ঈদ নিয়ে মাতামাতি শুরু হয়ে গেছে চারিদিকে। ঈদে দর্শকদের বিনোদনের জন্য কী কী করা যায়, তা নিয়ে সিনেমা হল, টিভি চ্যানেলগুলো শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততায় দিন পার করেছে। পিছিয়ে নেই দেশীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিও।
বিশেষ দিবসে চরকির আয়োজন থাকে চোখে পড়ার মতো। আর বড় ঈদে বড় আয়োজন চরকির থাকবে না, তা কি হয়? এই ঈদু ফিতরে চরকি তার দর্শকদের জন্য নিয়ে আসছে চমকের পর চমক। ‘এলো মুভির ঈদ’-এ যা যা থাকছে চলুন জেনে নেওয়া যাক এক নজরে।
ফ্লোর নম্বর ৭
ঈদে মুক্তি পেতে যাচ্ছে রায়হান রাফি পরিচালিত স্বপ্ন নিবেদিত চরকি অরিজিনাল সিনেমা ‘ফ্লোর নম্বর ৭’। বুবলি, তমা মির্জার সঙ্গে নবাগত নায়ক রাজ মানিয়েকে দেখতে পারবে দর্শক। রাজের এটি প্রথম অভিনয় হলেও দেশীয় বেশ কিছু ব্র্যান্ডের মডেলিং করে তিনি বেশ পরিচিত মুখ।
ফ্লোর নম্বর ৭ সিনেমায় বিশেষ চমক নিয়ে হাজির হচ্ছেন শাহরিয়ার নাজিম জয়। সেই সঙ্গে সুমন আনোয়ারসহ আরও অনেককেই দেখা যাবে সিনেমাটিতে।
বুবলি তাঁর নতুন সিনেমা নিয়ে বলেন, ‘চরকি হচ্ছে সেই ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে আমার প্রথমবার কাজ করা। আর আমার প্রথম কাজটার নাম ‘টান’। তো সেই টানটাই সব সময় চরকির প্রতি আমার থাকবে। আর এই মুভিটা দিয়ে অডিয়েন্স আমাকে যেভাবে পেয়েছে, যে ভালোবাসা দিয়েছে, তা আমার জন্য লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট। চরকি সামনে আরও দারুণ কনটেন্ট দর্শকদের জন্য উপহার আনুক। আপাতত ‘এলো মুভির ঈদ’-এ আপনারা ৭ নম্বর ফ্লোর দেখে ফেলুন।’
তমা মির্জা বলেন, ‘৭ নাম্বার ফ্লোর আমার আরেকটা প্রিয় কাজ হতে যাচ্ছে। খাঁচার ভেতর অচিন পাখির মধ্য দিয়ে দর্শক আমাকে নতুনভাবে চিনতে পেরেছিল। আর এই সিনেমাটার মধ্য দিয়ে আরেকটা পাখিকে দেখবে দর্শক। ৭ নম্বর ফ্লোর আপনারা দেখুন আর আমাদের জানাবেন কেমন লাগল আপনাদের।’
প্রথম সিনেমাতেই বুবলি ও তমার বিপরীতে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল তা জানিয়ে রাজ মানিয়া বলেন, ‘প্রথম থেকেই খুব নার্ভাস ছিলাম আমি। জীবনে প্রথম অভিনয়, তা-ও সিনেমায় পুরো বিষয়টা আমার জন্য একটু অন্যরকম ছিল। পরিচালক রাফি ভাইয়ের ওপর ভরসা থেকেই কাজটা করা। তিনি আমার ওপর বিশ্বাস করেছেন। আর বাকিটা দর্শকের ওপর ছেড়ে দিলাম।’
পরিচালক রায়হান রাফি বলেন, ‘চরকির সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা সব সময় আনন্দের। ঈদ আয়োজনে চরকিতে আমার নির্মিত সিনেমা দর্শক দেখতে পারবে ভেবেই ভালো লাগছে। আপনারা চরকি সাবস্ক্রাইব করুন। লিগ্যাল ওয়েতে আমাদের সিনেমা দেখুন, উপভোগ করুন ‘৭ নাম্বার ফ্লোর।’
ঈদের ৭টি সিনেমা
এই ঈদে এক্সক্লুসিভলি চরকি সাতটি সিনেমা আনছে তার দর্শকদের জন্য। অগ্নি, আশিকী-ট্রু লাভ, রোমিও জুলিয়েট, দেশা-দ্য লিডার, হিরো ৪২০, অঙ্গার ও ভালোবাসা আজকাল। এই সিনেমাগুলো ঈদের পরদিন থেকে চলবে চরকিতে। ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে প্রতিদিন একটি করে সিনেমা মুক্তি পাবে।
ট্র্যাভেল শো: ঘুর ঘুর ঘূর্ণি
