সবুজ শিবিরের তারকা প্রার্থী যদি জনগণের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন কোভিড পরিস্থিতিতে লাল শিবিরের শরণাপন্ন হতে হবে তা নিয়ে আলোচনা হবে বৈকি! আর এবার এরকমই একটি বিপাকে জড়ালেন পরিচালক ও বারাকপুর বিধানসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী রাজ চক্রবর্তী। গত ২২ এপ্রিল পর্যন্ত বারাকপুরে নিজের কেন্দ্রে রোদের প্রখর তেজ ও গরম উপেক্ষা করে মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঘুরে প্রচার করেছেন তিনি। অন্যদিকে স্ত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলী এখন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় গৃহবন্দী অবস্থায় নিভৃতবাসে আছেন। তাই বাড়িতে থেকেই ছেলে ইউভানের দেখাশোনা করছেন রাজ।
এরই মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি পোস্টের জেরে নেটিজেনদের কটাক্ষের শিকার হতে হল রাজ চক্রবর্তীকে। যুব সিপিএম বাহিনীর তৈরি ‘রেড ভলেন্টিয়ার্স’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কলকাতার ও হাওড়াতে কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সাধারণ মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের এলাকাতে দায়িত্ব ভাগ করে ৮৩ জন তরুণ-তরুণী কাজ করছে এই সংগঠনে। তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের নম্বর দিয়ে রবিবার একটি তালিকা প্রকাশ করেছে ডিওয়াইএফআই।
রাজ চক্রবর্তী নিজে তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে নিজের সোশ্যাল সাইটে লিখেছিলেন, “হাওড়ার মধ্যে কারোর অক্সিজেন সিলিন্ডার, রক্ত, হসপিটালের বেড, পানীয় জল, ওষুধ, অ্যাম্বুল্যান্স, আরও যে কোনও রকমের দরকারে রেড ভলেন্টিয়ার্সের এমারজেন্সি ” অর্থাৎ কোভিড সংক্রান্ত সমস্যায় রেড ভলেন্টিয়ার্স এর শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই তিনি সেই পোস্টটি ডিলিট করে দেন। কিন্তু ততক্ষণে রাজের সেই পোস্ট স্ক্রিনশট হয়ে ভাইরাল হয়ে যায়। আর তারপর থেকেই ওঠে সোশ্যাল মিডিয়াতে ট্রোলের ঝড়। তারকা তথা তৃণমূলের প্রার্থী হয়েও কোভিড পরিস্থিতিতে লাল পতাকার শরণাপন্ন হতে হচ্ছে তাঁকে,এই নিয়ে নানা মন্তব্য শুনতে হয়েছে তাঁকে আজ সকাল থেকে।
আবার অন্যদিকে, নেটিজেনদের কটাক্ষের শিকার হলো অভিনেত্রী তথা তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান। সোমবারই সপরিবারে ভোট দিয়েছেন নুসরত। বাড়িতে বসে রিলাক্স মুডে ‘ওম্যানস্ ভয়েজ’ নামে একটি বই পড়ার ছবি তিনি শেয়ার করলেন তাঁর সোশ্যাল সাইটে। দেশ এবং রাজ্য জুড়ে যখন করোনা পরিস্থিতি এরকম ভয়াবহ, তখন একজন সাংসদকে এতো ক্যাসুয়াল মুডে দেখে তাঁর দায়িত্ব জ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন তুললেন নেটিজেনরা। বই পড়া ছেড়ে এখন সাধারণ মানুষের জন্য অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করা, ওষুধের ব্যবস্থা করা এগুলোই একজন সাংসদ হিসেবে তাঁর কাছ থেকে কাম্য ছিল।
কয়েকদিন আগেই ট্রাফিক জ্যামে গাড়িতে বসে বোর হয়ে রিল করে তিনি একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন তাঁর সোশ্যাল সাইটে। তখনও অভিনেত্রী এবং সাংসদের কর্মক্ষেত্রে এবং সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালনে সততা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। নেটিজেনদের একটাই প্রশ্ন গ্ল্যামার জগৎ থেকে এসে বারবার যাঁরা বলেছেন, মানুষের জন্য কাজ করতে চান, তাঁরা ভোট মিটে গেলেই কেন নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে এতটা উদাসীন হয়ে পড়েন। আদৌ কি এনাদের বিশ্বাস করা যায়।