মহাজাগতিক প্রাণী এলিয়েন নিয়ে সারা বিশ্বে শোরগোল শুরু হয় ১৯৫০ সালের পরই। এরপর এদের নিয়ে নানা গল্প রটলো চারদিকে। সৃষ্টির অপার রহস্যের সঙ্গে সঙ্গে মানব সৃষ্ট নানা কর্মকাণ্ডও অনেক রহস্যের জন্ম দেয়। তেমনি আমেরিকার ‘এরিয়া ৫১’ ঘাটিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে এক রহস্য!এটি এমন একটি স্থান যা সম্পর্কে সঠিক কোনও ধারণা সাধারণ মানুষের কাছে নেই। তবে এ জায়গা নিয়ে মানুষের কৌতুহলেরও শেষ নেই। সাধারণ কোনও মানুষ আজ অবধি এই স্থানে প্রবেশ করেছে বলে দাবি করেনি। কেউ যদি প্রবেশ করে থাকে তাহলে সে সেখান থেকে আর ফিরে আসেননি।
এরিয়া ৫১ মূলত মার্কিন সামরিক বাহিনীর একটি সামরিক ঘাঁটি। যার আয়তন ২৬,০০০ বর্গকিলোমিটার। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে এবং লাস ভেগাস থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম রেকেল গ্রামের কাছে অবস্থিত। খুবই গোপনীয় এই সামরিক বিমান ঘাঁটি গ্রুম হ্রদের দক্ষিণ তীরে অবস্থিত। এরিয়া ৫১ নামের এই সামরিক ঘাঁটি এতটাই গোপনীয় যে, ২০১৩ সালের আগ পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর অস্তিত্ব অবধি স্বীকার করেনি। রাশিয়া এরিয়া ৫১ নিয়ে প্রশ্ন তুললে ২০১৩ সালের আগস্টে প্রথমবার আমেরিকার সরকার স্বীকার করে নেয় যে, এরিয়া ৫১ এর অস্তিত্ব। তারা স্বীকার করে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার দেশটির এক গোপন সামরিক পরীক্ষার স্থান হিসেবে ‘এরিয়া ৫১’ নামক জায়গাটি ব্যবহার করে।
২০১৩ সালের আগ পর্যন্ত এই স্থান সম্পর্কে কারো কোনো ধারণা ছিল না। ছিল না মানচিত্রে সুনির্দিষ্ট কোনো চিহ্ন, এমনকি রাস্তার কোনো নকশা। যার কারণে গুগল ম্যাপও ঠাঁই দিতে পারেনি গোপন সেই স্থানটিকে। এই স্থানকে গোপন করার জন্য মার্কিন সরকার এতোটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল যে কোনো সরকারি কাগজপত্র বা দলিলেও এ সম্পর্কে কোনো তথ্য রাখেনি তারা। নির্দিষ্ট বিমান ছাড়া আকাশসীমায় সামরিক বা বেসামরিক কোনো ধরনের বিমান প্রবেশের অনুমতি নেই। এই ঘাঁটি ‘নো ফ্লাইং জোন’ হিসেবে সরকারি ভাবে ঘোষিত। পাইলটেরা এই এলাকার আকাশকে ‘দি বক্স’ নামে সংজ্ঞায়িত করেন।
৫০ এর দশকের শুরুর দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য অপেক্ষাকৃত নিচু দিয়ে উড়ে যাওয়া বিমান পাঠাতো আমেরিকা। তবে সোভিয়েত বাহিনীর রাডারে সেগুলো ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকতো। অবশেষে ১৯৫৪ সালে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার এক গোপন প্রজেক্ট চালু করেন। এর লক্ষ ছিল এমন যুদ্ধবিমান বানানো যেগুলো অনেক উচ্চতা থেকেও শত্রুপক্ষের বিভিন্ন বিষয় নজরদারি করতে পারবে। আর আমেরিকা তা-ই করেছিল ইউটু স্পাই প্লেন (U-2 Spy Plane) দিয়ে। এই প্লেন গুলো চালানোর প্রশিক্ষণ ও এর পরীক্ষা -নিরীক্ষা চালানোর জন্য দরকার ছিল লোকালয় থেকে দূরবর্তী গোপন কোনো জায়গা।
শেষ পর্যন্ত নেভাদা মরুভূমির দক্ষিণে গ্রুম লেকের কাছাকাছি এলাকায় সন্ধান মেলে পছন্দনীয় সেই জায়গার। এই জায়গাটি আজ সকলের কাছে এরিয়া ৫১ নামে পরিচিত। ১৯৫৫ সালের জুলাই থেকে ইউটু স্পাই প্লেনের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন শুরু হয়। মজার ব্যাপার হলো এর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আমেরিকার বিভিন্ন জায়গা থেকে ইউএফও দেখতে পাওয়ার দাবি করতে শুরু করেন অনেকেই। কিন্তু ইউএফও দেখতে পাওয়ার দাবি করতে শুরু করা মানুষে অধিকাংশই ছিলেন বাণিজ্যিক বিমানের পাইলট। সেই সময় বিমান গুলো সাধারণত ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার ফুট উচ্চতা দিয়ে উড়তো। মিলিটারি বিমান গুলো উড়তো ৪০ হাজার ফুট উঁচু দিয়ে। অনেকেই ধারনা করতো যে মানুষের তৈরি বিমান এতো বেশি উঁচু দিয়ে উড়তে পারে না আর ঠিক সেই জায়গাতেই লেগে গেলো গোলমাল!
