মারণ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৫৩ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন বি-টাউনে অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা ইরফান খান। ২৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার আজ জনপ্রিয় এই অভিনেতার মৃত্যুর একবছর পূর্ণ হল।
গতবছর ঠিক এই দিনে কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মুম্বইয়ের কোকিলাবেন হাসপাতালে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
তাঁর মৃত্যুর ঠিক একবছর পর বাবার স্মৃতিচারণায় ইরফান খানের বড় ছেলে বাবিল খান। এদিন সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের কাছে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমার জীবনের অনুপ্রেরণা আমার বাবা। প্রতিদিন আমি বাবাকে মিস করি। ভীষণ ভালোবাসি বাবা তোমায়।”
জানা গিয়েছে, মৃত্যুর দু মাস আগেও নাকি ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। কিন্তু শেষপর্যন্ত তা আর হল না। হঠাৎ করেই পৃথিবী ছাড়লেন তিনি।
চলতি বছর বাবিলের ওয়েব প্ল্যাটফর্মে ডেবিট করার কথা। অনুষ্কা শর্মার প্রযোজনায় ওয়েব স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ‘নেটফ্লিক্স’-এর জন্য তৈরি হচ্ছে ‘কালা’। সেই ছবিতেই অভিনয়ের ডেবিউ করবেন বাবিল খান। এই ছবিতে তৃপ্তি ডিমরি, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের মতো শিল্পীদের সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করবেন তিনি।
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে প্রয়াত অভিনেতার স্ত্রী সুতপা শিকদার জানিয়েছেন, ছেলে বাবিলের সঙ্গে সিনেমা করার ইচ্ছা ছিল ইরফানের। ছবিতে অভিনয় বা পরিচালনা কোনও একটা কাজ করার কথা ছিল তাঁর। যদিও শেষপর্যন্ত সেই ইচ্ছাটাই অধরাই থেকে গেল ইরফানের।
শুধু তাই নয়, বাবাকে নিয়ে নিয়মিত সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন বাবিল খান। যেন তাঁর বাবা সবসময় তার ছায়াসঙ্গী হয়ে আছে।
বিশ্ব চলচ্চিত্র জগত ইরফানের কাজ এবং শিল্পের অভাব বোধ করেন সে নিয়ে এক রত্তিও সন্দেহ নেই। কিন্তু তার বেটার হাফ সুতপা যে কতটা পরিমাণ তাকে মিস করেন তা বার বার ধরা দিয়েছে তার কথায়। সুতপা বলে উঠলেন, ‘আমাদের খুব বেশি কাছের বন্ধু ছিল না। সঙ্গী বলতে আমরা দুজন দুজনের। কাজ থেকে ফিরে আমরা একসঙ্গে সিনেমা দেখতাম, কত গল্প করতাম। তাই ওর এই চলে যাওয়াটা আমায় ভীষণ একা করে দিয়েছে’। সুতপা আজও অনুভব করেন সব কিছুই তাদের আগের মতই আছে। ইরফানও তার আশেপাশেই আছেন। শুধু শারীরিকভাবে উপস্থিত নেই।
লন্ডনের এক বিখ্যাত হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল ইরফানের। সুতপা জানিয়েছেন, ‘তার তো মারা যাওয়ার কোনও সম্ভাবনাই ছিল না ওই মুহুর্তে। কারণ ডাক্তার আমাদের বলেছিল আগের চেয়ে অনেক উন্নতি করছে ওর শারীরিক অবস্থা। সেই শুনে আমরা একটা হলি ডে প্ল্যানও সেরে রেখেছিলাম। কিন্তু তারপর হঠাৎ সব কেমন গুলিয়ে গেল’। ইরফান কখনই গোঁড়া মুসলিমবাদী ছিলেন না। তিনি এক ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেন। তাই তার স্ত্রীকে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করতে হয়নি।