বলিউড অভিনেত্রী ও মডেল বিপাশা বসু। ১৯৭৯ সালের আজকের এই দিনে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। হিন্দি চলচ্চিত্রের জন্য পরিচিত হলেও তিনি তামিল, তেলেগু, বাংলা ও ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। বিশেষ করে থ্রিলার ও হরর চলচ্চিত্রে কাজ করে তিনি বেশি প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
এই বাঙালি কন্যার জন্ম দিল্লিতে, কিন্তু বেড়ে উঠেছেন কলকাতাতেই। ১৯৯৬ সালে ‘ফোর্ড’স গোদ্রেজ সিন্থল সুপারমডেল’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন তিনি। এই প্রতিযোগিতায় জয়লাভের পর বিপাশা বসু ফোর্ড কোম্পানির আমন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে যান। সেখানে বিপাশা বসু ১৭ বছর বয়সেই সফলভাবে মডেলিংয়ের ওপর প্রশিক্ষণ নেন এবং মডেলিংয়ের মাধ্যমে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন।
মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করে বলিউড অভিনেতা অক্ষয় কুমারের হাত ধরে ‘আজনবি’ ছবি দিয়ে বলিউডে পা রাখেন বিপাশা। আব্বাস মুসতানের পরিচালনায় ২০০১ সালের ‘আজনবি’ চলচ্চিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেন তিনি। তাই এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি ‘শ্রেষ্ঠ নারী অভিষেক’ হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার জিতেছিলেন।
ক্যারিয়ারের যাত্রাপথ যে মসৃণ ছিল না বাঙালি কন্যা বিপাশা বসুর। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিঙ্কভিলাকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এমনও অনেক দিন গেছে, খাবার কেনার টাকা পর্যন্ত থাকত না তাঁর কাছে।’
২০০২ সালের হরর সিনেমা ‘রাজ’ এ প্রধান নারী চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। যার জন্য ফিল্মফেয়ারে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পান তিনি।
এরপর বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্র ‘জিসম’ (২০০৩), ‘নো এন্ট্রি’ (২০০৫) এবং ‘ধুম–২’ (২০০৬) তে তাঁর অসাধারণ অভিনয় দর্শকদের মন কাড়ে।
বিপাশা বসুর বাণিজ্যিকভাবে সফল চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘ড্রামা করপোরেট’ (২০০৬), কমেডি চলচ্চিত্র ‘ফির হেরা ফেরি’ (২০০৬) এবং ‘অল দ্য বেষ্ট: ফান বিগিন্স’ (২০০৯), অ্যাকশন থ্রিলার ‘রেস’ (২০০৮), এবং রোমান্টিক কমেডি ‘বাচনা এ হাসিনো’ (২০০৮)।
২০১০ এর দশকে তিনি তাঁর হরর চলচ্চিত্র ‘রাজ থ্রিডি (২০১২)’, ‘আত্মা (২০১৩)’, ‘Creature 3D ক্রিয়েচার থ্রিডি (২০১৪)’ ও ‘একা (২০১৫)’ অসাধারণ অভিনয় করে হরর চলচ্চিত্রের অন্যতম সেরা অভিনেত্রীর তকমা পান।
অভিনয় ক্যারিয়ারে প্রেম নিয়ে অনেকবার শিরোনাম হয়েছেন তিনি। ২০০২ সালে তাঁর মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র ‘রাজ’ এর সহ-অভিনেতা দিনো মারিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান। একের পর এক চলচ্চিত্রে অভিনয়ও করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বিচ্ছেদও হয়ে যায়। কিন্তু বিচ্ছেদের পর দুজনের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়ে যায়।
এরপর অভিনেতা জন এব্রাহামের সঙ্গে ‘জিসম’ চলচ্চিত্রে বিপাশার জুটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। অভিনয় সূত্রে আলাপ হওয়ার পর দুজনে ‘গুটিকতক’ চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছিলেন। তারপর তাঁদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রেমে রূপ নেয়। বলিউডের আলোচিত এই জুটি সম্মতিতেই বিচ্ছেদের পথ বেছে নিয়েছিলেন।
সম্পর্কে ইতি টানার পর বিপাশা এবং জন একে অপরের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেন বলে কানাঘুষা রয়েছে। ২০১১ সালে মুক্তি পেয়েছিল বিপাশার ‘দম মারো দম’ ছবিটি। এই ছবিতে বিপাশা বসুর সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন দক্ষিণি অভিনেতা রানা দগ্গুবতী। তাঁর সঙ্গেও প্রেমের গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল বিপাশার।
অবশেষে ২০১৬ সালে অভিনেতা কর্ণের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন অভিনেত্রী। ক্যারিয়ার সূত্রেই তাঁদের যোগাযোগ শুরু। ২০১৫ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় তাঁদের হরর ঘরানার ছবি ‘অ্যালোন’। এই ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন বিপাশা এবং কর্ণ। গত বছরের ১৬ আগস্ট নতুন অতিথি এসেছে তাঁদের পরিবারে। কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন বিপাশা বসু।