কারণ ইউটু প্লেনটি উড়ে যেত ৬০ হাজার ফুটেরও বেশি উচ্চতা দিয়ে। ব্যস এখানেই মানুষের মনে ঢুকে গেলো অবিশ্বাস। কেউ কেউ বলা শুরু করে দিলো এটা মানুষের বানানো হতে পারে না। এটা অবশ্যই এলিয়েনদের বানানো কোনো ইউএফও। বিমান বাহিনীর শীর্ষকর্তারা অবশ্য জানতেন যে ইউএফও দাবি করা জিনিস গুলো আসলে তাদের গোপন প্রজেক্টের ইউটু স্পাই প্লেন। কিন্তু এই সত্যটা জনসম্মুখে বলা নিষেধ ছিল। কারণ এটি ছিল একটি টপ সিক্রেট প্রজেক্ট। ফলে লোকমুখে ছড়াতে থাকে ইউএফও দেখতে পাওয়ার ভিত্তিহীন দাবি।
২০১৩ সালের ১৮ই আগস্ট CIA রিপোর্টে এরিয়া ৫১ সম্পর্কে নথি প্রকাশের আগ পর্যন্ত আমেরিকান সরকার এরিয়াটি সম্পর্কে কোনো নথি বা তথ্য প্রকাশ করেনি। এখানে বর্তমানে ঠিক কোন বিষয় নিয়ে গবেষণা চলছে তা জানার কোনো উপায়ও নেই। তবে খোঁজ নিলে বড়জোর বলা হবে এ ঘাঁটিতে বিভিন্ন এয়ার ক্রাফট ও অস্ত্র ব্যবস্থা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়। শুরু থেকেই গোপনীয়তার দুর্ভেদ্য চাদরে মোড়ানো এরিয়া ৫১-কে নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে দিনের পর দিন। এরিয়া ৫১ এ যে আসলে কি আছে সেই সম্পর্কে মানুষের ধারণা বেশ কম। এই কম ধারণা থেকেই পরবর্তীতে জন্ম নিয়েছে নানা কল্পনার শাখা-প্রশাখা।
কেউ কেউ বলেন এরিয়া ৫১ এর মাটির নিচে নাকি বিশাল বাঙ্কার গড়ে তুলেছেন মার্কিন সরকার আর সেখানেও রয়েছে প্রযুক্তির অত্যাধুনিক বিমানের আনাগোনা। বিমানগুলো সেখানে লুকিয়ে রাখা হয় যাতে করে স্যাটেলাইটের মাধ্যমেও কেউ সেগুলোর খোঁজ না পায়। কারো মতে বাঙ্কারগুলো নাকি ৪০ তলা ভবনের সমান উঁচু। কেউ কেউ বলেন এলিয়েনদের স্পেস ক্রাফটগুলো নাকি পাহাড়ের নিচে লুকিয়ে রাখা হয়। সেই বাঙ্কারের প্রবেশ পথে রয়েছে বিশাল দরজা যার ডিজাইন আশে পাশের মাটির মতোই করা। ফলে দূর থেকে দেখে একে পাহাড়ের অংশই ভাববে যে কেউ।
৫০ এর দশকের শুরুর দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য অপেক্ষাকৃত নিচু দিয়ে উড়ে যাওয়া বিমান পাঠাতো আমেরিকা। তবে সোভিয়েত বাহিনীর রাডারে সেগুলো ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকতো। অবশেষে ১৯৫৪ সালে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার এক গোপন প্রজেক্ট চালু করেন। এর লক্ষ ছিল এমন যুদ্ধবিমান বানানো যেগুলো অনেক উচ্চতা থেকেও শত্রুপক্ষের বিভিন্ন বিষয় নজরদারি করতে পারবে। আর আমেরিকা তা-ই করেছিল ইউটু স্পাই প্লেন (U-2 Spy Plane) দিয়ে। এই প্লেন গুলো চালানোর প্রশিক্ষণ ও এর পরীক্ষা -নিরীক্ষা চালানোর জন্য দরকার ছিল লোকালয় থেকে দূরবর্তী গোপন কোনো জায়গা।
শেষ পর্যন্ত নেভাদা মরুভূমির দক্ষিণে গ্রুম লেকের কাছাকাছি এলাকায় সন্ধান মেলে পছন্দনীয় সেই জায়গার। এই জায়গাটি আজ সকলের কাছে এরিয়া ৫১ নামে পরিচিত। ১৯৫৫ সালের জুলাই থেকে ইউটু স্পাই প্লেনের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন শুরু হয়। মজার ব্যাপার হলো এর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আমেরিকার বিভিন্ন জায়গা থেকে ইউএফও দেখতে পাওয়ার দাবি করতে শুরু করেন অনেকেই। কিন্তু ইউএফও দেখতে পাওয়ার দাবি করতে শুরু করা মানুষে অধিকাংশই ছিলেন বাণিজ্যিক বিমানের পাইলট। সেই সময় বিমান গুলো সাধারণত ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার ফুট উচ্চতা দিয়ে উড়তো। মিলিটারি বিমান গুলো উড়তো ৪০ হাজার ফুট উঁচু দিয়ে। অনেকেই ধারনা করতো যে মানুষের তৈরি বিমান এতো বেশি উঁচু দিয়ে উড়তে পারে না আর ঠিক সেই জায়গাতেই লেগে গেলো গোলমাল!
কারণ ইউটু প্লেনটি উড়ে যেত ৬০ হাজার ফুটেরও বেশি উচ্চতা দিয়ে। ব্যস এখানেই মানুষের মনে ঢুকে গেলো অবিশ্বাস। কেউ কেউ বলা শুরু করে দিলো এটা মানুষের বানানো হতে পারে না। এটা অবশ্যই এলিয়েনদের বানানো কোনো ইউএফও। বিমান বাহিনীর শীর্ষকর্তারা অবশ্য জানতেন যে ইউএফও দাবি করা জিনিস গুলো আসলে তাদের গোপন প্রজেক্টের ইউটু স্পাই প্লেন। কিন্তু এই সত্যটা জনসম্মুখে বলা নিষেধ ছিল। কারণ এটি ছিল একটি টপ সিক্রেট প্রজেক্ট। ফলে লোকমুখে ছড়াতে থাকে ইউএফও দেখতে পাওয়ার ভিত্তিহীন দাবি।
‘৫০ এর দশকের শেষের দিকে ইউটুর অপারেশন স্থগিত করা হলেও এরিয়া ৫১-এ চলতে থাকে অন্যান্য স্টেলথ এয়ার ক্রাফট নিয়ে গবেষণা। এগুলোর মধ্যে ছিল এ-১২ (A-12) এফ- ১১৭এ (F-117A) এবং টাসিট ব্লু (Tacit blue)। ফলে গুজবের ডাল পালার বিস্তৃতি কখনোই থেমে থাকেনি।
