সারা দেশে চলছে এক সপ্তাহের কড়া বিধিনিষেধ। বিধিনিষেধ শুরুর আগেই নিয়ম অনুযায়ী ছোট পর্দার সব সংগঠন ঘোষণা করে, তারা কোনো ধরনের শ্যুটিং করবে না। তবে বিধিনিষেধের মধ্যেও কিছু পরিচালক ও কলাকুশলীরা শ্যুটিং করেছেন। পরিচালকদের মধ্যে রয়েছেন সালাহউদ্দিন লাভলু, ফরিদুল হাসান, শহীদুন্নবী, প্রযোজক সাজু মুনতাসিরসহ আরও কয়েকজন। এতে অভিনয় করেছেন তারকা শিল্পীরা।
লকডাউনে শ্যুটিং করা প্রসঙ্গে বর্ষীয়ান অভিনেতা ও প্রযোজক ড. ইনামুল হক বলেন, ‘চারদিকে প্রতিদিন যেভাবে আক্রান্তের কথা শুনছি তাতে ঘর থেকে বেরোতেই তো ভয় লাগে। তার মধ্যে শ্যুটিং করা কীভাবে সম্ভব আমি জানি না। তাছাড়া সরকার বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছে। তার মানে হলো কোনোরকম জনসমাগম করা যাবে না। এর মধ্যে শ্যুটিং করা খুবই রিস্কি। যারা করছেন তারা কী মনে করে করছেন আমি জানি না।’
জানতে চাইলে ছোট পর্দার নির্মাতাদের সংগঠনের সভাপতি সালাহউদ্দিন লাভলু বলেন, ‘আমরা ছোট পর্দার সব সংগঠন মিলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে কোনো শ্যুটিং করা যাবে না। তবে এটাও ঠিক, গত একটা বছর আমরা অনেক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছি। বিশেষ করে যারা ক্যামেরার পেছনে কলাকুশলী, তারা দিন আনে দিন খায়। তাদের কথা বিবেচনা করে এবং যে নাটকের শ্যুটিং অল্পের জন্য আটকে আছে তারটা করতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে অবশ্যই করতে হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে। তাছাড়া কোনো শিল্পী কাজ করতে না চাইলে কোনোরকম জোর করা যাবে না।’
এমন পরিস্থিতিতে আন্তঃসংগঠনের সিদ্ধান্তে শ্যুটিং করা কতটা সমীচীন এ বিষয়ে লাভলু বলেন, ‘দেখুন আমরাও সব জানি। তবে সর্বাত্মক লকডাউন মানে তো কারফিউয়ের মতো পুরো দেশ স্থবির করে দেওয়া। সেটা কিন্তু হচ্ছে না। তাই জরুরি ভিত্তিতে শ্যুটিং করাটাকে দোষের কিছু দেখছি না।’
তবে বিষয়টির সঙ্গে একমত নন অনেকেই। একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বিধিনিষেধের জন্য আমরা অনেক শ্যুটিং পিছিয়েছি। কিন্তু কেউ কেউ ঠিকই কাজ করছে। এতে অনেক সমস্যা হতে পারে। এ শ্যুটিং থেকে কতজন আক্রান্ত হবে তা জানা যাবে আরও কিছুদিন পর। তার প্রভাব আরও নেতিবাচকভাবে পড়বে ঈদের নাটকের ওপর।’
অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা বলেন, ‘আমি কিছুতেই লকডাউনের মধ্যে কাজ করার পক্ষপাতী নই। ১৬, ১৭ এপ্রিল মাসুদ সেজানের নাটকের শিডিউল ছিল আমার। কিন্তু তা পিছিয়েছি। এমন অনেক কাজ পিছিয়ে দিয়েছি। অথচ অনেকে একটা সপ্তাহের নিষেধ মানতে পারছে না! এটা সত্যিই অদ্ভুত। এক সপ্তাহ কাজ না করে খেয়ে-পরে বেঁচে থাকা যায় না সেটা আমি বিশ্বাস করি না। জীবনের চেয়ে টাকার মর্ম কি বেশি?’
লকডাউনে শ্যুটিং করেছেন নির্মাতা ফরিদুল হাসান। তিনি বলেন, ‘আমি গত ১০ এপ্রিল ঢাকার বাইরে দুটি নাটকের কাজ নিয়ে যাই। এক দিনের কাজ বাকি থাকতেই বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।