চরকির ঈদ আয়োজনে এই প্রথম কোনো ট্র্যাভেল শো দেখতে যাচ্ছে চরকির দর্শক। তুরস্কের বিভিন্ন জায়গা সম্পর্কে অনেক জানা-অজানা গল্প নিয়ে তৈরি এই ট্র্যাভেল সিরিজ, যেখানে হোস্ট হিসেবে থাকবেন জনপ্রিয় ব্লগার জুটি শেহ্ওয়ার ও মারিয়া। ২৫ এপ্রিল মুক্তি পেয়েছে এই ট্র্যাভেল শোর প্রথম দুটি পর্ব।
চরকির ঈদ আয়োজনের ‘এলো মুভির ঈদ’-এ শেহ্ওয়ার-মারিয়া তাঁদের নিজস্ব স্টাইলে তুরস্ক ঘুরিয়ে দেখাবেন দর্শকদের, যেখানে তুরস্কর তিনটি বিখ্যাত শহরে ঘুরতে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে বিভিন্ন ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া এই দম্পতির মজার খেলা, স্থানীয় লোকদের সঙ্গে নানা গল্প, অভিজ্ঞতা, অ্যাডভেঞ্চারের মধ্য দিয়ে তুরস্ককে নতুনভাবে দেখবে দর্শক। এই ট্রাভেল সিরিজে ‘ঘুর ঘুর ঘূর্ণি উইথ শেহ্ওয়ার অ্যান্ড মারিয়া’।
ছয় পর্বের এই সিরিজ রিলিজ হবে দুটি এপিসোড করে তিন ধাপে। ২৫ ও ২৮ এপ্রিল এবং ২ মে রাত ৮টা থেকে চরকির পর্দায় দেখা যাবে।
শেহ্ওয়ার হোসেন ও মারিয়া হোসেন ২০২০ সালে বিয়ে করেন। শেহ্ওয়ার বাঙালি, মারিয়া রোমানিয়ার মেয়ে। তাঁরা থাকেন যুক্তরাজ্যে। শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানিয়ে শেহ্ওয়ার বলেন, ‘অনেক বিষয়ের ভিডিও বানাই আমরা। কিন্তু এবার তুরস্কে দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। এটা ছিল আমাদের প্রথম তুরস্ক ভ্রমণ। বিখ্যাত কিছু জায়গায় ঘুরেছি আমরা। সিলেকটিভ কিছু জায়গা বেছে নিয়ে শুটিং করেছি। এর মধ্যে অনেক অপ্রত্যাশিত ঘটনা রয়েছে, যেমন আমাদের মান-অভিমান, মন খারাপের মুহূর্তও। প্রতিটি মুহূর্তই দর্শককে আনন্দ দেবে।’
মারিয়া বেশ ভালো বাংলা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি কিন্তু বাংলায় কথা বলতে পারি। আমার বাংলা ভালো লাগে।’
ইংরেজি ও বাংলায় কাজের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে মারিয়া হোসেন বলেন, ‘আমরা যখন তুরস্কে শুটিংয়ে যাই, তখন কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলাম। ইস্তাম্বুলে নামার পর অনেকেই আমাদের ঠকিয়েছে। সে সময় অনেক বাংলাদেশির সঙ্গে পরিচয় হয়েছে, যাঁরা চিনতে না পারলেও আমাদের সহায়তা করেছেন। তাঁদের আতিথেয়তায় আমরা মুগ্ধ। দেশের কোনো প্ল্যাটফর্মে এ ধরনের শো এটাই প্রথম জেনে আমরা খুশি। আমরা চরকির কাছে কৃতজ্ঞ। দারুণ একটি টিমের সঙ্গে কাজ করেছি।’
সত্যজিৎ স্পেশাল
বাংলা সিনেমার অন্যতম দিকপাল ও পথিকৃৎ সত্যজিৎ রায়। বাংলা সিনেমায় যাঁর অবদান অনস্বীকার্য। ১৯২১ সালের ২ মে কলকাতায় বিশিষ্ট ছড়াবিদ সুকুমার রায় ও সুপ্রভা দেবীর ঘরে জন্ম নেন তিনি। একাধারে তিনি নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, শিল্প নির্দেশক, সংগীত পরিচালক ও লেখক।
মহান এই ব্যক্তির জন্মদিন উপলক্ষে চরকিতে মে মাসজুড়ে মোট আটটি সিনেমা সাজানো হয়েছে ‘সত্যজিৎ স্পেশাল’। ঈদের মধ্যেই তাঁর জন্মদিনে, অর্থাৎ ২ মে মুক্তি পাবে ‘হীরক রাজার দেশে’। এরপর ৯ মে দর্শক দেখতে পারবে ‘অশনি সংকেত’ ও ‘সোনার কেল্লা’।
তারপর ধীরে ধীরে মুক্তি পাবে ‘পথের পাঁচালি’, ‘অপরাজিত’, ‘অভিজান’, ‘চিড়িয়াখানা’ ও ‘জলসাঘর’।