এরপরেই আসে ১৯৯৯ সালে বব লাজারের সেই বিস্ফোরক মন্তব্য যা সেখানে কাজ করা ইঞ্জিনিয়ারদের অনেকেই ভালো ভাবে নেননি। লাজার বলেন তিনি কিছু দিনের জন্য এরিয়া ৫১ এরই একটি অংশে কাজ করেছিলেন। যার নাম এস-৪ (S-4)। সেই জায়গাটি এতোটাই গোপনীয় যে ওই প্রজেক্টে তিনি এবং তার অন্যান্য সহকর্মীদের যে বাসে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তার জানালা গুলোও বন্ধ ছিল। যাতে ইঞ্জিনিয়াররা যাতাযাতের রাস্তা মনে রাখতে না পারেন। এস ৪ বিমান ঘাটিতে লাজার এমন সব ফ্লাইং সসার দেখতে পেয়েছিলেন যেগুলো কোনো ভাবেই পৃথিবীতে তৈরি হতে পারে না বলে দাবি করেন তিনি। সেগুলোর শক্তি সরবরাহ করা হতো এন্টিমেটার রিয়্যাক্টরের মাধ্যমে। জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হতো লালচে কমলা বর্ণের একটি পদার্থ। যার নাম এলিমেন্ট ১১৫ (element 115)। সসারটি এতোটাই শক্তিশালী গ্রাভিটি ওয়েভ তৈরি করেছিল যে সেটার দিকে কোনো গল্ফ বল ছুড়ে মারলে সেটাও ফিরে আসছিল।
লাজারের মতে, সামরিক খাতে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে মার্কিন সরকার রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে তৈরি করেছিল ইউএফও। বলা হয়ে থাকে, এলিয়েনদেরও নাকি জেলখানার বন্দিদের মতোই জিজ্ঞেসাবাদ করা হয় এরিয়া ৫১ এ। বির্তকে ছাইয়ের মধ্যে যেন বাতাস ছড়িয়ে দিলেন এরিয়া ৫১ এর কর্মরত পদার্থবিজ্ঞানী বব লাজার।
টিভি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, একবার যখন তিনি এস-৪ এর একটি হলওয়ে ধরে যাচ্ছিলেন তখন পাশের একটি ঘরের ছোট জানালা দিয়ে সামান্য সময়ের জন্য উঁকি দেন। তখন ঘরের ভেতরের ছোট ধূসর বর্ণের একটি প্রাণীকে সাদা কোট পরিহিত দুজন মানুষের মধ্যে দাড়িয়ে থাকতে দেখেছিলেন তিনি। পরে অবশ্য তার পিছন পিছন আসা প্রহরীর ধমক খেয়ে সেখান থেকে সরে যেতে বাধ্য হন। একবার বন্ধুদের নিয়ে তিনি লুকিয়ে সেসব সসারের টেস্ট ফ্লাইট দেখতে গিয়ে ধরা পড়ে যান। এরপরই তার চাকরি চলে যায়।
এরপর বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় নানা সময়ে রহস্যময় এই জায়গাকে কেন্দ্র করে নানা মুখোরচক খবর বের হলেও সেগুলোকে বরাবরই এড়িয়ে গিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। আসলে এরিয়া ৫১ এর কাজ এখনো বহাল রয়েছে। এখন নাকি সম্প্রসারণেরও কাজ হচ্ছে। তবে এর ভেতরে যে ঠিক কী নিয়ে কাজ চলছে তা বাইরের জগতে বসে অনুমান করা খুবই কঠিন। তবে অনুমান করলেও সেটা সঠিক কিনা তা যাচাইয়ের কোনো উপায় নেই।
প্রায় তিন দশক ধরে এরিয়া ৫১ নিয়ে গবেষণা করা এয়ার স্পেস ইতিহাসবিদ ও লেখক পিটার মার্লিন বলেছিলেন,
“এরিয়া ৫১-এ বর্তমানে উন্নত স্টেলথ টেকনোলজি এডভ্যান্সড এবং আনমেন্ড এরিয়াল ভেহিকল (Unmanned Aerial Vehicle) বা ইউএভি নিয়ে কাজ চলছে।”
আবার ইউটু বিষয়ক ইতিহাসবিদ ক্রিস পোকের মতে, এখন সেখানে বিশেষ ধরনের এয়ারক্রাফট রেডিও কমিউনিকেশনের অত্যাধুনিক কোনো প্রযুক্তি ডিরেকটেড এনার্জি ওপেন এবং লেজার নিয়ে গবেষণা চলছে। এরিয়া ৫১ কে ঘিরে অসংখ্য কাহিনী প্রচলিত থাকলেও এরিয়া ৫১-এর ওপর সব অভিযোগই সত্য বা ঠিক না-ও হতে পারে। এবার কিছু ঘটনা ও তথ্য সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক যেসব কারণের জন্য পুরো পৃথিবীর কাছে এরিয়া ৫১-এর এতো বদনাম। তার দাবি আমেরিকার টপ সিক্রেট অঞ্চল, মানে এরিয়া ৫১-এ এলিয়েনদের নিয়ে গবেষণা করার সময় এই ছবি তোলা হয়। এক্সামিনার ওয়েব সাইটের অনুসারে এই ছবি ইউএফও এক্সপার্ট টম কেডিটকে পাঠানো হয়েছিল। তাতে বলা হয় এই ছবি ১৯৪৭ সালে তোলা হয়েছিল।
এই ব্যাপারে ইউএফও এক্সপার্ট টম কেডিট বলেন যে,
“এই ছবিটির সত্যতা যাচাই করার জন্য আমরা নিউইয়র্কের কিছু ইতিহাসবিদদের সাথে দেখা করি। তারা আমাদের জানান যে এই ছবি ১৯৪৭– এ ই তোলা হয় এবং এই ছবিতে কোনো রকম ফটোশপ করা হয়নি।”
এই ছবিটি সত্যিই রহস্যময় যেখানে একটি অন্য গ্রহের প্রাণীকে শুয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে যার উচ্চতা চার ফিট। এই ছবির সত্যতা এখনো পুরোপুরি প্রমাণিত হয়নি।
১৯৮৮ সালে প্রথমবারের মত এরিয়া ৫১ ছবি ধরা পড়ে স্যাটেলাইটে। সেটা ছিল রাশিয়ার ‘ইকন্স’ স্যাটেলাইটের কৃতিত্ব। এখন শুধু মাত্র গুগল ম্যাপেও দেখতে পারবেন, তবে খুব কম অংশ। মার্কিন উপগ্রহ ‘করোনা’ ও ‘টেরা’ জায়গাটির ছবি তুলেছিল, কিন্তু আমেরিকান সরকার সব মুছে ফেলে। সিআইএ’র নথি থেকে জানা যায়, সেখানে যেসব দালান আছে সেসবে কোনো জানালা নেই, যাতে এক গবেষক দল অন্য দলের কাজ সম্পর্কে জানতে না পারেন! এমনকি যখন পরীক্ষামূলক কোনো বিমান প্রথম উড়ানো হয়, তখন কর্মীরা দালানের ভেতরেই থাকে। এসব গল্প নানা রকম সন্দেহের জন্ম দেয়।
এরিয়া অফ কন্সপায়রেসি
১৯৪৭ সালে নিউ মেক্সিকোর কাছে বিধ্বস্ত হওয়া রসয়াল বিমানকে অনেকে ভেবেছে এলিয়ানদের উভযানের ক্র্যাশ হিসেবে। আবার অনেকে ভাবেন, চন্দ্রজয় একেবারেই ভুয়া একটি কথা। রাশিয়ার সঙ্গে পাল্লা দিতেই এরিয়া-৫১’র ভেতরে নাটক সাজিয়ে ছিল তারা! মানুষের মনের এই সন্দেহের দানাকে উসকে দেয় হলিউডের ইন্ডিপেন্ডেন্স মুভিটি। সেখানে তারা পৃথিবী আক্রমনের অংশ হিসেবে এরিয়া ৫১ এ হামলা করে। পরিচালক ১৯৪৭ সালের রসয়ালের বিধস্ত বিমানকে এলিয়ানদের হারিয়ে যাওয়া উভোযান হিসেবে দারুণ গল্প ফেঁদেছিলেন, সেটা কি বলতে হবে? যখন রহস্য জমে একেবারে ক্ষীর, তখন আরো বেশি চুপ ছিল আমেরিকান সরকার!
