চার দশকের ক্যারিয়ার আমির খানের। বলিউডের মাসালা সিনেমার ভিড়ে খানিকটা অন্য ধরনের কাজের কথা উঠলেই আসে তাঁর নাম। নিজের কাজ নিয়ে এতটাই খুঁতখুঁতে থাকেন যে আমিরের আরেক নাম হয়ে গেছে মিস্টার পারফেকশনিস্ট। তবে তাঁর এই সাফল্যের পালে বেশ বড়সড় ধাক্কা লাগে ‘লাল সিং চাড্ডা’র সময়।
এ সিনেমার ব্যর্থতার পর অভিনয়ই ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন আমির। তবে পরিবার ও কাছের মানুষদের অনুরোধে ফিরেছেন আবার। ফিরেই হাতে নিয়েছেন একটি-দুটি নয়, ছয়টি সিনেমা। আমিরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে এত সিনেমায় একসঙ্গে যুক্ত হওয়ার ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি।
হলিউড রিপোর্টার ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আমির বলেন, ‘এত সিনেমা একসঙ্গে নেওয়ার বিশেষ কারণ আছে। যখন সিদ্ধান্ত নিলাম, ঠিক আছে, এখনই অভিনয় ছাড়ব না, আরও কিছুদিন করব। এরপরই যে চিন্তাটা মাথায় এল, তা হলো, আর কত বছর কর্মক্ষম থাকতে পারব? হয়তো সর্বোচ্চ আর ১০ বছর কাজ করে যেতে পারব।’
আমির খান। ছবি: সংগৃহীত
আমির যখন এমন কথা বলছিলেন, পাশেই ছিলেন তাঁর সাবেক স্ত্রী কিরণ রাও। আমিরকে থামিয়ে দিলেন তিনি। কয়েকজন অভিনেতার উদাহরণ দিলেন, যারা ৯৯ বছর পেরিয়েও দিব্যি কাজ করছেন।
আমির সেগুলোকে ব্যতিক্রম বলে ফিরে এলেন নিজের কথায়, ‘জীবনের তো কোনো ভরসা নেই। আমি কালও মারা যেতে পারি। সে জন্য, আমার ভাবনা হচ্ছে, বড়জোর আর ১০টা বছর আমি সুস্থ-সবলভাবে অভিনয় করে যেতে পারব। এখন আমার ৫৯ চলছে। আশা করা যায়, ৭০ বছর বয়স পর্যন্ত কর্মক্ষম থাকতে পারব। এ কারণেই ভেবেছি, জীবনের শেষ ১০টা বছর আমি সবচেয়ে বেশি কাজ করব। লেখক, পরিচালক, অভিনেতা— অনেক নতুন প্রতিভা তুলে আনতে চাই। ৭০ বছর বয়সে অবসর নেওয়ার আগে, নতুনদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠতে চাই আমি। সে কারণে, অনেক সিনেমা হাতে নিচ্ছি।’
২০২২ সালে যখন আমির অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, প্রথম আপত্তি এসেছিল পরিবার থেকেই। স্ত্রী বলেছিলেন, ‘সারা দিন বাসায় বসে থাকবে, কিছুই করবে না—এটা কি তুমি নিজেও ভাবতে পারছ?’ মেয়ে বলেছিলেন, ‘প্লিজ পাপা, সারাক্ষণ তুমি আমাদের সঙ্গে বাসায় থাকতে পারবে না। আমরা পাগল হয়ে যাব।’ হলিউড রিপোর্টারের সাক্ষাৎকারে এ কথা জানিয়ে হাসতে হাসতে আমির বললেন, ‘অবসর জীবনটা আমার ভালোই লাগবে। বই পড়ব, ইয়োগা করব।’