বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম আলোচিত উপন্যাস ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’। ১৯৪০ সালে প্রকাশিত এ উপন্যাসের প্রধান চরিত্র হাজারি ঠাকুর। মধ্যবয়সী বাঙালি ব্রাহ্মণ, পেশায় রাঁধুনি। হাজারি ঠাকুরের বর্ণনা দিতে গিয়ে বিভূতিভূষণ লিখেছেন, ‘লোকটার বয়স পঁয়তাল্লিশ-ছেচল্লিশ, একহারা চেহারা, রং কালো। দেখিলে মনে হয় লোকটা নিপাট ভালোমানুষ।’ বেচু চক্কত্তির খাবারের হোটেলে মাসে ৭ টাকা মাইনেতে কাজ করে হাজারি। আর স্বপ্ন দেখে—একদিন তার নিজের একটা হোটেল হবে। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে হাজারি ঠাকুরের সফল উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প বলেছেন বিভূতিভূষণ। এ চরিত্রে এবার দেখা যাবে মোশাররফ করিমকে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ওটিটিপ্লে গতকাল জানিয়েছে, আদর্শ হিন্দু হোটেল অবলম্বনে একটি সিরিজ নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে। ক্যামেলিয়া প্রোডাকশনের ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য তৈরি সিরিজটি পরিচালনা করবেন অরিন্দম শীল। আদর্শ হিন্দু হোটেলের হাজারি ঠাকুর চরিত্রে পরিচালক বেছে নিয়েছেন মোশাররফ করিমকে। এ মাসেই সিরিজটির শুটিং শুরু হওয়ার কথা ছিল। পুজোয় নির্মাতা অরিন্দমের নতুন সিনেমা ‘জঙ্গলে মিতিন মাসি’ মুক্তি পাচ্ছে। সেটা নিয়ে ব্যস্ত আছেন তিনি। তাই সিরিজের শুটিং পিছিয়ে আগামী বছরের জানুয়ারিতে নেওয়া হয়েছে।
আদর্শ হিন্দু হোটেল উপন্যাসের আরেক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র পদ্ম। হাজারি ঠাকুরের মতোই বেচু চক্কত্তির খাবারের হোটেলে কাজ করে পদ্ম। হোটেলের ঝি হলেও ষোলো আনা ক্ষমতা তার হাতে। মালিক বেচু তাকে ভরসা করে। অনেকটা তার কথামতোই চলে হোটেল। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে পদ্ম নানা সময় হোটেলের খাবার চুরি করে। মালপত্র সরায়। হাজারি ঠাকুরকে সে ঈর্ষা করে, নানা অপবাদ দেয়। সিরিজে এ চরিত্রে অভিনয় করবেন অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। এ ছাড়া বেচু চক্কত্তির চরিত্রে দেখা যাবে দেবশংকর হালদারকে।
আদর্শ হিন্দু হোটেল উপন্যাস নিয়ে আগেও সিনেমা হয়েছে। তৈরি হয়েছে ধারাবাহিক নাটক। ১৯৫৭ সালে এ উপন্যাস নিয়ে সিনেমা বানান পরিচালক অর্ধেন্দু সেন। এতে হাজারি ঠাকুর হয়েছিলেন ধীরাজ ভট্টাচার্য। আরও ছিলেন ছবি বিশ্বাস, জহর গাঙ্গুলি, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, তুলসী চক্রবর্তী, জহর রায়, অনুপ কুমার, সন্ধ্যা রানী প্রমুখ। এর কয়েক বছর পর দূরদর্শনের জন্য একই নামে তৈরি হয় ধারাবাহিক নাটক। তাতে হাজারি ঠাকুরের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মনোজ মিত্র।