তবে পদার্থবিজ্ঞানী বব লেজার গরম কড়াইয়ে ঘি ঢেলে দেন। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এরিয়া ৫১-এ রেটিকুলাম ৪ নামের একগ্রহ থেকে আসা এলিয়েন ও এক ফ্লাইং সসার আছে।’ তিনি জব্দ করা এলিয়েনটির একটা বর্ণনাও দেন। এছাড়া বেতার তরঙ্গের মাধ্যমে এখান থেকে ভিনগ্রহের প্রাণীদের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগ হয়েছে বলে দাবি করেন এখানে বিভিন্ন সময়ে কাজ করা অনেক কর্মকর্তা।
রসওয়েলে হওয়া ইউএফও দুর্ঘটনা
নিউ ম্যাক্সিকোর একটি শহর রসওয়েল। ২ জুলাই, ১৯৪৭ সালের পর রসওয়েলকে নিয়ে খুব আলোচনা হয়েছিল সারা বিশ্বব্যাপী। কারণ সেদিন আমেরিকার মিলিটারি বেসের কাছে একটি ইউএফও দুর্ঘটনা ঘটে। বার্নাট এরে নামক এক ওয়েল এক্সপ্লোর জিওলোজিস্ট তখন রসওয়েলের মরুভূমিতে কাজ করেছিলেন। সেই সময় এই ইউএফও দুর্ঘটনা ঘটে যা তিনি নিজে চোখে দেখেন।
এফবিআই-এর এক অধিকারী পত্র থেকে প্রমাণিত হয় যে ১৯৫০ এর আগে নিউ ম্যাক্সিকোর রসওয়েলে এলিয়েন এসেছিল। সেটি এফবিআই তাদের অনলাইন রিসোর্স ‘দ্যা ওয়ার্নে’ প্রকাশ করেছিল। এর মধ্যে ২২শে মার্চ ১৯৫০ সালে ওয়াশিংটনে নিযুক্ত এফবিআই কর্মী গ্রেহোটেট এফবিআই এর ডাইরেক্টরকে লিখেছিলেন, নিউ ম্যাক্সিকোতে এক এয়ার ক্রাফট কর্মী তিনটি ইউএফও দেখেছিলেন। এছাড়া এর মধ্যে এফবিআই এর একটি গোপন ফাইল প্রকাশ করা হয়। যেখানে প্রকাশ করা হয়েছে আমেরিকার পুলিশ এবং সেনাবাহিনী উটাহ রাজ্যে ১৯৫০ সালে একটি ইউএফও নষ্ট হতে দেখেছিলেন। আমেরিকার একটি বড় অংশ মনে করে এই দূর্ঘটনায় এইসব প্রাণীদের দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল কিন্তু আমেরিকার অধিকারীরা ঘটনার সত্যতার উপর পর্দা দিয়ে রেখেছে। এসব বিষয়ের পরীক্ষা নীরিক্ষা আজও এরিয়া ৫১ এ চলছে যে কারণে বাইরের কোনো মানুষের এরিয়া ৫১ এ প্রবেশ আজও নিষিদ্ধ।
স্যাটেলাইটের ছবি থেকে দেখা যায়, জায়গাটিতে সাতটি রানওয়ে আছে। এরমধ্যে ব্যবহার করা হয় না একটি। এখানে সাধারণ বিমান ওড়া নিষেধ ছিল। তাই বৈমানিকরা এর নাম দিয়েছিলেন ‘দি বক্স’। মার্কিন বিরোধীরা তো এক নামেই একে ‘এরিয়া অফ কন্সপায়রেসি’ নামে ডাকে। তবে ধারণা করা হয়, ইউ-২, এক্স-১৫, এ-১২সহ নানা আধুনিক মার্কিন সামরিক বিমান এখানেই তৈরি হয়েছে। ভেতরে লকহেড মার্টিনের একটি গবেষণাগার আছে বলে শোনা যায়।
সিক্রেট গবেষণা
কিছু লোক মনে করেন এরিয়া ৫১-এ সিক্রেট বাঙ্কারে মানুষ এবং এলিয়েনদের নিয়ে গবেষণা করা হয়। যার ফলে প্রচলিত আছে সেখানকার বিজ্ঞানীরা মানুষ এবং এলিয়েনদের সংমিশ্রণে অর্ধেক মানুষ এবং অর্ধেক এলিয়েনদের একটি অদ্ভুত প্রাণী তৈরী করতে সফল হয়েছে৷ বলা হয়, এই প্রাণীটি তৈরী করার জন্য এলিয়েনদের ডিএনএ ব্যবহার করা হয়েছিল যা রসওয়েলের ক্র্যাশ ল্যান্ডিং এ পাওয়া যায়। যদিও এসব এক্সপেরিমেন্টের কোনো প্রমাণ নেই কিন্তু অনেকে এটা মনে করে এই অর্ধেক মানুষ এবং অর্ধেক এলিয়েনদের খবরটি একটি মিথ্যা সংবাদ, যা আমেরিকার সরকার নিজেই প্রচার করেছিল। যাতে সেখানে হওয়া এক্সপেরিমেন্টের গোপনীয়তাকে পুরোপুরি লুকানো যায়।
জিটা রেটিকুলি স্টার সিস্টেম
ইউএফও লজিস্টিদের মতে, রসওয়েলের ওপর ইউএফও আমাদের থেকে ঊনচল্লিশ আলোক বর্ষ দূরে দক্ষিণ মহাকাশে অবস্থিত ডাবল স্টার সিস্টেমের জিটা রেটিকুলির কোনো একটি গ্রহ থেকে এসেছে। আমেরিকার ওহাইওর এক শিক্ষক ১৯৭০ সালে জিটা রেটিকুলিকে ইউএফও ঘটনার সাথে সম্পর্কিত করেন৷ মার্ক জুরোফিস নামের ওই স্কুল শিক্ষকের দাবি ছিল যে তিনি ১৯৬১ সালে হওয়া ইউএফও অপহরণ ঘটনার একটি মানচিত্র তৈরী করেছেন। ইউএফও অপহরণ হলো সেইসব ঘটনা যেখানে মানুষেরা দাবি করেছে যে অন্য গ্রহের ইউএফও এসে তাদেরকে নিজের বাড়ির থেকে বা অন্য কোনো স্থান থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ইউএফওতে রাখে। এরপর রিসার্চ চালায় তারপর আবার ফিরিয়ে দেয়। তারাই প্রকাশ্যে এসে জানায় যে তারা ইউএফও দ্বারা অপহরিত হয়েছিল।
এই ঘটনাগুলি আসলেই খুব বিতর্কিত। কারণ বেশিরভাগ মানুষই তা বিশ্বাস করে না। কিছু মানুষ তা বিশ্বাস করে। তবুও তাদের কথায় কিছু কিছু প্রাসঙ্গিকতা থাকে। যেমন ১৯৬১ সালের অপহরণের ঘটনাটিতে অনেক প্রাসঙ্গিকতা ছিল যে কারণে এই ঘটনাটিকে বিজ্ঞানীরা একটু গুরুত্বের সাথে নিয়েছিল।
