মুহম্মদ জাফর ইকবাল (জন্ম: ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২) হলেন একজন বাংলাদেশী কথাসাহিত্যিক ও বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখক, কলম লেখক, পদার্থবিদ, শিক্ষাবিদ ও আন্দোলনকর্মী। তার লেখা কিছু উপন্যাস চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে। তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের একজন অধ্যাপক এবং ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত একই বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ কৌশল বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। ২০১৯ সালের অক্টোবরে তিনি অবসরে চলে যান। তিনি ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ক্যলিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনলজি ও বেল কমিউনিকেশনস রিসার্চে ১৮ বছর কাজ করার পর তিনি বাংলাদেশে ফিরে আসেন ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যুক্ত হন।
জাফর ইকবাল ব্যক্তিগত জীবন
জাফর ইকবালের জন্ম, ১৯৫২ সালের ২৩ ডিসেম্বর তারিখে পিতার কর্মস্থল সিলেটে। মুহম্মদ জাফর ইকবালের নাম আগে ছিল বাবুল। তার পিতা মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা আখতার খাতুন। বাবা ফয়জুর রহমান আহমদের পুলিশের চাকরির সুবাদে তার ছোটবেলা কেটেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায়। পিতা লেখালেখির চর্চা করতেন এবং পরিবারের এই সাহিত্যমনস্ক পরিবেশে জাফর ইকবাল খুব অল্প বয়স থেকেই লিখতে শুরু করেন। তিনি তার প্রথম বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখেন সাত বছর বয়সে। ১৯৭১ সালের ৫ মে পাকিস্তানি আর্মি এক নদীর ধারে তার পিতাকে গুলি করে হত্যা করে। বিশ্ববিদ্যালয়-পড়ুয়া জাফর ইকবালকে পিতার কবর খুঁড়ে তার মাকে স্বামীর মৃত্যুর ব্যাপারটি বিশ্বাস করাতে হয়েছিল।
ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদ তার বড় ভাই এবং রম্য ম্যাগাজিন উন্মাদের সম্পাদক ও কার্টুনিস্ট, সাহিত্যিক আহসান হাবীব তার ছোট ভাই। তার বোন তিনজন- সুফিয়া হায়দার, মমতাজ শহীদ ও রুখসানা আহমেদ। কন্যা ইয়েশিম ইকবাল তার কিশোর উপন্যাস আমার বন্ধু রাশেদ ইংরেজিতে রূপান্তর করেছেন Rashed, my friend নামে।
জাফর ইকবাল শিক্ষাজীবন
জাফর ইকবাল ১৯৬৮ সালে বগুড়া জিলা স্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৭০ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। তিনি ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৭৬ সালে স্নাতক পাশ করে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি অর্জন করতে যান। তার বিষয় ছিল – ‘Parity violation in Hydrogen Atom. সেখানে পিএইচডি করার পর বিখ্যাত ক্যালটেক থেকে তার ডক্টরেট-উত্তর গবেষণা সম্পন্ন করেন।
জাফর ইকবাল কর্মজীবন
