ভারত”) অভিযান শুরু করেন। প্রচারণার উল্লিখিত লক্ষ্যগুলির মধ্যে রয়েছে পাঁচ বছরের মধ্যে খোলামেলা মলত্যাগ এবং হাতে মলত্যাগ করা । কর্মসূচির অংশ হিসেবে, ভারত সরকার গ্রামীণ এলাকায় লক্ষ লক্ষ টয়লেট নির্মাণ শুরু করে এবং সেগুলি ব্যবহার করার জন্য মানুষকে উৎসাহিত করে। সরকার নতুন পয়ঃনিষ্কাশন কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনাও ঘোষণা করেছে এবং ২০১৯ সালের মধ্যে ৬০ মিলিয়ন টয়লেট নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। নির্মাণ প্রকল্পগুলি দুর্নীতির অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছে এবং নতুন নির্মিত টয়লেটগুলি ব্যবহার করার জন্য লোকেদের জন্য গুরুতর অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছে। ভারতে স্যানিটেশন কভার ২০১৪ সালের অক্টোবরে 38.7% থেকে মে 2018-এ 84.1% বেড়েছে কিন্তু নতুন স্যানিটারি সুবিধার ব্যবহার সরকারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম ছিল। ২০১৮ সালে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানিয়েছে যে স্যানিটেশন প্রচেষ্টা চালু করার পরে গ্রামীণ ভারতে অন্তত 180,000 ডায়রিয়া জনিত মৃত্যু এড়ানো হয়েছে।

২০২০ সালের মার্চ মাসে, COVID-19 মহামারীর প্রতিক্রিয়া হিসাবে, মোদী প্রশাসন মহামারী রোগ আইন, ১৮৯৭ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৫ আহ্বান করেছিল । একই মাসে, সমস্ত বাণিজ্যিক অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছিল। একটি 14-ঘন্টা কারফিউ ঘোষণা করেন এবং দুই দিন পরে তিন সপ্তাহের “সম্পূর্ণ লকডাউন” দিয়ে অনুসরণ করেন। এপ্রিলের শুরুতে ধীরে ধীরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয় এবং ২০২০ সালের নভেম্বরে সম্পূর্ণ প্রত্যাহার করা হয়। ২০২১ সালের মার্চে শুরু হওয়া মহামারীর দ্বিতীয় তরঙ্গ প্রথমটির চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে আরও বিধ্বংসী ছিল; ভারতের কিছু অংশে ভ্যাকসিন, হাসপাতালের বিছানা, অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রীর ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এপ্রিলের শেষের দিকে ভারত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪০০,০০০-এরও বেশি কেস রিপোর্ট করেছে, এটি করার প্রথম দেশ। ভারত ২০২১ সালের জানুয়ারিতে তার টিকা কার্যক্রম শুরু করে; ২০২২ সালের জানুয়ারিতে, ভারত ঘোষণা করেছিল যে এটি প্রায় 1.7 বিলিয়ন ডোজ টিকা দিয়েছে এবং ৭২০ মিলিয়নেরও বেশি লোককে সম্পূর্ণরূপে টিকা দেওয়া হয়েছে। ২০২২ সালের মে মাসে, WHO অনুমান করেছে যে ভারতে 4.7 মিলিয়ন মানুষ কোভিড-19-এ মারা গেছে, বেশিরভাগই ২০২১ সালের মাঝামাঝি দ্বিতীয় তরঙ্গের সময় – ভারত সরকারের অনুমানের প্রায় ১০ গুণ। মোদি প্রশাসন ডব্লিউএইচওর অনুমান প্রত্যাখ্যান করেছে। এইভাবে ভারতে মৃতের সংখ্যা ছিল বিশ্বব্যাপী সর্বোচ্চ, যা কোভিডের ২০% এরও বেশি মৃত্যুর জন্য দায়ী।

 

প্রতিরক্ষা নীতি

বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, সেই সময়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী, এবং মোদি ২০১৭ সালে তেল আবিব, ইসরায়েলে প্রযুক্তি প্রদর্শনী পরিদর্শন করছেন

মোদির অধীনে ভারতের নামমাত্র সামরিক ব্যয় ক্রমাগত বেড়েছে। মোদির আমলে, জিডিপির একটি ভগ্নাংশ এবং মুদ্রাস্ফীতির জন্য সামঞ্জস্য করার সময় সামরিক বাজেট হ্রাস পায়। সামরিক বাজেটের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ কর্মীদের খরচের জন্য নিবেদিত ছিল মন্তব্যকারীরা লিখেছেন বাজেট ভারতীয় সামরিক আধুনিকীকরণকে বাধাগ্রস্ত করেছিল।