১৯৬১ সালে এলিয়েন অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া প্রথম ঘটনা সম্পাদক জন ফিলার সবার নজরে আনেন। সেখানে দাবি করা হয় নিউ ইংল্যান্ডের এক দম্পতিকে এলিয়েন তুলে নিয়ে গিয়েছিল এবং ইউএফও তে তাদের ওপর পরীক্ষা-নিরীক্ষাও করা হয়। প্রশাসন এই ঘটনার সত্যতা জানার জন্য দাবিকৃত মহিলা যার নাম বেটি হিল, তাকে হিপনোটাইজ করে। তখন মহিলাটি একটি স্টার ম্যাপের স্কেচ বানিয়েছিল। তার দাবি ছিল যে তিনি মহাকাশের তারা গুলোকে এই এলিয়েন স্পেস শীপের ভিতর দিয়েই দেখেছিল। এই মহিলাটি স্কেচটি তৈরি করেছিল ১৯৭০ সালে যখন কম্পিউটার প্রযুক্তি এতোটা উন্নত ছিল না।
তাই এই কাহিনীতে আকৃষ্ট হয়ে পড়া ওহাইও-এর এক স্কুল শিক্ষক লোহার তার এবং মতি দিয়ে একটি স্টার মডেল তৈরি করেন এবং তা দিয়ে মহাকাশে এলিয়েনদের বাড়ির ঠিকানা খোঁজার গবেষণা শুরু করেন। এবং শেষ অবধি সৌভাগ্যবশত তার একটি স্টার মডেল দক্ষিণ মহাকাশে অবস্থিত জিটা রেটিকুলির সাথে মিলে যায়। তখনই আবার ইউএফও এর উপর আগ্রহী মানুষের জন্য নতুন করে একটি ভাবনার বিষয় চলে আসে। কারণ এই মহিলার অতটা বেশি স্টার সিস্টেম সম্পর্কে জানা তখন অসম্ভব ছিল। তাই যারা ইউএফও বিশ্বাস করে এই ঘটনা তাদের কাছে বিশ্বাসের সব সীমা অতিক্রম করেছিল।
বয়েড বুসম্যানের কনফেশন
এরিয়া ৫১-এর উপর উঠা সব অভিযোগগুলোর মধ্যে সব থেকে বিতর্কিত অভিযোগ হলো বয়েড বুসম্যানের। ২০১৪ সালে বয়েড বুসম্যান নামক একজন ব্যাক্তি তার বয়ান রেকর্ড করেন। বুসম্যানের দাবি ছিল তিনি প্রথমে এরিয়া ৫১ এর একজন এয়ার স্পেস ইঞ্জিয়ার পদে কাজ করতেন।
এই বয়ানে তিনি স্বীকার করেন যে এরিয়া ৫১ এ এমন কিছু শেল্টে তিনি কাজ করেছিলেন যেখানে ইউএফও এবং এলিয়েন সংক্রান্ত প্রজেক্ট ছিল। বুশম্যান সেসব সিনিয়র সাইনটিস্টদের মধ্যে একজন ছিলেন যারা অত্যাধুনিক এডভান্স এয়ার ক্রাফট কনসেপ্টের উপর কাজ করেছিল। এই পজিশনের সুবিধার জন্যই এরিয়া ৫১ এর অন্যান্য সিক্রেট সাইডে যাওয়ার অনুমতি ছিল। তার বয়ানে আজব এবং হয়রান করে দেওয়া অংশটিতে তিনি দাবি করেন যে এরিয়া ৫১ এর সিক্রেট অংশে কাজ করা স্টাফদের মধ্যে সাইনটিস্টরা ছাড়াও কিছু এলিয়েনদের কাজ করতে দেখেছিলেন তিনি যাদের বয়স ২০০ বছরেরও বেশি ছিল। তিনি তাদের সাথে কাজও করেছেন। তার মতে তারা নিজেদের গ্রহ থেকে যাত্রা করে পৃথিবীতে আসতো। ইউএস সরকার একে ওয়াইন দুনিয়া বলে।
এরিয়া ৫১ এর রহস্য আজও ভেদ করা সম্ভব হয়নি কারণ এরিয়া ৫১ সেই সকল স্থানের মধ্যে একটি যেখানে সব থেকে বেশি গার্ড রয়েছে। পৃথিবীর যত ক্ষমতাসীন ব্যক্তি হোক না কোনো সেখানে যাওয়া নিষিদ্ধ৷ কিন্তু এরিয়া ৫১ কে যদি এলিয়েনদের থেকে আলাদা করা হয় তাহলে যে ব্যাপারটা সামনে আসবে সেটা হলো ইউএস গভমেন্ট এই স্থানটিকে অত্যাধুনিক এয়ার ক্রাফট তৈরিতে ব্যবহার করেন এবং সেটা সম্পূর্ণ গোপনীয়তার সাথে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফি বা ডিসকভারি বা অন্যান্য যে সেকল চ্যানেল এরিয়া ৫১-কে নিয়ে ডকুমেন্টরি বানিয়েছে তাদের মতে এরিয়া ৫১ শুধুমাত্র একটি মিলিটারি প্রজেক্টের অংশ অথচ তারা আজও এরিয়া ৫১ কে রহস্যের চোখেই দেখে।
যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর অত্যন্ত গোপনীয় এ ফ্যাসিলিটির অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে। এখানে বর্তমানে ঠিক কোন বিষয় নিয়ে গবেষণা চলছে তা জানার কোনো উপায় নেই। তবে ইতিহাস বলে যে, বিভিন্ন এয়ারক্রাফট ও ওয়েপন সিস্টেম নিয়েই পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো হয় এ জায়গাটিতে। শুরু থেকেই গোপনীয়তার দুর্ভেদ্য চাদরে মোড়ানো বলে এরিয়া ৫১ নিয়ে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে দিনকে দিন। জমাট বাধা এ রহস্য থেকেই কালক্রমে জন্ম নিয়েছে বেশ কিছু কন্সপিরেসি থিওরি। আমাদের আজকের এ লেখার মূল উদ্দেশ্য সেই কন্সপিরেসি থিওরিগুলোই তুলে ধরা। পাশাপাশি সেই থিওরিগুলো কিভাবে এলো এবং বর্তমানে সেখানে কী চলছে তারও উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা হবে আজ।
