দুই দিনব্যাপী নৃত্যনাট্য পরিবেশনার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। আজ সোমবার থেকে শুরু হওয়া এ উৎসব শেষ হবে আগামীকাল মঙ্গলবার। সন্ধ্যা ৬টা থেকে একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের ব্যবস্থাপনায় পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক সোহাইলা আফসানা ইকো।
আজকের পরিবেশনায় ছিল—মুরাদ জামান খানের পরিচালনায় চিত্রাঙ্গদা, নাজমুল হক লেলিনের পরিচালনায় মহুয়া এবং সেলিনা হকের পরিচালনায় মঞ্চস্থ হয় সাধনায় মুক্তি।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা প্রথম পূর্ণাঙ্গ নৃত্যনাট্য ‘চিত্রাঙ্গদা’। মহাভারতের আদিপর্বে বর্ণিত অর্জুন ও চিত্রাঙ্গদার প্রণয়োপাখ্যান অবলম্বনে গড়ে উঠেছে এই নৃত্যনাট্যের নাট্য বস্তু। এ নাট্য অর্জুন ও চিত্রাঙ্গদার এক অপরূপ প্রেমের কাহিনি ফুটিয়ে তোলা হয়। নৃত্যটির নির্দেশনায় ছিলেন মুরাদ জামান খান এবং পরিবেশনায় ছিলেন নৃত্যাঙ্গন নৃত্যকলা একাডেমি। এতে অংশ গ্রহণ করেন ৩০ জন নৃত্যশিল্পী।
বিশ্বখ্যাত লোকগাথা ময়মনসিংহ-গীতিকার অমর উপাখ্যান গীতি নৃত্য-নাট্য ‘মহুয়া’ পালা চন্দ্র কুমার দে গৃহীত ও ড. দীনেশচন্দ্র সেন সম্পাদিত অপর প্রেম উপাখ্যান পালা কবি দ্বিজ কানাই রচিত একটি কালজয়ী ট্যাজেডিধর্মী গীতি উপাখ্যান। ১ ঘণ্টা ২৫ মিনিটের এই নৃত্যনাট্যটি সম্পাদনা করেন শহীদুল আলম লস্কর। নৃত্য পরিচালনা ও কোরিওগ্রাফিতে ছিলেন—নাজমুল হক লেলিন এবং পরিবেশনা করেন একাডেমি অব ফাইন আর্টস, ময়মনসিংহ। নৃত্যটির প্রধান মহুয়া চরিত্রে অভিনয় করেন তাসনুভা নিঝুম। ছোট মহুয়া চরিত্রে ছিলেন—মিসকাতুল নূর মৃধা এবং বয়াতি চরিত্রে অভিনয় করেন আবু রায়হান।
‘সাধনায় মুক্তি’ নৃত্যনাট্যটিতে দেখানো হয় প্রাচীন হিন্দু শাস্ত্রের ঐতিহাসিক বেশ কিছু বাস্তবিক দৃশ্যপট যেখানে শ্রী রাম কৃষ্ণ, মা সারদা, স্বামী বিবেকানন্দের, কালী, এবং অসুর বদের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি। এটি সর্বমোট ১১ পর্বে মঞ্চায়িত হয়। নৃত্যনাট্যটিতে কালী চরিত্রে অভিনয় করেন অপর্ণা হাই তন্দ্রা, রামকৃষ্ণ-মাহমুদুল রাব্বি, রানী রাশমনি-সেলিনা হক, সারদা (ছোট)-রূপ সঞ্চারী চর্যা, সারদা (বড়)-রূপশ্রী চক্রবর্তী, শিব-সুমন মাহমুদ সম্রাট, অসুর-সোহেল হোসাইন, হালদার-মেহেদী হাসান, স্বামী বিবেকানন্দ-শেখ রাসেল এবং বাইজী চরিত্রে অভিনয় করেন সায়মা হাবিবা অপূর্ব।
আগামীকাল সমাপনী দিনে পরিবেশিত হবে মানস করের পরিচালনায় ‘দেওয়ান ভাবনা’, ল্যাডলি মোহন মৈত্রের ‘বিদায় অভিশাপ’, কামরুল হাসান ফেরদৌসের ‘রোমিও জুলিয়েট’ এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিবেশনা।