অবশেষে পাওয়া গেল অনির্বাণ ভট্টাচার্যকে। পশ্চিমবঙ্গের এই অভিনেতা প্রশংসিত হয়েছেন গায়ক ও পরিচালক হিসেবেও। অন্যায়ের বিরুদ্ধেও সব সময় প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে পাওয়া গেছে অনির্বাণকে। তবে আর জি কর হাসপাতালে ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে যখন পশ্চিমবঙ্গে তুমুল আন্দোলন চলছিল, তখন মুখে কুলুট এঁটেছিলেন তিনি।
আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন অঙ্গনের শিল্পীরাও নেমে এসেছিলেন পথে। সোশ্যাল মিডিয়ায়ও জারি রেখেছিলেন তাঁদের প্রতিবাদ। তবে এসব দৃশ্যে হাজির ছিলেন না অনির্বাণ। তাঁকে নিয়ে তাই ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। হয়েছে ট্রোলিং।
সম্প্রতি এ নিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন অভিনেতা। জানালেন, ইচ্ছা করেই এসব থেকে দূরে ছিলেন। কারণ তাঁর মনে হয়েছে, শুধু বক্তব্য দিয়ে বা প্রতিবাদ করে সমাজ বদলানো যায় না।
অনির্বাণ ভট্টাচার্য। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
আনন্দবাজার পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অনির্বাণ বলেন, ‘প্রথমে আমারও মনে হতো, বক্তব্য দিয়ে হবে। বক্তব্য দিতাম। প্রতিবাদ করে গান করেছি। কোথাও কোনো তৃণমূলের নেতা নাট্য উৎসব বন্ধ করে দিয়েছে, তার বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছি। পরে আমি বুঝেছি, অনেক সময় ব্যয় করে, অনেকের সঙ্গে কথা বলে। এটা একটা ফেইলড এক্সারসাইজ অনেদিন ধরে চলছে। যদি তুমি চাও, তোমার সমাজটা যেমন আছে, তেমন থাকবে না। সমাজটা অন্যরকম হওয়া উচিত, তাহলে কাজ করতে হবে। পরিশ্রম। লেবার। বক্তব্য দিয়ে কিছু হবে না। শুধু প্রতিবাদ করে সমাজ বদলানো সম্ভব নয়।’
অনির্বাণ আরও বলেন, ‘মুশকিল হল, সারা পৃথিবীতে আমরা সকলেই বিরোধীকে মিস করছি। অল্টারনেটিভ পলিটিক্যাল গ্রুপকে। ফলে শিল্পীকে এসে প্রতিবাদ করতে হচ্ছে। বন্দুকটা আমাদের দিকে ঘুরে গেছে, কারণ যাঁদের কাজ করার কথা ছিল, তাঁরা করেননি। আমরা অন্য দশটা কাজ করতে করতে তার ফাঁকে মিছিলে হেঁটে প্রতিবাদ করে আসছি। সমাজের জন্য কাজ করতে গেলে হোলটাইমার হতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় গরম গরম বক্তৃতা দিয়ে মার্ক জাকারবার্গ লাভবান হবেন, গণমাধ্যম লাভবান হবে, সমাজের কিছু হবে না।’
এর আগে এনআরসি-সহ একাধিক ইস্যুতে অনির্বাণ গান বেঁধেছেন, বিজেপি বিরোধিতায় মঞ্চে ‘মেফিস্টো’র মতো নাটক করেছেন। সেই উদাহরণ দিয়ে অনির্বাণ বলেন, ‘আমরা একটা গান করেছিলাম, যেখানে ধর্মীয় হিংসার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ছিল। তাতে কি এক শতাংশও ধর্মীয় হিংসা কমেছে? কেন কমেনি? কারণ, গান করে ধর্মীয় হিংসা কমানো যায় না। তার জন্য কাজ করতে হয়।’