ড. জাফর ইকবাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন যথাক্রমে ১৯৭৫ ও ১৯৭৬ সালে। ১৯৭৫ সালে অনার্স-এ দুই নম্বরের ব্যবধানে প্রথম শ্রেণীতে ২য় স্থান অধিকার করেন। তিনি ১৯৮২ তে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচ.ডি সম্পন্ন করে ১৯৮২ থেকে ১৯৮৮ পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়া ইনিস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে সাফল্যের সাথে ডক্টরেটোত্তর গবেষণা সম্পন্ন করেন। ১৯৮৮ তে তিনি বিখ্যাত বেল কমিউনিকেশনস রিসার্চ (বেলকোর) এ গবেষক হিসাবে যোগদান করেন এবং ১৯৯৪ পর্যন্ত সেখানেই কাজ করেন। ওই বছরেই তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগদান করেন। তিনি একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য মনোনীত হন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তিনি এক সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। বর্তমানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এবং তড়িৎ ও বৈদ্যুতিন প্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত থেকে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর অবসর গ্রহণ করেন।
জাফর ইকবাল সম্পূর্ণ জীবনী তথ্য
পুরো নাম: | ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল |
ডাক নাম: | জাফর ইকবাল |
পেশা: | লেখক, পদার্থবিদ ও শিক্ষাবিদ |
জন্ম তারিখ: | ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২ |
জন্মস্থান: | সিলেট, বাংলাদেশ |
বয়স: | (বয়স ৬৮) |
ইঞ্চিতে উচ্চতা | ১.৬৫ মিটার (৫ ফুট ৫ ইঞ্চি) |
কি কারণে বিখ্যাত: | গল্প, উপন্যাস,বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী |
জাতীয়তা: | বাংলাদেশী |
শিক্ষা | পিএইচডি |
ধর্ম: | ইসলাম |
লিঙ্গ: | পুরুষ |
রাশি: | এন/এ |
পিতা: | ফয়জুর রহমান আহমেদ একজন পুলিশ অফিসার |
মা: | আয়েশা ফয়েজ গৃহিনী |
বৈবাহিক অবস্থা: | বিবাহিত |
স্ত্রী | ড.ইয়াসমীন হক |
সন্তান | নাবিল ইকবাল (পুত্র),ইয়েশিম ইকবাল (কন্যা) |
পুরস্কার | জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার |
আত্মীয় | হুমায়ূন আহমেদ (ভাই),আহসান হাবীব (ভাই) |
ড. জাফর ইকবালের পরিবার পরিচিতি
পিতাঃ জাফর ইকবালের বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ একজন পুলিশ অফিসার ছিলেন যিনি মুক্তিযুদ্ধে নিহত ও শহিদ হন।
মাতাঃ মা আয়েশা ফয়েজ গৃহিনী ছিলেন। পাশাপাশি তিনি নিজেও লেখিকা ছিলেন। সন্তানদের লিখা পড়তে খুব পছন্দ করতেন।
বড় ভাইঃ হুমায়ূন আহমেদ লেখক ও মুভি নির্মাতা ছিলেন। অসংখ্য উপন্যাস লিখেছেন তিনি। এর মধ্যে হিমু এবং মিসির আলী সিরিজের বই গুলো তরুন সমাজে বিশেষভাবে সমাদৃত হয়েছে। ১৯ জুলাই ২০০১২ তে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন।
ছোট ভাইঃ আহসান হাবিব, কার্টুনিস্ট,রম্য সাহিত্যিক এবং কমিক বুক রাইটার হিসেবে পরিচিত। তিন বোন সুফিয়া হায়দার, মমতাজ শহিদ ও রোকসানা আহমেদ।
বোনঃ জাফর ইকবালের তিন বোন । তাঁরা হলেন, সুফিয়া হায়দার, মমতাজ শহীদ, রোকসানা আহমেদ।
