রাস্তায় নামাজ পড়লেই কড়া শাস্তি। ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা পাসপোর্ট বাতিলও হতে পারে। সপ্তাহখানিক আগে এমন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে ভারতের উত্তরপ্রদেশে। মিরাট পুলিশের এসপি আয়ুষ বিক্রম সিং জানিয়েছেন, ঈদগাহ ও মসজিদ ছাড়া কেউ কোথাও নামাজ পড়তে পারবে না। রাস্তায় নামাজ পড়লে কঠোর শাস্তি পেতে হবে। পাসপোর্ট কিংবা ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে।
এমনকি এবারের ঈদুল ফিতরের নামাজের ক্ষেত্রেও কড়া নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে উত্তর প্রদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে। ড্রোন ও সিসিটিভি দিয়ে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে পুলিশ। উত্তরপ্রদেশের এ সিদ্ধান্ত ভালোভাবে নেননি অনেকেই। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিনোদন অঙ্গনের তারকাদের কেউ এ নিয়ে মুখ না খুললেও সরব হয়েছেন ভারতীয় কমেডিয়ান ও র্যাপার মুনাওয়ার ফারুকী।
মুনাওয়ার ফারুকী প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আধঘণ্টার নামাজের জন্য এই শাস্তি? এবার থেকে কি ভারতের রাস্তাঘাটে আর কোনো উৎসব উদ্যাপন করা হবে না?’ মুনাওয়ারের এমন পোস্টে সরগরম নেটপাড়া। বিভিন্ন ধর্মালম্বী মানুষ সমর্থন জানিয়েছেন তাঁকে। পুলিশের এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছেন মুনাওয়ার। ইনস্টাগ্রামে এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘বৈচিত্রময় উৎসবের জন্যই ভারত এত সুন্দর! জন্মাষ্টমীর সময় সারা শহর জেগে ওঠে। মানুষজন রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে। মিছিল হয়। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই এ উৎসবকে সহযোগিতা করে।’
মুনাওয়ার আরও বলেন, ‘হামিদিয়া মসজিদের ঠিক পাশেই বাম্বা দেবীর মন্দির আছে। আরতি ও নামাজ একই রাস্তায় হয়। আমরা ছোটবেলা থেকেই এসব দেখে আসছি। আমি মিরাট পুলিশকে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানাই। সমস্ত রাজনৈতিক সমাবেশ রাস্তায় হয়, যখনই কোনো ভিআইপি যায়, রাস্তা অবরুদ্ধ থাকে। ভারতীয় নাগরিকদের রাস্তায় তাদের উৎসব উদ্যাপন করার অধিকার আছে।’
কমেডিয়ান ও র্যাপার মুনাওয়ার ফারুকী। ছবি: সংগৃহীত
মুনাওয়ার জানান, কেউ ইচ্ছা করে রাস্তায় নামাজ পড়ে না। তিনি বলেন, ‘মানুষ মসজিদেই নামাজ পড়ে। কিন্তু ঈদ ও জুম্মার দিন যেহেতু অনেক লোক মসজিদে আসে, তাই রাস্তায় ব্যবস্থা করা হয়। এটা কিছু সময়ের ব্যাপার। মানুষ যুগ যুগ ধরে এটা করে আসছে, তাদের এটা করতে দিন।’