সেই প্রাচীন যুগ থেকে আজ পর্যন্ত যত রূপসী নারীর কথা ইতিহাসের পাতায় উঠে এসেছে, তাদের মধ্যে মিশরের সৌন্দর্যের রানী ক্লিওপেট্রার নাম সগৌরবে জ্বলজ্বল করছে। শুধু সৌন্দর্য নয়, বুদ্ধিমত্তায়ও তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী।
ক্লিওপেট্রা সপ্তম থিয়া ফিলোফেটর ছিলেন মিশরের একজন রানী এবং প্রাচীন মিশরের শেষ ফারাও। তার জন্মের আগেও ছয়জন ক্লিওপেট্রা ছিলেন, কিন্তু ইতিহাসের পাতায় তার মতো জায়গা করে নিতে পারেননি কেউই। গ্রীক শব্দ kleos এবং pater থেকেই ক্লিওপেট্রা নামের জন্ম, যার অর্থ হলো ‘গ্লোরি অফ দ্য ফাদার’। খ্রিস্টপূর্ব ৬৯ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্বপুরুষ প্রথম টলেমি ছিলেন আলেক্সান্ডার দ্য গ্রেটের অন্যতম সেনাপতি, খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩ সালে আলেক্সান্ডার মারা গেলে টলেমি বংশের প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
প্রাচীন সভ্যতার সূতিকাগার মিশরের পরতে পরতে রয়েছে রহস্য। বিশেষ করে আনুমানিক পাঁচ হাজার বছর আগেকার তৈরি পিরামিড আর মমি তৈরির কৌশল। ফারাওরাও ছিলেন আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। বিশেষ করে নারী ফারাওরা। ফারাও হচ্ছে মিশর শাসনের ভার যাদের হাতে ছিল অর্থাৎ রাজা। মিশরের শাসক বা রাজাদেরকে বলা হয় ফারাও। মিশরের রাজা বা ফারাওদের কথা বললে তৎক্ষণাৎ আমাদের চোখে নীল আর সোনালি মুকুট পরে সিংহাসনে বসে থাকা একজন পুরুষের অবয়বই ভেসে ওঠে। যদিও মিশরের শাসকদের বেশিরভাগই পুরুষ ছিলেন।
রানী সপ্তম ক্লিওপেট্রা যেমন ছিলেন সৌন্দর্যে অতুলনীয়, তেমনি তার জীবন ছিল নাটকীয়তায় ভরপুর। তার পিতা, রাজা দ্বাদশ টলেমি মারা যাওয়ার পর তার দুই সন্তান ত্রয়োদশ টলেমি এবং সপ্তম ক্লিওপেট্রার মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগি করে দেন। তৎকালীন নিয়মানুসারে, ক্লিওপেট্রা তার ভাই ত্রয়োদশ টলেমিকে বিয়ে করেন এবং একসাথে মিশর শাসন করতে থাকেন।
বিয়ের পর ক্লিওপেট্রা ও তার ভাইয়ের মধ্যকার সম্পর্ক সুখকর ছিল না। তাছাড়া তখনকার মিশরের অবস্থা ছিল বিশৃঙ্খল। টলেমি ষড়যন্ত্র করে ক্লিওপেট্রাকে মিশর থেকে বিতাড়িত করে একাই রাজ্য শাসন করতে থাকেন। ধারণা করা হয়, ক্লিওপেট্রা তখন তৎকালীন সিরিয়ায় পালিয়ে যান নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য। তিনি সিরিয়ায় গিয়ে সৈন্য যোগাড় করতে থাকেন, যাতে হারানো সিংহাসন পুনরুদ্ধার করা যায়।
ক্লিওপেট্রা ও জুলিয়াস সিজার
খ্রিস্টপূর্ব ৪৮ সাল; রোমান সাম্রাজ্য গৃহযুদ্ধে লিপ্ত রাজা জুলিয়াস সিজার এবং বিদ্রোহী সেনাপতি পম্পেইয়ের সাথে। বিদ্রোহী সেনাপতি যুদ্ধে পরাজিত হয়ে পালিয়ে গেল তৎকালীন মিশরের রাজধানী আলেকজান্দ্রিয়ায়। মিশরের শাসক হিসেবে তখন সিংহাসনে ছিলেন ক্লিওপেট্রার ভাই ত্রয়োদশ টলেমি। তার হুকুমেই ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় পরাজিত সৈনিক পম্পেইকে।
এর কিছুদিন পরেই জুলিয়াস সিজার তার বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়ে রওনা হন মিশর দখলের জন্য। মিশরের সম্রাট টলেমি সিজারকে বাধা দিলেও জিততে পারলেন না। ক্লিওপেট্রা পুরো ঘটনার ওপর নজর রাখছিলেন। তিনি যখন দেখলেন, রাজা জুলিয়াস সিজার মিশর দখল করার চেষ্টা চালাচ্ছেন, তিনি বুঝতে পারলেন, এটি তার জন্য বিশাল একটি সুযোগ। ক্লিওপেট্রা বুঝে গিয়েছিলেন, জুলিয়াস সিজারের দরকার মিশরের ধন-সম্পদ, আর তার দরকার ছিল মিশরের সিংহাসনের ক্ষমতা।
তাছাড়া জুলিয়াস সিজার ছিলেন রোমান সাম্রাজ্যর একক অধিপতি। ক্লিওপেট্রা যদি তাকে পাশে রাখতে পারেন, তাহলে তার সৈন্য বাহিনীর সাহায্যে সহজেই ভবিষ্যতে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন। রানী ক্লিওপেট্রার সৌন্দর্য এবং বুদ্ধিমত্তায় জুলিয়াস সিজার অভিভূত হয়ে তাকে পূর্ণ সমর্থন দেন এবং ক্ষমতা পুনরুদ্ধারে সাহায্য করেন। সিজার রানীর প্রেমিক হিসেবেই প্রতীয়মান হন এবং মিশরের নিয়মনীতি এবং পুরোহিতদের প্রতি সম্মানার্থে ক্লিওপেট্রা তার ভাই চতুর্দশ টলেমিকে বিয়ে করেন। এই বিয়ে স্থায়ী হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ৪৪-৪৭ পর্যন্ত।
সেই সময়ে ক্লিওপেট্রা তার প্রেমিক জুলিয়াস সিজারের এক ছেলের জন্ম দেন, যদিও জুলিয়াস সিজার প্রকাশ্যে কখনোই তাকে ছেলে হিসেবে স্বীকৃতি দেননি। খ্রিস্টপূর্ব ৪৬ সালে জুলিয়াস সিজারের আমন্ত্রণে ক্লিওপেট্রা তার ছেলে ও স্বামীসহ রোম ভ্রমণে যান। এ সময় ক্লিওপেট্রার প্রতি সিজারের মুগ্ধতা রোমান রাজনীতিকদের পছন্দ হয়নি। তারা সিজারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। খ্রিস্টপূর্ব ৪৪ সালে রোমে অবস্থানকালেই সিজারকে হত্যা করা হয়। এই হত্যায় ক্লিওপেট্রা চিন্তিত হয়ে পড়েন, কারণ সিজার ছিলেন তার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার একটি অস্ত্র। তাছাড়া জুনিয়র সিজার ভবিষ্যতে রোমের রাজা হবে, এমন স্বপ্নই দেখতেন রানী।
ক্লিওপেট্রা ছিলেন অন্যতম ক্ষমতাধর নারী শাসক
আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট মিশর জয়ের পর তার সেনাপতি টলেমি মিশর শাসন শুরু করেন। ক্লিওপেট্রা টলেমির বংশধর। ইতিহাসবিদের মতে খ্রিস্টপূর্ব ৫১ অব্দে রোম সম্রাট টলেমি অলেতিস মারা যান। তবে তার আগে টলেমি মারা গেলে এই বিশাল সাম্রাজ্যের উত্তরাধিকার কে হবেন সে নিয়ে চারদিকে আলোচনা শুরু হয়। অবশেষে তিনি বেছে নেন ক্লিওপেট্রা ও তার পুত্র টলেমিকে।
ক্লিওপেট্রার বাবা সপ্তম টলেমির মৃত্যুর পর ক্লিওপেট্রা তার ছোট ভাই টলেমি ত্রয়োদশের সঙ্গে যৌথভাবে মিশর শাসন শুরু করেন। ধারণা করা হয় ক্লিওপেট্রা টলেমি ত্রয়োদশকে বিয়েও করেন। ক্লিওপেট্রা মাত্র ৩৯ বছর বেঁচে ছিলেন যার ২২ বছর তিনি মিশর শাসন করেন। এই শাসন কালেই তিনি মিশরকে প্রগতী এবং উন্নতির শিখরে নিয়ে যান।