স্ত্রীঃ ১৯৭৮ সালে আমেরিকায় থাকাকালীন সময়ে লেখক তারই সহপাঠী ইয়াসমিন হকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ইয়াসমিন হক বর্তমানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞানের প্রফেসর হিসেবে শিক্ষকতা করছেন। ছেলেঃ নাবিল ইকবাল যুক্তরাষ্ট্রের কর্ণেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক শেষ করে, পিএইচডি করছেন ম্যাসাচুয়েট ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে।
মেয়েঃ ইয়েশিম ইকবাল কর্ণেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করেছেন এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে পিএইচডি করছেন। তিনি জাফর ইকবালের কিশোর উপন্যাস “আমার বন্ধু রাশেদ” (Rashed,My Friend)নামে ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন।
মুহম্মদ জাফর ইকবালের ছেলেবেলা । দুরন্ত কৈশোর
পরিবার যেমনই হোক, উচ্চবিত্ত বা মধ্যবিত্ত,ছেলেবেলা সর্বদা ঘটনা বহুলই হয়। মজার মজার ছোট ছোট ঘটনা। যেমন ধরুন ক্লাসের সব চেয়ে সহজ সরল ছেলেটাকে কিভাবে বিরক্ত করা যায়,কারোর সুন্দর নামটাকে কিভাবে কুৎসিত করে ডেকে তাকে খ্যাপানো যায়।ঝাক বেধেঁ গোসল করতে যেয়ে পুকুর ওয়ালীর বোকা শোনা,তারপর চুরি করে আম পেড়ে খাওয়ার কথা নাই বললাম, সবই ছেলেবেলার সেই ছেলেমানুষী।লেখকের ছেলেবেলাও কিন্তু মজারই ছিল আর একটু বেশিই মজার।লেখকের ছেলেবেলা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় কাটলেও ঘটনাতো আর থেমে থাকেনি, সেই রকমই একটা মজার ঘটনা- পাঠকগন কখনো হাতের লেখার মধ্যে হাতির মাথা দেখেছেন কিনা সেটা আমি বলতে পারবো না কিন্তু লেখক তাঁর বড় ভাই বোনের হাতের লেখার মধ্যে হাতির মাথা দেখতে পেতেন।লেখকের ভাইবোন বাড়ির কাজ শেষ করে খাতা রেখে দিয়েছেন, লেখক হাতের লেখা দেখতে যেয়ে তার মাঝে অনেক গুলো হাতির মাথা দেখলেন, ভাবলেন হয়তো চোখ আকাতে ভুলে গেছে তাই তিনি প্রত্যেকটা মাথায় চোখ এঁকে দিলেন পরের দিন যখন তাঁর ভাই বোন স্কুলে স্যারের কাছে খাতা দিয়েছেন পরের কাহিনী নাই বলি। আসল কথাটা হচ্ছে হাতির মাথাটা ছিল ইকারের উপরের অংশ।লেখকের ছেলেবেলার আরও মজার মজার ঘটনা জানতে পড়ে নিতে পারেন মুহাম্মদ জাফর ইকবালের শৈশব বিজরিত কিছু স্মৃতি এবং দুরন্ত ছোটবেলা।
মুহম্মদ জাফর ইকবালের ছাত্রজীবনে ঘটা কিছু ঘটনা
জাফর ইকবালের জীবনী তে ছাত্রজীবন অধ্যায়টি নানাবিধ ঘটনাবহ নিয়ে সজ্জিত। ছাত্রজীবন একজন মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ন অধ্যায়, এখানে কোন কিছুর অভাব নেই বলতে গেলে, আনন্দ বেদনা সকল কিছুর সম্ভারই এই ছাত্র জীবন। একজন সাধারন ছাত্রের মতো জাফর ইকবালও বাদ যাননি ছাত্র জীবনের এই অধ্যায়টি থেকে, যেহেতু তাঁর বাবা বেচে নেই তাই সংসার তার মা কিভাবে চালাচ্ছেন, এটা তাঁর কাছে রহস্য ছিল। আর এজন্যই ছাত্র জীবনেই কিছু উপার্জন করার মানসিকতা লেখকের মধ্যে তৈরি হয়ে গিয়েছিলো, তাই টিউশনি করাতেন লোক চক্ষুর আড়ালে, আবার পত্রিকার অফিসেও ঘোরাঘুরি করতেন কোন কাজের আসায় আর পেয়ে ও যান কার্টুন আঁকার কাজ।
