Image default
জীবনী

জিরো থেকে হিরো একজন জামাল ভূঁইয়ার গল্প

জামাল হ্যারিস ভূইয়া (জন্ম: ১০ এপ্রিল ১৯৯০; জামাল ভূইয়া নামে সুপরিচিত) হলেন একজন ডেনীয়–বাংলাদেশী পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশের পেশাদার ফুটবল লীগের শীর্ষ স্তর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের ক্লাব সাইফ এবং বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে একজন মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলেন। তিনি মূলত একজন রক্ষণাত্মক মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেললেও মাঝেমধ্যে কেন্দ্রীয় মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে খেলে থাকেন। এছাড়াও তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।

বদলে যাওয়ার গল্প শোনালেন জামাল ; ছবি :Bdnews24
* ফুটবলে হাতেখড়ি

অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার ফুটবলের হাতেখড়ি কীভাবে, সে গল্পটা এবার বলা যাক।

ছেলেবেলার ছটফটে মন থেকেই ফুটবলে আসা। কোপেনহেগেন এর বিভিন্ন পর্যায়ের দলের হয়ে ম্যাচ খেলেছিলেন, খেলেছিলেন কোপেনহেগেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলেও। কিন্তু দেশের মায়া কি ছেলেটা এত সহজেই ভুলে যাবে? তাই নিজের তাগিদেই মা-বাবার কথা উপেক্ষা করেই ২০১০ সালে আসার চেষ্টা করেন বাংলাদেশে। কিন্তু বিধি বাম, পাসপোর্ট জটিলতায় ফিরে যেতে হলো তাকে।

এরপর ২০১১ সালে বাংলার মাটিতে পা রাখলেও এবারও ভাগ্য তার সহায়ক হয়নি। দেশের লোকাল খেলোয়াড়দের সাথে তার অনুশীলনে ব্যাপক পার্থক্য, এমনকি সে হাঁপিয়ে যাচ্ছিল, পানি খাচ্ছিল একটু পর পর। কোচিং স্টাফ থেকে শুরু করে অনেক খেলোয়াড়ই তাকে নিয়ে হাসাহাসি, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করছিল। এবারও সে জাতীয় দলের কাছে গিয়েও জাতীয় দলের জার্সি পরতে পারলেন না। আর সেই শোককে শক্তিতে পরিণত করেই তৎকালীন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফের ডাকে সাড়া দিয়ে ২০১৩ সালে ক্যাম্পে ট্রায়াল দিয়েই সবার নজর আসেন এই ফুটবলার।

এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দেশের হয়ে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে অভিষেকটাও হয়ে যায় নেপালে অনুষ্ঠিত সাফে।

* বাংলাদেশে ফুটবল ক্যারিয়ার

ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে ডেনমার্কের ক্লাব কোপেনহেগেনের বিভিন্ন পর্যায়ের ক্লাব এবং কোপেনহেগেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে খেলেছিলেন৷ কিন্তু লাল-সবুজের হয়ে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়াটা প্রথমে কষ্টকরই হয়েছিল। সুযোগ পাওয়ার পর অবশ্য তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। লোডভিক ডি ক্রুইফের মাধ্যমে জাতীয় দলে ২০১৩ সালে নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপেই আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক৷

এরপর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সবচেয়ে মূল্যবান খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হয়েছিলেন, যেখানে ৮ দল অংশগ্রহণ করেছিল। অনেক বছর পর ২০১৫ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সব দলের অনূর্ধ্ব-২৩ দল অংশগ্রহণ করে। দলগতভাবে, জামাল এপর্যন্ত ৩টি শিরোপা জয়লাভ করেছেন, যার সবগুলো শেখ জামালের হয়ে জয়লাভ করেছেন। কিন্তু মামুনুল-জামাল ভূঁইয়াদের দল প্রথম ম্যাচেই মালয়েশিয়ার কাছে ১-০ গোলে হারের লজ্জা পায়। এরপরের ম্যাচে ‘বাঁচা-মরার লড়াইয়ে’ একটা জয় তো দরকারই! নিজেদের ২য় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১-০ গোলে সেই জয় তুলে নিয়েছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ।

২০১৪ সালে, জামাল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দলের হয়ে বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক পর্যায়ে অভিষেক করেছিলেন। এরপূর্বে ২০১৩ সালে তিনি বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিষেক করেছেন; বাংলাদেশের জার্সি গায়ে তিনি এপর্যন্ত ৫৬ ম্যাচে অংশগ্রহণ করেছেন।

*দক্ষিণ এশিয়ার সেরা খেলোয়াড়দের একজন
ফুটবল-শিল্পী জামাল ভূঁইয়ার ;ছবি :Prothom Alo

২০১৪ সালের একটি তালিকায় তাকে দক্ষিণ এশিয়ার নবম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে গণ্য করা হয়। তার ক্লাবের দুই বিদেশি কোচ নিকোলা কোভাজোবিচ ও লডউইক ডি ক্রুইফ তাকে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা রক্ষণশীল মধ্যমাঠের খেলোয়াড় হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি ২০১৪ কিংস কাপ ও বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু কাপের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন ।

*ব্যক্তিগত জীবন

ভূঁইয়া ইংরেজী এবং ড্যানিশ ভাষায় সাবলীল, এবং বাংলায় আধা-সাবলীল। ১ মে, ২০১৯ তারিখে, তাকে লা লিগা স্টুডিওতে জো মরিসন এবং জন বারিজের সাথে লাইভ ধারাভাষ্যের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ম্যাচটি ছিল রিয়াল ভ্যালাদোলিড এবং ভ্যালেন্সিয়া সিএফ -এর মধ্যে। তিনি এসডি আইবার এবং এফসি বার্সেলোনার ম্যাচের ধারাভাষ্যকারও ছিলেন।

জামাল ভূঁইয়ের বিয়ে হয়:ছবি :Risingbd

২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি জামাল ভূঁইয়ের বিয়ে হয়, বিয়ের অনুষ্ঠান হয় তার জন্মস্থান, কোপেনহেগেন, ডেনমার্কে।

সূত্র : রোয়ার মিডিয়া, উইকিপিডিয়া

Related posts

স্যামসন এইচ চৌধুরী – একজন দূরদর্শী স্বপ্নদ্রষ্টা

News Desk

দ্য গডফাদার মুভির ইতিহাস! প্লট, কাস্ট, অস্কার, এবং ঘটনা|

প্রিয় কান্তি চাকমা

প্রবীর মিত্র জীবনী, উচ্চতা, বয়স, ফটো, ফ্যামিলি, দাম্পত্য সঙ্গী, সিনেমা এবং সম্পূর্ণ প্রোফাইল

News Desk

Leave a Comment