মোদি তার নির্বাচনী প্রচারের সময় “পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠোর” হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং বারবার পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদের রপ্তানিকারক বলে অভিহিত করেছিলেন । ২৯শে সেপ্টেম্বর ২০১৬, ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায় যে তারা আজাদ কাশ্মীরে সন্ত্রাসী লঞ্চ প্যাডে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছে ; ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, হামলায় ৫০ জন সন্ত্রাসী ও পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছে। পাকিস্তান প্রাথমিকভাবে অস্বীকার করে যে কোনো হামলা হয়েছে। পরবর্তী রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, স্ট্রাইকের সুযোগ এবং হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কে ভারতের বিবৃতি অতিরঞ্জিত হয়েছে, যদিও আন্তঃসীমান্ত হামলা চালানো হয়েছিল। ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সালে, ভারত পাকিস্তানে একটি কথিত সন্ত্রাসী শিবিরের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালায় তাৎপর্যপূর্ণ কোন লক্ষ্য আঘাত করা হয়নি। আরও সামরিক সংঘর্ষ, যার মধ্যে আন্তঃসীমান্ত গোলাবর্ষণ এবং একটি ভারতীয় বিমানের ক্ষতি হয়েছে।

২০১৯ সালের ভারতীয় সাধারণ নির্বাচনে মোদির বিজয়ের পর, তিনি ভারতের প্রতিরক্ষা নীতিগুলি বিশেষ করে চীন ও পাকিস্তানের প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেন। ৫ মে 2020-এ, চীনা ও ভারতীয় সৈন্যরা বিতর্কিত প্যাংগং হ্রদ, লাদাখ এবং তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কাছাকাছি থাকা সহ চীন-ভারত সীমান্ত বরাবর অবস্থানগুলিতে আগ্রাসী হাতাহাতি এবং সংঘর্ষে লিপ্ত হয় ; এবং সিকিম এবং তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের সীমান্তের কাছে । পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (LAC) বরাবর অতিরিক্ত সংঘর্ষ হয়েছে । ২০২০ সালে, সংঘর্ষদেশগুলোর মধ্যে অনেক সীমান্ত সংঘর্ষ, উভয় পক্ষের প্রতিক্রিয়া ও প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। শান্তির জন্য সামরিক ও কূটনৈতিক উপায় ব্যবহার করে ভারত ও চীনের মধ্যে আলোচনার একটি সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়। 2021 সালে রিপোর্ট করা প্রথম সীমান্ত সংঘর্ষ ২০ জানুয়ারী ছিল; এটিকে সিকিমের একটি ক্ষুদ্র সীমান্ত সংঘর্ষ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

২০২১ সালের ডিসেম্বরে, মোদি সামরিক প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য রাশিয়ান নেতা ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেন। মোদি সরকার S-400 ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কিনেছে, একটি ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী স্ট্রাইকিং সিস্টেম, যা দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করেছে। ভারত ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের নিন্দা করতে অস্বীকার করে এবং নিরপেক্ষ থাকে। ভারত সরকারের অপারেশন গঙ্গা উদ্যোগ যুদ্ধের সময় ইউক্রেনে আটকে পড়া ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিল। 19,000 এরও বেশি ভারতীয় নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল, প্রতিবেশী দেশগুলির কিছু সহ।

পরিবেশগত নীতি

তার মন্ত্রিসভার নামকরণের সময়, মোদি পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন করে “পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়” রাখেন এবং তার প্রশাসনের প্রথম বাজেটে এর অর্থ বরাদ্দ অর্ধেকেরও বেশি।  নতুন মন্ত্রণালয় পরিবেশগত সুরক্ষার সাথে সম্পর্কিত এবং শিল্প কার্যকলাপের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য আইনগুলিকে সরিয়ে দিয়েছে বা পাতলা করেছে।  সরকার ন্যাশনাল বোর্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফকে পুনর্গঠন করার চেষ্টা করেছিল যাতে এটিতে আর এনজিওর প্রতিনিধি থাকবে না কিন্তু ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই পদক্ষেপকে অবরুদ্ধ করে। অন্যান্য পরিবর্তনগুলির মধ্যে রয়েছে ছোট খনির প্রকল্পগুলির উপর মন্ত্রকের তদারকি হ্রাস করা এবং বনাঞ্চলের অভ্যন্তরে প্রকল্পগুলির জন্য উপজাতীয় পরিষদের অনুমোদনের প্রয়োজনীয়তা শেষ করা। মোদি ভারতের সবচেয়ে দূষিত অঞ্চলে নতুন শিল্প কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশও তুলে নিয়েছেন।  পরিবর্তনগুলি ব্যবসায়ীদের দ্বারা স্বাগত জানালেও পরিবেশবাদীদের দ্বারা সমালোচিত হয়।