একটা কার্টুন একেছেন এরকম যে –একটা শাড়িকে দড়ি হিসেবে ব্যবহার করে একজন মানুষ গলায় দড়ি দিয়ে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে, নিচে তার স্ত্রী হাউমাউ করে কাঁদছে আর বলছে, “ওগো” তুমি আমার এত দামি শাড়িটা এভাবে নষ্ট করলে!(রঙিন চশমা)
তাঁর আঁকা কার্টুন গুলো তখনকার জনপ্রিয় পত্রিকা গনকণ্ঠে ছাপা হতো তিনি তাঁর নাম ব্যবহার করতেন বিচ্ছু। কার্টুন আকার জন্য তাকে সব সময় আইডিয়ার জন্য ভাবতে হতো এজন্য মনে কোন হাস্যকৌতুক ছিলো না। তিনি যদিও কার্টুন একে মানুষকে হাসাতেন কিন্তু পারিশ্রমিকের জন্য তাকে যে বিভিন্ন জায়গায় সম্পাদক ঘোরাতেন তাতে তাঁর জীবনটাই একটা বড় কার্টুন মনে হতো, যা সবার অজানা শুধুমাত্র লেখকই সেটার প্রমান ছিলো।
ড. জাফর ইকবাল তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্র, প্র্যাক্টিকেল ক্লাস তাঁর বলা যায় একটা পছন্দের বিষয় ছিলো। একটা এক্সপেরিমেন্ট করার সময় সিলভার নাইট্রেটের দ্রবন এক ফোটা তার হাতে পড়ে একটু কালচে মত রং হলো যা হয়তো কিছু দিন স্থায়ী হবে। লেখকের একটু কৌতুহল জাগলো তিনি সিলভার নাইট্রেট দিয়ে হাতে একটা মাছের ছবি এঁকে ফেললেন যা দেখে লেখকের বন্ধুরা মুগ্ধ হয়ে গেলেন। কিন্তু কিছু পরেই লেখক আঁকানো ছবিটা জুড়ে যন্ত্রনা অনুভব করতে লাগলেন, যা ক্রমশ বাড়লো আর ফুলে যেতে লাগলো। সেরে যাওয়ার কোন নামই ছিলো না বরং দগদগে ঘা এ পরিনত হলো। শেষ পর্যন্ত লেখক মেডিকেলে ইমার্জেন্সিতে গেলেন, ডা্ক্টার দেখে তো অদ্ভুদ ভাবে তাকিয়ে ছিলেন লেখকের দিকে, সব শুনে একটা ইনজেকশন দিয়ে বলেছিলেন,ইনফেকশন হয়ে আপনি শকে চলে যেতে পারতেন, ভবিষ্যতে এমন পাগলামে করবেন না (রঙিন চশমা)।
হলের ডাইনিংএ খেতে বসেছেন লেখক বন্ধুদের সাথে,সেদিনের খাবারের মেনু ছিলো শিং মাছ। একজন বলে উঠলে দেখেছো মাছের গলা থেকে বড়শিটা পর্যন্ত খোলে নি। এই বলে সে মাথাটা ফেলে দিচ্ছিলো কিন্তু লেখক মাথা নিয়ে বললো কেচো কে টোপ বানিয়ে নাকি মাছ ধরে দেখি কেঁচোটা ফেলেছে কিনা,এই বলে সে একটা পুরুষ্ট কেচো বের করে আনলো তাতে সবার খাওয়া বন্ধ হয়ে গেল, লেখক কিন্তু খাওয়া বন্ধ করেন নি। তিনি বলেছেন, খাওয়া বন্ধ করবো কেন?আমরা হলে থাকি তো!
ছাত্রজীবনে প্রক্সি শব্দটা কারোর অজানা নয়,কোন ক্লাস বা ব্যাচে বলো কেউ না কেউ তো প্রক্সি দেয়ার জন্য বিখ্যাত থাকেই, যেহেতু লেখককে নিয়ে লিখছি , তাই পাঠক ভাবতে পারেন লেখক নিশ্চয়ই প্রক্সি দিতেন। না তা কিন্তু নয়, লেখক মোটেও প্রক্সি দেন নি তবে তার জন্য কাউকে প্রক্সি দিতে হতো। ইলেক্ট্রনিক্স ক্লাস লেখকের অপছন্দ যদিও বিষয়টা তার খুবই প্রিয়। ক্লাসে না যাওয়ার কারন সিলেবাসে যেটা আছে সেটা পুরনো দিনের যা বর্তমানে ব্যবহৃত হয় না এজন্য তিসি ক্লাসে যান না। উপস্থিতি না থাকলে পরিক্ষা দিতে পারবে না তাই লেখক একজন প্রক্সি দাতা ঠিক করলেন, যে নিয়মিত প্রক্সি দেন। হঠাৎ প্রক্সিদাতা দেখলেন স্যার লেখকের রোলই ডাকছেন না। লেখককে যখন বললেন তখন লেখক তো শুনে আকাশ থেকে পড়লেন, কেন তার রোল ডাকেন না? তাঁর প্রক্সি দাতা বললেন বেশ কয়েকদিন মিস হয়ে গিয়েছিল,স্যার ভাবছেন তুমি আর ক্লাসেই যাবে না।
