আফগান নারী নির্মাতা শাহরবানু সাদাত প্রাণ ভয়ে পরিবার নিয়ে কাবুল ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। এক একটা দিন কাটছে দুঃস্বপ্নের মতো। হলিউড রিপোর্টারে দেয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তার উৎকণ্ঠার কথা।
আফগানিস্তানের সবচেয়ে জনপ্রিয় নির্মাতাদের একজন শাহরবানু সাদাত। ২০১৬ সালে পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন এবং প্রভাবশালী কান চলচ্চিত্র উৎসবে ‘উলফ অ্যান্ড শিপ’ ছবির জন্য ‘ডিরেক্টরর্স ফোর্টনাইট’ পুরস্কার জিতেছিলেন তিনি। তিন বছর পরে ‘দ্য অরফানেজ’-এর জন্য আবারও ‘ডিরেক্টরর্স ফোর্টনাইট’ পুরস্কার জিতেছিলেন শাহরবানু সাদাত।
হলিউড রিপোর্টারকে নির্মাতা জানিয়েছেন, তিনি এখন অপেক্ষায় আছেন এয়ারপোর্ট খোলার। বিমান চালু হলেই তিনি দেশ ছাড়বেন পরিবার নিয়ে। তিনি বলেন, ‘সমস্যা হলো এয়ারপোর্টে কীভাবে যাব আর কীভাবে বিমান পর্যন্ত পৌঁছব। এয়ারপোর্টের প্রথম চেকপয়েন্ট তালেবানদের দখলে। পুরো এয়ারপোর্টে জুড়ে আরও অনেকগুলো চেকপয়েন্ট আছে।
শাহরবানু জানান, বিশ্বের নানা যায়গায় তার বন্ধুরা আছেন। সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করছেন। এত দ্রুত এমন ঘটনা ঘটে যাবে তা কল্পনাও করেননি নির্মাতা। তিনি বলেন, ‘চমকে যাওয়ার মতো বিষয়। এত দ্রুত সব হবে তা ভাবতেও পারিনি। অন্তত একটা মাস পাওয়া যেত।’
নির্মাতা জানান, তিনি দেশ ছাড়ার আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। কিন্তু সেটা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। কারণ পরিবারসহ যাওয়ার অনুমতি পাননি তিনি।
পরিস্থিতির ভয়াবহতা সম্পর্কে ধারণা দেয়ার জন্য নির্মাতা জানান, বাড়ির কাছে এক ব্যাংকে গিয়ে তিনি দেখেছেন, পাঁচ থেকে দশ জন গ্রাহকের বদলে পাঁচশ মানুষ টাকা তোলার চেষ্টা করছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে ব্যাংক থেকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় বের করে দেয়া হচ্ছে গ্রাহকদের। বাইরে দাঁড়িয়ে আছে তালেবানদের গাড়ি। গাড়িতে তাদের পতাকা লাগানো।
শাহরবানু আরও বলেন, ‘আমি যদি এই যাত্রায় বেঁচে যাই, তাহলে এই ঘটনাগুলো নিয়ে সিনেমা তৈরি করবো। আমার সিনেমা বদলে যাবে চিরদিনের জন্য। আমার নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। বাঁচতে পারলে এখন যা দেখছি সেগুলো সিনেমায় তুলে ধরতে পারবো, পৃথিবীকে জানাতে পারবো।’
নির্মাতার মতে, তালেবানদের এই উত্থানের প্রভাব নারীদের ওপর পড়বেই। সিনেমাও থেমে যাবে।