বুধবার দিবাগত রাতে সাইফ আলী খানের ওপর হামলার ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। গত শুক্রবার সকালে বান্দ্রা স্টেশন থেকে ওয়ারিশ আলী নামের একজনকে আটক করা হয়েছিল। দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। ওয়ারিশের স্ত্রী সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে জানিয়েছেন, সাইফের বাড়িতে তাঁর স্বামী গিয়েছিলেন বৃহস্পতিবার। ওয়ারিশ পেশায় কাঠমিস্ত্রি। সাইফের ম্যানেজার তাঁকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন ফার্নিচারের কাজ করানোর জন্য। কাজ শেষে তিনি ফিরেও আসেন। হামলার সঙ্গে ওয়ারিশের সম্পর্ক নেই, সেটা নিশ্চিত হয়েই পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দেয়।
এখনো ঘটনার কোনো সুরাহা না হলেও সাইফের ওপর এ হামলা বেশ কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ সবচেয়ে বেশি আশ্চর্য হয়েছে, ‘সদগুরু শরণ’ নামের যে অ্যাপার্টমেন্টে সাইফ-কারিনার বাস, সেখানকার ৯ থেকে ১২ তলা তাঁদের। কিন্তু সেখানে আলাদা কোনো সার্ভেল্যান্স ক্যামেরাই নেই। এক তদন্তকারী বলেই ফেলেছেন, ‘এটা আমরা ভাবতেই পারিনি’। আবাসনের যে সিসিটিভি রয়েছে, তার সব ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পুলিশের ২৫টি টিম গঠন করে হামলাকারীর খোঁজ চলছে।
এবার যে প্রশ্নগুলো উঠছে তা হলো, ঢোকা ও বেরনোর জন্য আক্রমণকারী লিফট ব্যবহার করেনি কেন? সেটা কি ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে? সে সাইফের বাড়ি রেকি করে গিয়েছিল, সে কথা কি সত্যি? চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সাইফের গলায়-পেটে-হাতে ও পিঠে আঘাত ছিল। মেরুদণ্ড থেকে মাত্র ২ মিলিমিটার দূরে ছিল গেঁথে থাকা ছুরির অংশ। তদন্তকারীদের একাংশের প্রশ্ন, হামলাকারী কীভাবে সাইফকে পেছন থেকে ছুরি মারার সুযোগ পেল? আরেকটি প্রশ্নও ভাবাচ্ছে পুলিশকে।
সাইফের ছোট ছেলে জেহের আয়া লিমা তদন্তকারীদের জানান, আহত অবস্থাতেই তৈমুরের ঘরে আক্রমণকারীকে আটকে রাখেন সাইফ আলী খান। তাকে আটকে রেখে সবাই দৌড়ে ১২ তলায় উঠে যান। এই চেঁচামেচিতে বাকিদের ঘুম ভেঙে যায়। কিন্তু নিচে নেমে দেখা যায়, সেই লোকটি পালিয়েছে।
সাইফ আলী খান। ছবি: সংগৃহীত
প্রশ্ন উঠেছে, আক্রমণকারীকে ১১তলায় তৈমুরের ঘরে ৩০ মিনিট আটকে রেখে সবাই টপ ফ্লোরে চলে গেলেন কেন? লোকটির পরিচয় কি কেউ জানতে চায়নি? পুলিশে কেন খবর দেওয়া হয়নি? আটকে রাখা সত্ত্বেও লোকটা কীভাবে পালাল? যে অটোচালক সাইফকে হাসপাতালে নিয়ে যান, তাঁকে কেন এখনো জেরা করা হয়নি? সত্যিই যদি বাড়িতে ফার্নিচারের কাজ হয়ে থাকে, তাহলে কি সেই দল কোনোভাবে রেকির সঙ্গে যুক্ত? এখনো কোনো প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার রাতে কারিনা কাপুর খানের বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ। সাইফের বয়ান নেওয়া হয়েছে কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়। বয়ানে কারিনা বলেছেন, ‘আমাদের ছোট ছেলে জেহকে হামলাকারীর হাত থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করছিল সাইফ। হামলাকারীর সঙ্গে তার হাতাহাতি হয়। অত্যন্ত আগ্রাসী ছিল সেই হামলাকারী। তবে আমরা কোনোমতে প্রাণ বাঁচিয়ে ১২ তলায় উঠে যাই।’