জাফর ইকবালের মজাদার বিবাহিত জীবন
জাফর ইকবাল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারই সহপাঠী ইয়াসমিন হকের সাথে। ইয়েশিম ও নাবিল তাদের দুই সন্তান। তাদের পরিচয় এরই মধ্য উপরে দেয়া হয়েছে। লেখকের বিয়ে নিয়ে একটা মজার ঘটনা হলো-
লেখকের বাবা ভবিষ্যত বলার বিষয় নিয়ে খুব উৎসাহিত ছিলেন, তাই ম্যাগনিফাইং গ্লাস ও নানা রকম বই থাকতো বাড়িতে।যেহেতু বাড়িতে বই পত্র আছে তাই লেখকরা সকল ভাই বোন কম বেশি হাত দেখতে শিখে গেছেন। ভার্সিটি তে উঠতে উঠতে লেখকের খুব নামডাক হয়ে গিয়েছিল হাত দেখার জন্য।তাই তিনি প্রত্যেকের হাত দেখার জন্য এক প্যাকেট গোল্ড ফ্ল্যাক সিগারেট নির্ধারন করে দিয়েছিলেন।মোটা মুটি সবাই এক প্যাকেট সিগারেট নিয়ে এসে হাত দেখিয়েছিল। শুধু একটা মেয়েই বাকি ছিল যে কিনা ক্লাসে সবার থেকে আধুনিকা।সেও একদিন গোল্ড ফ্ল্যাক সিগারেট নিয়ে হাত দেখাতে চলে আসলো । লেখক তাকে বলেছিল, অনেক ধনীর সাথে তাঁর বিয়ে হবে।কিছুদিন পরেই লেখকের সঙ্গে তার (ইয়াসমিন হক)বিয়ে হয়।বিয়ের রাতে লেখকের সহধর্মিনী লেখকের শার্টের কলার ধরে বলেছিল,,,”আমার নাকি খুব বড় লোকের সাথে বিয়ে হবে?”বিয়ের খরচের জন্য লেখক তার সহধর্মিনীর থেকেই কিছু টাকা ধার করেছিলেন। এরপর থেকে লেখক আর হাত দেখেননি কারো।
জাফর ইকবাল সাহিত্য
জাফর ইকবাল বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই লেখালেখি করেন। তার প্রথম বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীমূলক গল্প কপোট্রনিক ভালোবাসা সাপ্তাহিক বিচিত্রায় প্রকাশিত হয়েছিল। গল্পটি পড়ে একজন পাঠক দাবি করেন সেটি বিদেশি গল্প থেকে চুরি করা। এর উত্তর হিসেবে তিনি একই ধরনের বেশ কয়েকটি বিচিত্রার পরপর কয়েকটি সংখ্যায় লিখে পাঠান।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] তার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে এই গল্পগুলো নিয়ে কপোট্রনিক সুখ-দুঃখ নামে একটি বই প্রকাশিত হয়। এই বইটি পড়ে শহীদ-জননী জাহানারা ইমাম প্রশংসা করেন। আমেরিকাতে বসেই তিনি বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী রচনা করেন। দেশে ফিরে এসেও তিনি নিয়মিত বিজ্ঞান-কল্পকাহিনী লিখে যাচ্ছেন, প্রতি বইমেলাতে তার নতুন সায়েন্স ফিকশন বা বিজ্ঞান কল্পকাহিনী প্রকাশিত হয়।
তিনি দৈনিক প্রথম আলো, দৈনিক কালের কন্ঠ সহ একাধিক পত্রিকায়সাদাসিধে কথা নামে নিয়মিত কলাম লিখে থাকেন। তার লেখা কলামগুলোর বিষয়বস্তু হচ্ছে রাজনীতি এবং দেশের সমসাময়িক ঘটনা। বেশকিছু দিন উনি প্রিয়.কম-এ কলাম লিখেছেন।
বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড গড়ে তোলার পিছনে তার অবদান রয়েছে। গণিত শিক্ষার উপর তিনি ও অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ বেশ কয়েকটি বই রচনা করেছেন। এর মাঝে “নিউরনে অনুরণন” ও “নিউরনে আবারো অনুরণন” বই দুটি উল্লেখযোগ্য।
জাফর ইকবাল পুরস্কার ও সম্মাননা
- বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ২০০৪;
- শ্রেষ্ঠ নাট্যকার হিসেবে২০০৫ সালে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার
- কাজী মাহবুবুল্লা জেবুন্নেছা পদক, ২০০২;
- খালেদা চৌধুরি সাহিত্য পদক, বাংলা ১৪১০;
- শেলটেক সাহিত্য পদক ২০০৩
- ইউরো শিশুসাহিত্য পদক ২০০৪
- মোহা. মুদাব্বর-হুসনে আরা সাহিত্য পদক ২০০৫
- মার্কেন্টাইল ব্যাংক সম্মাননা পদক ২০০৫
- আমেরিকা অ্যালুমনি এ্যসোসিয়েশন পদক ২০০৫
- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালুমনি এ্যাসোসিয়েশন পদক ‘০৫।
- ২০১৩ সালেআমার বন্ধু রাশেদ চলচ্চিত্র এর শ্রেষ্ঠ কাহিনীকার এর জন্য ৩৬তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (বাংলাদেশ) পান।
- জাতীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পুরস্কারআজীবন সম্মাননা।
জাফর ইকবাল উপন্যাস
- আকাশ বাড়িয়ে দাও (১৯৮৭)
- বিবর্ণ তুষার (১৯৯৩)
- দুঃস্বপ্নের দ্বিতীয় প্রহর (১৯৯৪)
- কাচসমুদ্র(১৯৯৯)
- সবুজ ভেলভেট (২০০৩)
- ক্যাম্প (২০০৪)
- মহব্বত আলীর একদিন (২০০৬)
- হটলাইন (২০১৯)
- প্রজেক্ট আকাশলীন (২০২০)
জাফর ইকবাল ছোট গল্প
- একজন দুর্বল মানুষ (১৯৯২)
- ছেলেমানুষী (১৯৯৩)
- নুরূল ও তার নোটবই (১৯৯৬)
- মধ্যরাত্রিতে তিন দুর্ভাগা তরুণ (২০০৪)
জাফর ইকবাল বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
কপোট্রনিক সুখ দুঃখ (১৯৭৬) | সায়রা সায়েন্টিস্ট (২০০৩) |
মহাকাশে মহাত্রাস (১৯৭৭) | ফিনিক্স (২০০৩) |
ক্রুগো (১৯৮৮) | সুহানের স্বপ্ন (২০০৪) |
ট্রাইটন একটি গ্রহের নাম (১৯৮৮) | অবনীল (২০০৪) |
বিজ্ঞানী সফদর আলীর মহা মহা আবিষ্কার (১৯৯২) | নায়ীরা (২০০৫) |
ওমিক্রমিক রূপান্তর (১৯৯২) | বিজ্ঞানী অনিক লুম্বা (২০০৫) |
টুকুনজিল (১৯৯৩) | রুহান রুহান (২০০৬) |
যারা বায়োবট (১৯৯৩) | জলমানব (২০০৭) |
নি:সঙ্গ গ্রহচারী (১৯৯৪) | অন্ধকারের গ্রহ (২০০৮) |
ক্রোমিয়াম অরণ্য (১৯৯৫) | অক্টোপাসের চোখ (২০০৯) |
ত্রিনিটি রাশিমালা (১৯৯৫) | ইকারাস (২০০৯) |
নয় নয় শূন্য তিন (১৯৯৬) | রবোনিশি (২০১০) |
অনুরণ গোলক (১৯৯৬) | প্রডিজি (২০১১) |
টুকি ও ঝায়ের (প্রায়) দুঃসাহসিক অভিযান (১৯৯৭) | কেপলার টুটুবি (২০১২) |
পৃ (১৯৯৭) | ব্ল্যাক হোলের বাচ্চা (২০১৩) |
রবো নগরী (১৯৯৭) | এনিম্যান (২০১৪) |
একজন অতিমানবী (১৯৯৮) | এখন তখন মানিক রতন (২০১৪) |
সিস্টেম এডিফাস (১৯৯৮) | সেরিনা (২০১৫) |
মেতসিস (১৯৯৯) | ক্রেনিয়াল (২০১৬) |
ইরন (২০০০) | তিতুনি এবং তিতুনি (২০১৬) |
জলজ (২০০০) | রিটিন (২০১৭) |
শাহনাজ ও ক্যাপ্টেন ডাবলু (২০০০) | ত্রাতিনা (২০১৮) |
ফোবিয়ানের যাত্রী (২০০১) | নিয়ান (২০১৯) |
প্রজেক্ট নেবুলা (২০০১) | গ্লিনা(২০২০) |