চলুন তবে দেরি না করে এলিয়েন, ইউএফও, চাঁদে অবতরণ ইত্যাদি নিয়ে কন্সপিরেসি থিওরিগুলোর সাথেই পরিচিত হওয়া যাক আগে।
এলিয়েনদের ময়নাতদন্ত
এরিয়া ৫১ এর ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসীরা বোধহয় এলিয়েনদের শান্তিতে থাকতে দিতে চান নি। তাই শুরুতে তাদের স্পেসক্রাফট চুরি, এরপর জিজ্ঞাসাবাদের ঝামেলা পোহানোর পর একেবারে তাদের ময়নাতদন্ত করিয়ে ছাড়লেন! গত শতকের নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি দিককার কথা। হঠাৎ করে সতের মিনিটের একটি ভিডিও টেপ ছড়িয়ে পড়েছিলো যেখানে দেখা যায় বায়ো-হ্যাজার্ড প্রোটেকশন স্যুট পরিহিত একদল মানুষ ছোটখাট একটি এলিয়েনের দেহ নিয়ে গবেষণা করছেন। তবে ভিডিওটি নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে অনেকেই জানান যে, গবেষক দলের অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি নড়াচড়ার ধরনটা ছিলো বেশ আনাড়ি রকমের, যা একে ভুয়া হিসেবে প্রমাণিত করে!
বছরখানেক পরে ভিডিওটির পরিচালক আরেকটি ডকুমেন্টরি বানান। সেখানে তিনি দাবি করেন যে, তাদের দলটি আসলেই এলিয়েনের ময়নাতদন্ত করেছিলো। তবে মূল ভিডিওর ক্লিপটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তারা নকল আরেকটি ভিডিও বানিয়ে সেটিই বাজারে ছেড়েছিলেন! তবে আপনি যদি এলিয়েনদের ময়নাতদন্ত তত্ত্বে এরপরও বিশ্বাস করতে চান, তাহলে হতাশ হবেন না। কারণ ২০১২ সালে ‘Alien from Area 51: The Alien Autopsy Footage Revealed’ শিরোনামে একটি ডিভিডি বেরিয়েছিলো, যেখানে আবার সতর্কতা হিসেবে লেখা আছে- ‘Graphic Material’! ২০১৪ সালে সর্বশেষ এমন আরেকটি ভিডিও দেখা যায়। সেই ভিডিওতে প্রায় ৪ ফুট লম্বা একটি এলিয়েনের আংশিক কাটা মাথা দেখা গিয়েছিলো।
চাঁদে অবতরণ স্রেফ সাজানো ঘটনা
চাঁদের বুকে প্রথম পা রাখার পর মহাকাশচারী নীল আর্মস্ট্রংয়ের এই কথাটি স্থান করে নিয়েছে ইতিহাসের পাতায়। তবে এরিয়া ৫১ কনস্পিরেসি থিওরিস্টদের মতে, অ্যাপোলো-১১ দিয়ে চাঁদে অবতরণের ঘটনাটি স্রেফ ভাঁওতাবাজি ছাড়া আর কিছুই না! এ ধারণাটির প্রবক্তা কনস্পিরেসি লেখক বিল কেসিং। তার মতে, ষাটের দশকের শেষের দিকে নাসার বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেন যে, তীব্র তেজষ্ক্রিয়তার জন্য চাঁদের বুকে অবতরণ করা কোনো মানুষ আর বেঁচে ফিরতে পারবে না! কিন্তু এতদিন ধরে চালানো এই প্রোগ্রামও বাতিল করা সম্ভব ছিলো না। তাই তারা আশ্রয় নেয় ইতিহাসের অন্যতম সেরা জালিয়াতির!
এজন্য অ্যাপোলো-১১ জনগণের দৃষ্টিসীমার বাইরে চলে যাওয়ার পরই গোপন একটি মিলিটারি এয়ারক্রাফটে করে ক্রুদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো পূর্বপ্রস্তুত একটি মুভি স্টেজে! এর কিছুদিন পরে সেখানেই স্থাপন করা সব ক্যামেরার সামনে অভিনয় করেন নীল আর্মস্ট্রং এবং বাজ অলড্রিন। এরপর সেই ভিডিওই বিশ্বজুড়ে প্রচারের ব্যবস্থা করা হয় নাসার পক্ষ থেকে। কনস্পিরেসি থিওরিস্টদের কল্পনার দৌঁড়ের গতি যে এক্ষেত্রে উসাইন বোল্টকেও হার মানিয়েছিলো, তা বোধহয় না বললেও চলে।
মাটির তলায় ৪০ তলা বাঙ্কার
এরিয়া ৫১ এ যে আসলে কী আছে সেই সম্পর্কে জনগণের ধারণা বেশ কম। এই কম ধারণা থেকেই পরবর্তীতে জন্ম নিয়েছে নানা কল্পনার শাখা-প্রশাখা। এই যেমন মাটির তলার বাঙ্কারটির কথা বলা যায়। কোনো কোনো কন্সপিরেসি থিওরিস্টের মতে, এরিয়া ৫১ এ মাটির নিচে বিশাল বাঙ্কার গড়ে তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। আর সেখানেও রয়েছে প্রযুক্তির অত্যাধুনিক আশীর্বাদপুষ্ট বিমানের আনাগোনা।
সেই বিমানগুলোকে সেখানে লুকিয়ে রাখা হয় যাতে করে স্যাটেলাইটের মাধ্যমেও সেগুলোর কোনো হদিস কেউ না পায়। কারো মতে সেই বাঙ্কারগুলো ৪০ তলা ভবনের সমান উঁচু! আবারো বব লাজারের শরণাপন্ন হওয়া লাগে বাঙ্কারের কথায়। তার মতে, এলিয়েনদের সেই স্পেসক্রাফটগুলো লুকিয়ে রাখা হয় পাহাড়ের নিচে। সেই বাঙ্কারের প্রবেশপথে রয়েছে বিশাল বড় দরজা যার ডিজাইন আশেপাশের মাটির মতোই করা। ফলে দূর থেকে দেখে একে পাহাড়ের অংশই ভাববে যে কেউ!
