Image default
ইতিহাস

চার্লি চ্যাপলিন – বিশ্ব বিখ্যাত কমেডি রাজা হয়ে উঠার গল্প

মানুষটা নাকি বৃষ্টিতে কাঁদতে ভালোবাসত। যাতে কেউ তাঁর চোখের পানি দেখতে না পায়। চার্লি চ্যাপলিন কখনোই তাঁর চোখের পানি কাউকে দেখাতে চাননি। সেটা সফলভাবে গিলে ফেলে কেবলই হাসাতে চেয়েছেন। চ্যাপলিনের মতে, যে দিনটি হাসা হলো না, সেদিনটি বৃথাই গেল। তাই তিনি জীবনভর হাসিয়েছেন। আর দর্শকও হাসতে হাসতে কখন যে কেঁদে ফেলেছেন, টের পাননি। হাসাতে হাসাতেই তিনি কষে চড় লাগিয়েছেন পুঁজিবাদের গালে। হাসাতে হাসাতেই তিনি দেখিয়েছেন বৈষম্য আর বঞ্চনার শুষ্ক বাস্তবতাকে।

১৮৮৯ সালে জন্ম নেয়া বিশ্ব বিখ্যাত অভিনেতা ও পরিচালক চার্লি চ্যাপলিনকে সবাই চেনে। সিনেমার শুরুর সময় থেকে আজ পর্যন্ত সব সিনেমা পাগল তাঁকে ভালোবাসে ও শ্রদ্ধা করে। পৃথিবীর সফলতম অভিনেতা ও পরিচালকদের একজন তিনি। কমেডির রাজা বলা হয় তাঁকে। এসব কথাও সবাই জানে। কিন্তু তাঁর পেছনের গল্প সবাই জানে না। চলুন জেনে নেয়া যাক এমন কিছু কথা যা সবাই জানে না।

চ্যাপলিনের বাবা ছিলেন একজন মাতাল। কোনও কাজ করতেন না, দিন-রাত মদ খেয়ে পড়ে থাকতেন। চ্যাপলিনের ২ বছর বয়সে তাঁর বাবা বাড়ি ছেড়ে চলে যান। মা নামে মাত্র একটি কাজ করতেন তাতে সংসারের খরচ কোন ভাবেই মিটতো না। অভাবের তাড়নায় মাত্র ৭ বছর বয়সে চার্লি “ওয়ার্কহাউজ” এ যেতে বাধ্য হন। “ওয়ার্কহাউজ” হলো তৎকালীন সময়ে বৃটেনে গরিবদের জন্য একটি ব্যবস্থা চালু ছিল, যেখানে পরিশ্রমের বিনিময়ে খাবার ও শোয়ার জায়গা দেয়া হত।

কিছুদিন পর আবার চার্লি সেখান থেকে ফিরে আসেন। আবার চার্লি’র ৯ বছর বয়সে তাঁর মা পাগল হয়ে যান এবং তাকে মানসিক হাসপাতালে যেতে হয়। মায়ের মানসিক হাসপাতালে যাওয়ার কারণে চ্যাপলিনকে আবারও “ওয়ার্কহাউজে” ফিরে যেতে হয়।

কিছুদিন পর চার্লির বাবা লিভার নষ্ট হয়ে মারা যান। এরপর তাঁর মায়ের পাগলামি এতই বেড়ে যায় যে তাকে সব সময়ের জন্য পাগলা গারদে বন্দী করে রাখার প্রয়োজন পড়ে। চ্যাপলিন ও তাঁর ভাই সিডনি একদম পথে বসে পড়েন। দিনের পর দিন না খেয়ে রাস্তায় ঘুরে কাটান।

এভাবে চলতে চলতেই এক সময়ে তিনি মঞ্চে কাজ নেন। বিভিন্ন মঞ্চ নাটকে অভিনয় করতে করতে নিজের কমেডি প্রতিভাকে শক্তিশালী করেন। পরে তিনি হলিউডে পাড়ি জমান। তার পরের গল্প তো আমরা সবাই জানি । সেখান থেকেই সর্বকালের সেরা নির্বাক অভিনেতা হয়ে ওঠেন তিঁনি।

 

Related posts

পার্ল হারবার আক্রমণ : ইতিহাসের পাতায় এক আক্ষেপ

News Desk

ডাঃ আবদুল আলীম: চোখের আলো ফেরানো মৃত্যুঞ্জয়ী

News Desk

আসামে বাংলা ভাষা আন্দোলনে ১১ শহিদের কথা

News Desk

Leave a Comment