ত্রাতুলের জগৎ (২০০২) | প্রজেক্ট আকাশলীন (২০২০) |
বেজি (২০০২) | বন বালিকা (২০২১) |
জাফর ইকবাল কিশোর উপন্যাস
হাতকাটা রবিন-(১৯৭৬) | লাবু এল শহরে(২০০৭) |
দীপু নাম্বার টু (উপন্যাস)-(১৯৮৪) (চলচ্চিত্র রূপ, ১৯৯৬) | বৃষ্টির ঠিকানা(২০০৭) |
দুষ্টু ছেলের দল-(১৯৮৬) | নাট বল্টু (২০০৮) |
আমার বন্ধু রাশেদ(১৯৯৪) (চলচ্চিত্র রূপ, ২০১১) | মেয়েটির নাম নারীনা(২০০৯) |
টি-রেক্সের সন্ধানে(১৯৯৪) | রাশা (২০১০) |
স্কুলের নাম পথচারী(১৯৯৫) | আঁখি এবং আমরা ক’জন (২০১১) |
জারুল চৌধুরীর মানিকজোড়(১৯৯৫) | দলের নাম ব্ল্যাক ড্রাগন (২০১১) |
রাজু ও আগুনালির ভুত(১৯৯৬) | রাতুলের রাত রাতুলের দিন (২০১২) |
বকুলাপ্পু(১৯৯৭) | রূপ-রূপালী (২০১২) |
বুবুনের বাবা(১৯৯৮) | ইস্টিশন (২০১৩) |
বাচ্চা ভয়ংকর কাচ্চা ভয়ংকর(১৯৯৮) | গাব্বু (২০১৩) |
নিতু ও তার বন্ধুরা(১৯৯৯) | টুনটুনি ও ছোটচাচ্চু (২০১৪) |
মেকু কাহিনী(২০০০) | গ্রামের নাম কাঁকনডুবি (২০১৪) |
শান্তা পরিবার(২০০২) | আরো টুনটুনি ও আরো ছোটাচ্চু (২০১৫) |
কাজলের দিনরাত্রি(২০০২) | আবারো টুনটুনি ও আবারো ছোটাচ্চু (২০১৭) |
কাবিল কোহকাফী(২০০৩) | তবুও টুনটুনি তবুও ছোটাচ্চু (২০১৮) |
দস্যি ক’জন(২০০৪) | সাইক্লোন(২০১৮) |
আমি তপু(২০০৫) | তখন টুনটুনি যখন ছোটাচ্চু (২০১৯) |
লিটু বৃত্তান্ত(২০০৬) |
জাফর ইকবাল কিশোর গল্প
- আমড়া ও ক্র্যাব নেবুলা-(১৯৯৬)
- আধুনিক ঈশপের গল্প-(১৯৯৬)
- তিন্নি ও বন্যা-(১৯৯৮)
জাফর ইকবাল শিশুতোষ
- বুগাবুগা-(২০০১)
- সাগরের যত খেলনা-(২০০২)
- রতন-(২০০৮)
- ঘাস ফড়িং-(২০০৮)
- হাকাহাকি ডাকাডাকি-(২০০৮)
- ভূতের বাচ্চা কটকটি-(২০১১)
- বাপ্পার বন্ধু – (২০১৪)
- ইঁদুর এবং দুষ্ট হাতি – (২০১৬)
- ভূতের বাচ্চা সোলায়মান – (২০১৭)
- বড় হবে ঝিলমিল-(২০১৮)
জাফর ইকবাল ভ্রমণ ও স্মৃতিচারণ
- দেশের বাইরে দেশ-(১৯৯৭)
- আমেরিকা-(১৯৯৭)
- সঙ্গি সাথী পশু পাখি-(১৯৯৩)
- আধ ডজন স্কুল-(১৯৯৬)
- তোমাদের প্রশ্ন আমার উত্তর-(২০০৪)
- রঙিন চশমা-(২০০৭)
- আরো প্রশ্ন আরো উত্তর-(২০১২)
জাফর ইকবাল বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ক
দেখা আলো না দেখা রূপ (১৯৮৬) | গণিতের মজা মজার গণিত (২০০৭) |
বিজ্ঞানের একশ মজার খেলা (১৯৯৪) | থিওরি অফ রিলেটিভিটি (২০০৮) |
নিউরণে অনুরণন (২০০২) | কোয়ান্টাম মেকানিক্স (২০০৯) |
নিউরণে আবারো অনুরণন (২০০৩) | আরো একটু খানি বিজ্ঞান (২০১০) |
গণিত এবং আরও গণিত (২০০৩) | সহজ ক্যালকুলাস (২০১৭) |
আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াড: প্রশ্ন ও উত্তর (২০০৪) | বিগ ব্যাং থেকে হোমো স্যাপিয়েনস (২০১৮) |
একটু খানি বিজ্ঞান (২০০৭) |
জাফর ইকবাল কলাম সংকলন
দেশের বাইরে দেশ-(১৯৯৩) | স্বপ্নের দেশ ও অন্যান্য-(২০০৯) |
সাদাসিধে কথা-(১৯৯৫) | ঢাকা নামের শহর ও অন্যান্য-(২০১০) |
নিঃসঙ্গ বচন-(১৯৯৮) | এক টুকরো লাল সবুজ কাপড়-(২০১১) |
প্রিয় গগন ও অন্যান্য-(১৯৯৯) | বদনখানি মলিন হলে-(২০১২) |