মানুষ-এলিয়েন সংকর
এখন যে কন্সপিরেসি থিওরির কথা বলবো, সেটা শুনলে আশ্চর্য হবার পাশাপাশি বেশ মজাও লাগার কথা। কারো কারো মতে, এরিয়া ৫১ এ আসলে একসাথে কাজ করছে আমেরিকান সরকার এবং ভিনগ্রহের প্রাণীরা। তাদের ধারণানুযায়ী, সেখানে দুই পক্ষের মিলিত প্রচেষ্টায় মানুষ ও এলিয়েনের এমন সংকর প্রজাতি বানাতে কাজ চলছে যাদের দেখলে মনে হবে তারা মানুষ। কিন্তু শারীরিক ও মানসিকভাবে তারা হবে সেই এলিয়েনদের মতোই! তারাই নাকি ভবিষ্যতের পৃথিবীতে নেতৃত্ব দিবে। অনেকে আবার কল্পনার ডানাকে আরো অনেক দূর প্রসারিত করে বলে যে, এখানে যে সংকর প্রজাতির জন্ম দেয়া হচ্ছে, তারা আসলে এলিয়েন নিয়ন্ত্রিত। ভবিষ্যতে যদি কোনো কারণে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের দরকার পড়ে, তাহলে এলিয়েনরা গবেষণাগারে জন্মানো এসব সংকর প্রাণীর অঙ্গই ব্যবহার করবে!
আবহাওয়া পরিবর্তনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা
আমেরিকার ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের তথ্য মোতাবেক, গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী মেঘের পরিবর্তন করে বৃষ্টিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যায় কিনা তা নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছিলো।
আবার ১৯৬২ থেকে ১৯৮৩ সালের মধ্যবর্তী সময়ে ন্যাশনাল ওশানিক এন্ড অ্যাটমস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ কমানোর জন্য কাজ করেছিলো, যদিও তাদের সেই গবেষণা ততটা ফলপ্রসূ হয় নি। এ থেকেই অনেকে ধারণা করে থাকে যে, আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটানোর জন্য এমন বিভিন্ন পরীক্ষাও চলে এরিয়া ৫১ এ।
ওয়ান ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট
‘ম্যাজেস্টিক ১২’ নামে সুপরিচিত একটি টার্ম আছে, যা দিয়ে আমেরিকার একটি গোপন দলকে বোঝায়। বিভিন্ন বিজ্ঞানী ও সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত সেই দলটি নাকি গত ছয় দশক ধরে নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা করার জন্য যাতে আমাদের এই ধরণীটি একইসাথে মানুষ এবং অভিজাত এলিয়েনরা পরিচালনা করতে পারবে! ম্যাজেস্টিক ১২ নাকি ইতোমধ্যেই এলিয়েনদের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছে। ১৯৪৭ সালে সূত্রপাত হওয়া এ প্রজেক্টের মাধ্যমে এলিয়েনদের বিভিন্ন প্রযুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের হাতে এসেছে বলে দাবি কনস্পিরেসি থিওরিস্টদের। বিনিময়ে এলিয়েনরা পেয়েছিলো বিভিন্ন পশুপাখি, এমনকি মানুষের উপর বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালানোর অধিকার!
সময় পরিভ্রমণ ও টেলিপোর্টেশন
মাঝে মাঝেই আমাদের ইচ্ছা করে অতীতে ফিরে গিয়ে নিজের ছোটবেলার সেই সত্তাটাকে একবার দেখে আসতে, কৈশোরের রঙিন সময়গুলোতে ফিরে যেতে কিংবা জীবনে নেয়া ভুল সিদ্ধান্তগুলো অতীতে গিয়ে কোনোভাবে পাল্টে দিতে। এছাড়াও অতীতের বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের সাথে সামনাসামনি দেখা করতে কিংবা অতীতের বিখ্যাত কোনো ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হতেও ইচ্ছা করে কারো কারো। শুধু অতীতের কথাই বা বলছি কেন? বর্তমান নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় থাকা মানুষগুলো মাঝে মাঝেই জানতে চায় তাদের ভবিষ্যতে কী আছে তা জানতে। এ সবই সম্ভব হতো যদি সময় পরিভ্রমণ নামক বিষয়টি সম্ভব হতো।
এবার আসা যাক টেলিপোর্টেশনের কথায়। সায়েন্স ফিকশন গল্প ও সিনেমার পাগলেরা এ বিষয়টির সাথে পরিচিত অনেক আগে থেকেই। মুহুর্তের মাঝেই এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় চলে যেতে পারার বিষয়টিকেই সাধারণত বলা হয় টেলিপোর্টেশন। এর মাধ্যমে পদার্থ ও শক্তি উভয়েরই স্থানান্তর সম্ভব বলে মনে করা হয়। মানব কল্পনার এ বিষয় দুটো নিয়ে এরিয়া ৫১ এ কাজ চলছে বলে মনে করেন অনেকে।
এতটুকু পড়ার পর যে কারো মনেই প্রশ্ন জাগবে যে, “এত কনস্পিরেসি থিওরি যে জায়গাটাকে ঘিরে, সেখানে আসলে হয়টা কী? আর এত রহস্য জন্মালোই বা কিভাবে?” এমন প্রশ্ন আসাটা খুবই স্বাভাবিক। এখন তাহলে এ দুটো প্রশ্নের উত্তরই খোঁজা যাক। শুরু করছি প্রথম প্রশ্নটি দিয়ে। এজন্য আমাদের চলে যেতে হবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী সময়টাতে। তখনকার সোভিয়েত ইউনিয়নের মতিগতি, তারা কী নিয়ে গবেষণা করছে, তারা কোনো আকস্মিক হামলা করে বসবে কিনা ইত্যাদি নানাবিধ বিষয় নিয়ে বেশ উত্তপ্ত ছিলো যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিবিদদের মস্তিষ্ক। পঞ্চাশের দশকের শুরুর দিকে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য অপেক্ষাকৃত নিচু দিয়ে উড়ে যাওয়া বিমান পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে সোভিয়েত বাহিনীর হাতে সেগুলো ভূপাতিত হবার আশঙ্কা ছিলো।