২০১৪ সালে অসমীয়া ছাত্রদের সাথে কথা বলার সময়, মোদি জলবায়ু পরিবর্তনকে ছোট করে দেখেছিলেন, বলেছিলেন; “জলবায়ু বদলায়নি। আমরা বদলে গেছি। আমাদের অভ্যাস বদলে গেছে। আমাদের অভ্যাস নষ্ট হয়ে গেছে। এর কারণে আমরা আমাদের পুরো পরিবেশকে ধ্বংস করে দিয়েছি।”  পরে তার প্রশাসনে, তবে, তিনি জলবায়ু কর্মের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন,  বিশেষ করে পরিচ্ছন্ন শক্তির বিস্তারের সাথে ।  ২০১৫ সালে, মোদি সৌর শক্তিতে বিনিয়োগকে উত্সাহিত করার জন্য আন্তর্জাতিক সৌর জোট উদ্যোগের প্রস্তাব করেছিলেন।  উন্নত দেশগুলোকে দায়ী করা, মোদি এবং তার সরকার বলেছে যে জলবায়ু পরিবর্তনে ভারতের একটি নগণ্য ঐতিহাসিক ভূমিকা রয়েছে। COP26 সম্মেলনে, মোদি ঘোষণা করেছিলেন যে ভারত ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষতাকে লক্ষ্য করবে এবং তার পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ক্ষমতা প্রসারিত করবে।  ভারতীয় পরিবেশবাদী এবং অর্থনীতিবিদরা এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন, এটিকে সাহসী জলবায়ু পদক্ষেপ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।  প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য পূরণের জন্য ভারতই একমাত্র প্রধান অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে ।  এটি নির্ধারিত সময়ের পাঁচ মাস আগে ইথানলের মিশ্রণের ১০ শতাংশ অর্জন করেছে ।

গণতান্ত্রিক পশ্চাদপসরণ

মোদির আমলে, ভারত গণতান্ত্রিক পশ্চাদপসরণ অনুভব করেছে।  একটি সমীক্ষা অনুসারে, “বিজেপি সরকার ক্রমবর্ধমানভাবে কিন্তু পদ্ধতিগতভাবে রাজনৈতিক কার্যনির্বাহীকে অ্যাকাউন্টে রাখার জন্য বিদ্যমান প্রায় সমস্ত ব্যবস্থাকে আক্রমণ করেছে, হয় এই প্রক্রিয়াগুলি রাজনৈতিক নির্বাহীর অধীনস্থ হয়েছে বা দলীয় অনুগতদের দ্বারা বন্দী হয়েছে তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে। ”  মোদি সরকার গণমাধ্যম এবং একাডেমিয়ায় সমালোচকদের ভয় দেখানো এবং দমন করার জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করেছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং তথ্যের বিকল্প উৎসকে ক্ষুণ্ন করেছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের পরিবর্তে হিন্দু-জাতীয়তাবাদী অগ্রাধিকারের উপর ফোকাস সহ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলিকে দুর্বল করার জন্য একটি গণতান্ত্রিক ম্যান্ডেট ব্যবহার করার জন্য তার প্রশাসনের সমালোচনা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদির দ্বিতীয় মেয়াদে, বিশেষ করে নাগরিক অধিকার এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতার অবক্ষয় ঘটেছে ।

 

পুরস্কার এবং স্বীকৃতি

রাষ্ট্রীয় সম্মান
Decoration দেশ তারিখ মন্তব্য সূত্র.
State Order of Ghazi Amir Amanullah Khan টেমপ্লেট:দেশের উপাত্ত Islamic Republic of Afghanistan 4 June 2016 The highest civilian honour of Afghanistan
Order of Zayed  United Arab Emirates 4 April 2019 The highest civilian honour of the United Arab Emirates
Order of the Dragon King  Bhutan 17 December 2021 First Class, The highest civilian honour of Bhutan.
Order of the Distinguished Rule of Izzuddin  Maldives 8 June 2019 The highest honour of the Maldives awarded to foreign dignitaries
Order of St. Andrew  Russia 12 April 2019 The highest civilian honour of Russia
Order of Logohu  Papua New Guinea 22 May 2023 Grand Companion (GCL), the highest civilian honour of Papua New Guinea.
Order of Fiji  Fiji 22 May 2023 Companion (CF), the highest civilian honour of Fiji.
Order of Abdulaziz Al Saud  Saudi Arabia 3 April 2016 Special Class, the highest honour of Saudi Arabia awarded to non-Muslim dignitaries
Legion of Merit  United States 21 December 2020 Chief Commander, the highest degree of the Legion of Merit
King Hamad Order of the Renaissance  Bahrain 24 August 2019 First Class, the highest honour of Bahrain awarded to foreign dignitaries
Grand Collar of the State of Palestine  Palestine 10 February 2018 The highest civilian honour of Palestine

Related posts

আয়রনম্যান আরাফাত এর জীবনী, পেশা, উচ্চতা ও তথ্য প্রোফাইল

News Desk

কে এই চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী

জাহিদ হাসান

সাবিলা নূরের জীবনী, উচ্চতা, বয়স, ঘটনা,পরিবার,স্বামী, ছবি ও ক্যারিয়ার

News Desk

Leave a Comment