কিংবদন্তি গীতিকার, সুরকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার মারা গেছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। রাজধানীর বনানী কবরস্থানে আগামীকাল সোমবার সমাহিত হবেন এই কিংবদন্তি—এমন সিদ্ধান্তই জানিয়েছে তাঁর পরিবার। তাঁর ছেলে সারফরাজ আনোয়ার জানান, গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে তাঁর মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে।
গাজী মাজহারুল আনোয়ারের দুই সন্তান—উপল ও দিঠি। শেষ বিদায়ে ছেলে উপল থাকলেও যুক্তরাষ্ট্রে আছেন কন্যা গায়িকা দিঠি। সেই কন্যার অপেক্ষাতেই আছে গাজী পরিবার। গীতিকারের ভাগনে অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় জানান, গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মরদেহ ইউনাইটেড হাসপাতালে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই দিঠির জন্য অপেক্ষা করছি। আমেরিকা থেকে আজই ওর বাংলাদেশে আসার কথা। আমরা আশা করছি, সন্ধ্যা বা রাতের মধ্যে দিঠি ঢাকায় নামতে পারবে। ও আসার পরই বাকি সিদ্ধান্তগুলো চূড়ান্ত হবে।’
এর আগে রবিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টা ৩০ মিনিটের দিকে মৃত্যু হয় কিংবদন্তি গাজী মাজহারুল আনোয়ারের। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে নিজ বাসার বাথরুমে জ্ঞান হারান তিনি। চিকিৎসকেরা ধারণা করছেন, তিনি স্ট্রোক করেছেন।
গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ছেলে উপল বলেন, ‘বাবা গত দুই দিন ধরে শারীরিকভাবে খানিক অসুস্থ ছিলেন। তবে সেটি উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না। বার্ধক্যজনিত কিছু ছোট জটিলতা। আমরা গতকাল তাঁকে ডাক্তারের কাছেও নিয়ে যাই। রক্ত পরীক্ষা করানো হয়েছিল। আজ সকালে আল্ট্রাসাউন্ড করার কথা ছিল খালি পেটে। সাড়ে ৬টার দিকে ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে যান। সেখানেই মাথা ঘুরে পড়ে যান এবং জ্ঞান হারান। দ্রুত ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাই। চিকিৎসকরা চেষ্টা করেন জ্ঞান ফেরাতে। কিন্তু পারলেন না।’
গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। অসংখ্য কালজয়ী গানের রচয়িতা গাজী মাজহারুল আনোয়ার। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান লিখেছেন। ২০ হাজারেরও বেশি গানের রচয়িতা তিনি।
সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদান রাখায় ২০২১ সালে দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা স্বাধীনতা পদক পান গাজী মাজহারুল আনোয়ার।