ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই পদে আসতে প্রার্থিতার ফরম জমা দিয়েছেন ২৫৪ জন। এর মধ্যে সভাপতি পদপ্রত্যাশী রয়েছেন ৯৬ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫৮ জন। সংগঠনটির আগামী ৬ ডিসেম্বরের ৩০তম জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে পদ দুটিতে কে কে আসছেন, সেদিকে এখন কৌতুহলী চোখ অনেকের। এ অবস্থায় সবচেয়ে আলোচনায় আছেন কারা?
আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ছাত্রলীগের এবারের নেতৃত্ব বাছাইয়ে যোগ্যতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্ব পাবে সাংগঠনিক দক্ষতা, কাজের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও নেতৃত্বের যোগ্যতা, মেধাবী ও ছাত্র হওয়া এবং আওয়ামী পরিবারের হওয়া। এর সঙ্গে অতীতের আন্দোলন-সংগ্রামে ভূমিকা, নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা, বয়সের সীমারেখা এবং বিরোধী মতাদর্শের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, সেসব বিষয়ে রয়েছে। এ ছাড়া একাধিক জরিপের ফলাফল তো থাকবেই।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে জমা পড়া ফরমগুলো আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের কাছে পাঠানো হয়েছে। ফরমে উল্লেখ করা তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে সংক্ষিপ্ত একটি তালিকা তৈরি করবেন আওয়ামী লীগের চার নেতা। তারা সেটি ছাত্রলীগের অভিভাবক আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে পাঠাবেন। তার পরামর্শেই চূড়ান্ত হবে নতুন নেতৃত্ব।
আওয়ামী লীগের ওই চার নেতা হলেন— প্রেসিডিয়ামের সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং বি এম মোজাম্মেল হক।
ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব নিয়ে জানতে চাইলে বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচনে সাহসী নেতৃত্ব, সততা, ছাত্রত্ব, মেধা, দক্ষতা, নেতৃত্বের সক্ষমতা, বিতর্কমুক্ত— এসব গুণের দিকে বিশেষ নজর থাকবে।’
শীর্ষ দুই পদের একটিতে ঢাকা বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে কাউকে বেছে নেওয়া হতে পারে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেরাদের সেরাকে বেছে নেওয়া হবে এবারের ছাত্রলীগের নেতৃত্ব হিসেবে। এ ক্ষেত্রে ঢাকা বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে তেমন কাউকে পাওয়া গেলে, আসতে পারে নেতৃত্বে। ছাত্রলীগ একটি বৃহৎ ও আদর্শিক ছাত্র সংগঠন। তাই সবকিছুই বিবেচনায় নিয়ে নতুন কমিটি করা হবে।’
গত ৩০ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ফরম সংগ্রহ এবং জমা সময় নির্ধারিত ছিল। এর মধ্যে সভাপতি পদে ৯৬ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫৮ জন ফরম জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সম্মেলনের নির্বাচন কমিশনার শামস-ই-নোমান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেকে কেবল সভাপতি পদে ফরম জমা দিয়েছেন। অনেকে সাধারণ সম্পাদক পদে ফরম জমা দিয়েছেন। আবার কেউবা উভয় পদেই ফরম জমা দেন। শীর্ষ এই দুই পদে ফরম জমা দেওয়াদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছাড়াও দেশের অন্যান্য প্রান্তের শিক্ষার্থীও রয়েছেন। শীর্ষ দুটি পদের একটি এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাইরে থেকে আসতে পারে বলে গুঞ্জন থাকায় এমনটি ঘটেছে।