হিমঘরে ঘুম ও অন্যান্য-(২০০০) | রাজনীতি নিয়ে ভাবনা ও অন্যান্য-(২০১৩) |
পৃথিবীর সৌন্দর্য এবং আলফ্রেড সরেন-(২০০১) | মিথ্যা বলার অধিকার ও অন্যান্য-(২০১৪) |
২০৩০ সালের একদিন ও অন্যান্য-(২০০২) | একজন সাদাসিধে মা এবং অন্যান্য-(২০১৫) |
দুঃস্বপ্নের রাত এবং দুর্ভাবনার দিন-(২০০৩) | যখনি জাগিবে তুমি-(২০১৬) |
এখনো স্বপ্ন দেখায়-(২০০৪) | তারুণ্যের এপিঠ-ওপিঠ-(২০১৭) |
ক্রসফায়ার এবং অন্যান্য-(২০০৫) | অনলাইন জীবন ও অন্যান্য-(২০১৮) |
আরো একটি বিজয় চাই-(২০০৬) | ভালোবাসা এবং অন্যান্য (২০১৯) |
ভবদহের গল্প এবং অন্যান্য-(২০০৭) | বাংলাদেশের মেয়ে বাংলাদেশের নারী ও অন্যান্য (২০২০) |
বৈশাখের হাহাকার ও অন্যান্য-(২০০৮) | মানুষ মানুষের জন্য এবং অন্যান্য (২০২১) |
জাফর ইকবাল ভৌতিক সাহিত্য
- প্রেত-(১৯৮৩)
- পিশাচিনী-(১৯৯২)
- নিশিকন্যা-(২০০৩)
- ছায়ালীন-(২০০৬)
- ও-(২০০৮)
- দানব-(২০০৯)
- অন্যজীবন-(২০১৬)
- সকশো
জাফর ইকবাল টিভি নাটক
- ফসিল
- প্রেত
- গেস্ট হাউস
- ঘাস ফড়িঙের স্বপ্ন
- শান্তা পরিবার
- একটি সুন্দর সকাল
- লিরিক
জাফর ইকবাল রেডিও নাটক
- শুকনো ফুল রঙ্গিন ফুল, (২০১১)। সহায়তায়ইউনিসেফ
জাফর ইকবাল মুক্তিযুদ্ধ
- মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-(২০০৯)
- ছোটদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-(২০০৯)
ড. জাফর ইকবালের উপর জঙ্গি হামলা
৩ মার্চ, ২০১৮ জনপ্রিয় শিশু সাহিত্যিক মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপর জঙ্গি হামলা করা হয়। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রোবটিক প্রতিযোগিতার সমাপনী অনুষ্ঠান চলাকালে, বিকাল ৫ টা ৪০ মিনিটে তাঁকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে ফয়জুর রহমান নামে এক ছেলে তাঁকে ছুরিকাঘাত করে। এর আগে বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠী তাঁকে হত্যার হুমকি দেয়। ২০১৩ সালে শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চে মুক্তিযোদ্ধের মানবতাবিরোধী অপরাধী জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাসির দাবিতে তিনি সোচ্চার ছিলেন। এই সময় আনসারুল্লাহ বাংলা টিম তাঁকে নিয়ে হিট লিস্ট করে বলে শোনা যায়। ২০১৫ সালের ৩ মে তাঁকে আবার হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এরপর বিভিন্ন সময়, কাফনের কাপড় পাঠিয়ে বা ফোনে হত্যার হুমকি দেয়া দেয়। মুলত তাঁর লেখা ‘ভুতের বাচ্চা সোলায়মান’ প্রকাশিত হবার পর থেকেই বিভিন্ন ইসলামী গোষ্ঠী তাঁর বিরুদ্ধচারণ শুরু করেন। বইটি প্রথমে নাটক হিসেবে প্রচারিত হয় এনটিভিতে। তারপর ২০১৭ সালের, বইমেলায় নাটকের স্ক্রিপ্টটি বই আকারে প্রকাশিত হয়। ‘ভূতের বাচ্চা সোলায়মান’ একটি শিশুতোষ কল্পকাহিনী। বইটির নাম নিয়েই আসল সমস্যা দেখা দেয়। একশ্রেনীর মতে, এখানে লেখক ইচ্ছাকৃতভাবে ইসলাম ধর্মের নবী সোলায়মান (আঃ)কে ব্যঙ্গ করেছেন। অনেকে বইটি নিষিদ্ধের কথাও বলেন। যদিও বইটি নিছক বাচ্চাদের জন্য লিখিত গল্প।