তার বড়ভাই আব্দুল হাই ছিলেন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী। সেই সূত্রে ছোটবেলা থেকেই শিল্পকলার প্রতি আগ্রহ ছিল তার। স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে ভাইয়ের পথ অনুসরণ করে তিনিও পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায়। ছবি আঁকতে জানতেন, গান করতে জানতেন, অভিনয়টাও পারতেন। কিন্তু একসময় সব অঙ্গন ছাড়িয়ে কৌতুক অভিনেতা হিসেবেই বিখ্যাত হয়ে গেলেন আব্দুস সামাদ। দর্শকদের কাছে যিনি ‘টেলি সামাদ’ নামে তুমুল জনপ্রিয়।
২০১৯ সালের আজকের এই দিনে ৭৪ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বাংলা সিনেমার ‘হাসির রাজা’ খ্যাত এ কৌতুক অভিনেতা। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। আজ তার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী।
এদেশের অভিনয়ের আঙিনায় অত্যন্ত রুচিশীল, মার্জিত, ভদ্র, বিনয়ী স্বভাবের একজন অভিনেতা হিসেবে পরিচিতি রয়েছে তার। একজন উচ্চশিক্ষিত তারকা হিসেবেও সবার শ্রদ্ধা অর্জন করে নিয়েছিলেন তিনি। অভিনয় ছিল তার ধ্যানজ্ঞান। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে প্রতিনিয়তই কৌতুক অভিনয়ের প্র্যাকটিস করতেন।
চারুকলার সেই আব্দুস সামাদ কীভাবে হয়ে উঠলেন টেলি সামাদ? নামের আগে ‘টেলি’ শব্দটি কেন ব্যবহার করতেন এই অভিনেতা? গল্পটা বেশ কৌতুহলউদ্দীপক। স্বাধীনতার পরপর সময়টাতে টেলিভিশনে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন টেলি সামাদ। চলচ্চিত্রে তার অভিনয় মুগ্ধ করেছে দর্শক। সবখানেই তখন তাকে নিয়ে আলোচনা। অনেকদিন পরে ভালো একজন কমেডি অভিনেতা পাওয়া গেছে। হঠাৎ একদিন বিটিভি থেকে একটি অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র পেলেন তিনি। সেই অনুষ্ঠানটিই বদলে দিল তার নাম।
তখন দেশের একমাত্র টেলিভিশন ছিল বিটিভি। দুর্দান্ত সব অনুষ্ঠানের কারণে চ্যানেলের জনপ্রিয়তাও ছিল ব্যাপক। তাই আমন্ত্রণ পেয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করেননি আব্দুস সামাদ। সেই অনুষ্ঠানেই বিটিভির ক্যামেরাম্যান মোস্তফা মামুন বললেন, ‘সামাদ শোন, আজ থেকে তোর নাম টেলি সামাদ।’ সেই থেকেই আব্দুস সামাদ হয়ে গেলেন ‘টেলি সামাদ’। এই নামেই তিনি দেশব্যাপী পেয়েছিলেন আকাশছোঁয়া খ্যাতি।