অবশেষে ১৯৫৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার এক গোপন প্রোজেক্টের অনুমোদন দেন। সেই প্রোজেক্টের লক্ষ্য ছিলো এমন এয়ারক্রাফট বানানো যেগুলো অনেক উচ্চতা থেকেও শত্রুপক্ষের বিভিন্ন বিষয়ে নজরদারি করতে পারবে। এ প্রোগ্রামের ফসল হিসেবেই পরবর্তীতে তারা তৈরি করেছিলো ইউ-২ স্পাই প্লেন। এ প্লেনগুলোর চালনার প্রশিক্ষণ ও পরীক্ষানিরীক্ষা চালানোর জন্য দরকার ছিলো লোকালয় থেকে দূরবর্তী গোপন কোনো জায়গা। শেষ পর্যন্ত নেভাডা মরুভূমির দক্ষিণে গ্রুম লেকের কাছাকাছি এলাকায় সন্ধান মেলে পছন্দনীয় সেই জায়গার। এ জায়গাটিই আজ সকলের কাছে এরিয়া ৫১ নামে পরিচিত।
১৯৫৫ সালের জুলাই থেকে ইউ-২ স্পাই প্লেনের টেস্ট ফ্লাইট শুরু হয়। মজার ব্যাপার হলো, এর অল্প কিছুদিনের মাঝেই যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গা থেকে ‘ইউএফও’ দেখার দাবি করতে শুরু করে লোকজন। এর পেছনের কারণটা অবশ্য বেশ মজার। ইউএফও দেখতে পাওয়ার দাবি করা মানুষগুলোর অধিকাংশই ছিলো কমার্শিয়াল এয়ারলাইনের পাইলট। তৎকালে এরোপ্লেনগুলো সাধারণত ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ ফুট উচ্চতা দিয়ে উড়তো। মিলিটারি এরোপ্লেনগুলো উড়তো আরো উঁচু দিয়ে, প্রায় ৪০,০০০ ফুট। অনেকেই ধারণা করতো যে, ‘মানুষের তৈরি’ কোনো এরোপ্লেন এর বেশি উঁচু দিয়ে উড়তে পারবে না! আর ঠিক এ জায়গাতেই লেগে গেলো যত গোলমাল। কারণ ইউ-২ প্লেনটি উড়ে যেত ৬০,০০০ ফুটেরও বেশি উচ্চতা দিয়ে!
ব্যাস, এখানেই মানুষের মনে ঢুকে গেলো অবিশ্বাস। “এটা মানুষের বানানো হতেই পারে না। এটা অবশ্যই এলিয়েনদের বানানো কোনো ইউএফও!”
বিমান বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অবশ্য জানতেন যে, ইউএফও দাবি করা জিনিসগুলো আসলে তাদের গোপন প্রোজেক্টের ইউ-২ স্পাই প্লেন। কিন্তু এ সত্যটি জনসম্মুখে বলা বারণ ছিলো তাদের জন্য। কারণ এটি ছিলো একটি টপ সিক্রেট প্রোজেক্ট। ফলে লোকমুখে ছড়াতেই থাকে ইউএফও দেখতে পাওয়ার সেসব ভিত্তিহীন দাবি।
পঞ্চাশের দশকের শেষের দিকে ইউ-২ এর অপারেশন স্থগিত করা হলেও এরিয়া-৫১ এ চলতে থাকে অন্যান্য আরো স্টেলথ এয়ারক্রাফট নিয়ে গবেষণা। এগুলোর মাঝে ছিলো A-12, Bird of Prey, F-117A এবং Tacit Blue। ফলে গুজবের ডালপালার বিস্তৃতি কখনোই থেমে থাকে নি। এরপরই আসে ১৯৮৯ সালে বব লাজারের সেই বিষ্ফোরক মন্তব্য যা সেখানে কাজ করা ইঞ্জিনিয়ারদের অনেকেই ভালভাবে নেন নি। তখন সেখানকার বিজ্ঞানীদের মানসিক অবস্থা বোঝাতে গিয়ে প্রায় তিন দশক ধরে এরিয়া ৫১ নিয়ে গবেষণা করা এরোস্পেস ইতিহাসবিদ ও লেখক পিটার মার্লিন বলতে বাধ্য হন, “Some are even mad because they worked on these things and built these amazing planes. This is Earth technology. You got folks claiming it’s extraterrestrial when it’s really good old American know-how.”
এখন তাহলে প্রথম প্রশ্নের উত্তটা খোঁজার মধ্য দিয়ে আজকের দীর্ঘ এ লেখাটির ইতি টানা যাক। এরিয়া ৫১ এখনো বহাল তবিয়তেই চলছে। এখন এর সম্প্রসারণের কাজ হচ্ছে। তবে ভেতরে যে ঠিক কী নিয়ে কাজ চলছে তা নিয়ে বাইরের জগতে বসে অনুমান করা খুব কঠিন। আর অনুমান করলেও সেটা সঠিক কিনা তা যাচাইয়ের কোনো উপায়ও নেই।
পিটার মার্লিনের মতে এরিয়া ৫১ এ বর্তমানে উন্নততর স্টেলথ টেকনোলজি, অ্যাডভান্সড ওয়েপন, ইলেকট্রনিক ওয়্যারফেয়ার এবং ইউএভি (আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিক্ল) নিয়ে কাজ হচ্ছে। ওদিকে ইউ-২ বিষয়ক ইতিহাসবিদ ক্রিস পোককের মতে এখন সেখানে বিশেষ ধরনের এয়ারক্রাফট, রেডিও কমিউনিকেশনের অত্যাধুনিক কোনো প্রযুক্তি, ডিরেক্টেড এনার্জি ওয়েপন এবং লেজার নিয়ে গবেষণা চলছে।
এরিয়া ৫১ এখনো বহাল তবিয়তেই চলছে। এখন এর সম্প্রসারণের কাজ হচ্ছে। তবে ভেতরে যে ঠিক কী নিয়ে কাজ চলছে তা নিয়ে বাইরের জগতে বসে অনুমান করা খুব কঠিন। আর অনুমান করলেও সেটা সঠিক কিনা তা যাচাইয়ের কোনো উপায়ও নেই। কী মনে হয় আপনার? কনস্পিরেসি থিওরিস্টদের মতো আপনিও কি মনে করেন ইউএফও, এলিয়েন, ওয়ান-ওয়ার্ল্ড গভর্নমেন্ট নিয়ে কাজ চলছে এরিয়া ৫১ এ? নাকি মার্লিন, পোককের মতো ইতিহাসবিদদের কথাই সঠিক যা বানচাল করে দেয় অনেকের স্বপ্নের ইউএফও আর এলিয়েনদের? সঠিক উত্তরটা কি আদৌ পাওয়া সম্ভব?
সূত্র: দ্যা ওয়াল , রোয়ার মিডিয়া , নিউস ভিউস