খাজাবাবা খাজাবাবা, মারহাবা মারহাবার গীতিকার বাউলশিল্পী আবুল সরকারের মৃত্যু
বিনোদন

খাজাবাবা খাজাবাবা, মারহাবা মারহাবার গীতিকার বাউলশিল্পী আবুল সরকারের মৃত্যু

দেশবরেণ্য বাউলশিল্পী আবুল সরকার (বয়াতি) মারা গেছেন। বার্ধক্য ও অসুস্থতাজনিত কারণে গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় নিজ বাড়িতে মারা গেছেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। রাত সাড়ে ১২টায় স্থানীয় ফতুল্লা পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
 
তাঁর মৃত্যুর সংবাদটি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ বাউল সমিতি ঢাকা বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বাউল শিল্পী কল্যাণ পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ বাঁধন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আবুল সরকার ছিলেন একজন সুফি বাউল। তবে শরিয়তকে গুরুত্ব দিয়ে বাউল সংগীত পরিবেশন করতেন। বাউল জগতে তিনি ছিলেন অনন্য নক্ষত্র। তাঁর মৃত্যুতে বাউলরা অভিভাবক হারিয়েছে।’

বাউল আবুল সরকারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম। তিনি তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘খাজাবাবা খাজাবাবা মারহাবা মারহাবা। চলে গেলেন এমন অসংখ্য জনপ্রিয় গানের লেখক এবং জনপ্রিয় বাউলশিল্পী বড় আবুল সরকার। আত্মার শান্তি কামনা করছি।’
 
 ১৯৫৪ সালের ৭ মার্চ মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানার সুরদিয়া গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সরদার বংশে জন্ম নেন তিনি। শিশুকাল থেকেই তিনি লেখাপড়ায় উৎসাহী ছিলেন এবং বাউল গান খুবই পছন্দ করতেন। গ্রামের বাড়ি কুরুটিয়া হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত সময়ে তিনি ঢাকার শ্যামপুরে খালার বাড়িতে চলে যান। ওই সময় সেখানকার বাসিন্দা প্রখ্যাত পালা শিল্পী হাজি মো. সাহাব উদ্দিন বয়াতির দলভুক্ত হন। এরপর ওস্তাদের আদেশে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনের জন্য যাত্রাবাড়ী হাইস্কুলে তিনি ভর্তি হন। পাশাপাশি সংগীত শিক্ষা অর্জন করতে ওস্তাদের নির্দেশেই ১৯৭৩ সালে ভর্তি হন ওয়াইজঘাট বুলবুল ললিতকলা একাডেমিতে।

ওস্তাদ সাহাব উদ্দিন বয়াতির কাছে দীর্ঘ সময় বাউল গান এবং পালা গানের তালিম ও দীক্ষা নেন আবুল সরকার। এরপর ওস্তাদের আদেশেই ১৯৭৮ সালে নিজ দল গঠন করে বাউল সংগীত পরিবেশন শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে সারা দেশে বাউল শিল্পীদের সঙ্গে ঘুরে বেড়িয়ে গান করতে করতে তার বাউল শিল্পী হয়ে ওঠা। দেশের বাইরে বিভিন্ন দেশে গিয়ে বাউল সংগীত পরিবেশন করে তিনি বেশ সুনাম অর্জন করেন। বাউলশিল্পী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবেও তাঁর বেশ পরিচিতি রয়েছে। মূলত ‘কবি গানের সরকার’ উপাধি লাভ করে তিনি আবুল সরকার নামে পরিচিতি অর্জন করেন।
 
বাউলশিল্পী আবুল সরকার (বয়াতি) ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ বেতারের শিল্পী হিসেবে এবং ১৯৯০ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের শিল্পী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তাঁর কণ্ঠে গাওয়া পালা গানের এক হাজারের অধিক অডিও সিডি ও ভিসিডি বের হয়।

Source link

Related posts

কন্যার মা হলেন বিপাশা বসু

News Desk

অ্যাম্বারের দেওয়া ১০ লাখ ডলার অসুস্থ শিশুদের জন্য দান করলেন জনি ডেপ

News Desk

নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকীকে গ্রেপ্তারের দাবি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের

News Desk

Leave a Comment