আমরা প্রায় সবাই “ইংলিশ ব্রেকফাস্ট” শব্দটির সাথে পরিচিত। এটি যেমন স্বাস্থ্যকর, তেমনি সুস্বাদু। একই সংগে এটি ঐতিহ্যবাহী। আসুন, জেনে নেওয়া যাক কিভাবে “ইংলিশ ব্রেকফাস্ট” এলো এবং কি কি থাকে তাতে।
ইংলিশ ব্রেকফাস্টের ঐতিহ্য শুরু হয় ইংল্যান্ডে তেরোশ শতকে। তখন এটি কেবল ধনীদের ঘরেই প্রচলিত ছিলো। কারন, তখন সকালের নাস্তাকে বিলাসিতা ভাবা হতো। তবে সে সময় সকালের নাস্তার উদ্দেশ্য ছিলো দিনের দীর্ঘ সময় যেনও ক্ষুধা না লাগে। চৌদ্দ শতকে ফুল ইংলিশ ব্রেকফাস্টের প্রচলন ঘটে। তখন মূলত এটা আংলো সাক্সনদের মধ্যে প্রচলিত ছিলো। বিশাল বাড়ি, মেহমানদারি এবং ব্যয়বহুল খাবার ছিলো তাদের সামাজিকতার অংশ।
ব্রিটেনে শিল্প বিপ্লব শুরু হলে, ইংরেজদের ঐতিহ্যবাদী ব্রেকফাস্ট ধীরে ধীরে একপাশে সরে যেতে থাকে। তখন মুলত এমন খাবারের প্রচলন হয় যা খেতে সহজ। এবং একবার খেলে সারাদিন চলে যায়। ১৮৩৭ সালে রানী ভিক্টোরিয়া সিংহাসনে বসলে ইংলিশ ব্রেকফাস্ট আবার জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। শ্রমিকদের কাছে এটা ছিলো নিত্য প্রয়োজন। আর ধনীদের কাছে ঐতিহ্য। বিশেষ করে শিকার করতে যাওয়ার দিন সকালে তারা বিশেষ নাস্তা গ্রহন করতেন।
এবার দেখে নেওয়া যাক, ইংলিশ ব্রেকফাস্টে কি কি থাকে। এখন আমরা ইংলিশ ব্রেকফাস্ট হিসেবে যেসব খাবার জানি সবসময় কিন্তু তা ছিলো না। তেরশো শতাব্দীতে নাস্তায় ঘণ পরিজ আর রুটি খাওয়া হতো। সাথে থাকতো বিয়ারের বড় বোতল। এরপরে এর সাথে যুক্ত হয় চীজ এবং ঠান্ডা গরুর মাংস। ধনী পরিবার থেকে যখন এটি সাধারণ পরিবারে ছড়িয়ে পরে তখন আরও দুটি জিনিস যুক্ত হয়। ডিম এবং বেকন।
বর্তমানে ফুল ইংলিশ ব্রেকফাস্টে থাকে, সসেজ-বেকন-ডিম-টমেটো- সিদ্ধ মটরশুঁটি এবং টোস্ট। কখনও সাথে থাকে মাশরুম এবং পুডিং। সবশেষে, এক কাপ চা। তাদের কাছে সকালের নাস্তা দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। তাই সমস্ত রেস্তোরাঁয় এই নাস্তার ব্যবস্থা আছে। এই নাস্তা সুস্বাদু ও স্বাস্থকর হওয়ায় বর্তমানে তা সারা বিশ্বেই জনপ্রিয়। এমনকি ঢাকার অনেক অভিজাত রেস্তোরাঁয় এটি “ফুল ইংলিশ ব্রেকফাস্ট” নামে পরিবেশিত হয়।