১৯৯১ সালের ২৩ জানুয়ারি ভূমধ্যসাগরের গভীরে পাওয়া যায় ক্লিওপেট্রার প্রাসাদের অস্তিত্ব
এর মধ্যেও নাকি নিজের আখের গোছাতে ভোলেননি এই রহস্যময় নারী। কথিত আছে মিশরীয় রানি ক্লিওপেট্রার সাগরতলে গুপ্ত রাজপ্রাসাদ ছিল। প্রায় ১ হাজার ৪০০ বছর পর ভূমধ্যসাগরের গভীরে পাওয়া যায় এই প্রাসাদের অস্তিত্ব।
মাত্র ৩৯ বছরের জীবনে ক্লিওপেট্রা তার সৌন্দর্য, মোহনীয়তা, ক্ষমতা আর প্রচন্ড উচ্চাভিলাষী জীবন যাপন নিয়ে প্রাচীন মিশরের আলোচিত এক নাম ছিল। তাকে সর্বকালের সেরা নারী শাষকদের অন্যতম বলেও দাবী করেন কেউ কেউ। ফলে নারী শাষককে নিয়ে মিথ আর লোককথার ফুলছড়ি হরহামেশায় শোনা যায়। সাগরতলে গুপ্ত রাজপ্রাদ সেই মিথের অংশ কিনা, সেটা জানতে অপেক্ষা করতে হয়েছিল প্রায় দেড় হাজার বছর।
রানি ক্লিওপেট্রার রাজ্যের অনেক মূর্তি, মুদ্রা পাওয়া যায়
মিশর কাঁপানো এই ক্ষমতাধরকে নিয়ে ইতিহাস বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে ঔপন্যাসিক, নাট্যকার তাকে ঘিরে লিখেছেন শত শত গল্প, উপন্যাস, নাটক। মঞ্চে উঠেছে তার ট্র্যাজেডি।
উইলিয়াম শেক্সপিয়রের ‘অ্যান্টনি অ্যান্ড ক্লিওপেট্র’, জর্জ বার্নাড শর ‘সিজার ক্লিওপেট্রা’, জন ড্রাইডেনের ‘অল ফর লাভ’, হেনরি হ্যাগাডের ‘ক্লিওপেট্রা’। শুধু তার সময়েই নয়, এখনো ইতিহাস কাঁপানো এ কিংবদন্তী নারী বহু পুরুষের কাছেও আকাঙ্খিত।
মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ার একদল ডুবুরি হঠাৎ করেই পেয়ে যান ক্লিওপেট্রার প্রাসাদ ও দুর্গের ধ্বংসাবশেষ
ক্লিওপেট্রার বুদ্ধিমত্তা আর সৌন্দর্যের কথা তখন রাজ্য থেকে রাজ্যে ছড়িয়ে গেছে। লোকমুখে সে কথা অ্যান্টনির কানেও পৌঁছেছিল। অ্যান্টনি চাইলেন যে কোনোভাবেই হোক ক্লিওপেট্রার সঙ্গে দেখা করবেন। রোম থেকে অ্যান্টনি এলেন ক্লিওপেট্রার রাজকীয় প্রাসাদে। এ মিথ কে না জানে, প্রথম দেখাতেই ক্লিওপেট্রার মন জিতে নেন অ্যান্টনি। অবশ্য কারও কারও মতে মিশর আক্রমণ করতে এসে ক্লিওপেট্রার প্রেমে পড়ে যান রোমান বীর অ্যান্টনি। প্রেমের আগুনে তখন পুড়ছেন দুজনেই।
এদিকে হিসাব বেশ পাল্টে গেছে। ক্লিওপেট্রা শুধু প্রেমই পেলেন না, সঙ্গে পেয়েছেন সিংহাসন রক্ষায় এক পরাক্রমশালী বীরের সমর্থন।ক্লিওপেট্রাকে নিয়ে সেই কৌতূহলের শেষ নেই আজও। এখনো আগ্রহীরা খোঁজ করেন তার চিহ্নটুকু। ক্লিওপেট্রা এবং তার শাসন পদ্ধতি সবই যেন রহস্যময়। ক্লিওপেট্রার প্রাসাদ এবং সাম্রাজ্যের বড় অংশ এখন ঘুমিয়ে আছে ভূমধ্যসাগরের নিচে।
গ্রিক ঐতিহাসিক স্ত্রাবোর লেখায় জানা যায় ক্লিওপেট্রার প্রাসাদ ছিল মিশরের অ্যান্তিরহোদোস দ্বীপে। এই দ্বীপের অস্তিত্ব বহুদিন আধুনিক পৃথিবী জানতে পারেনি। খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকে এক ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প এবং সুনামিতে ক্লিওপেট্রার প্রাসাদসহ এই দ্বীপটিকে গ্রাস করে নিয়েছে ভূমধ্যসাগর। প্রায় এক হাজার ছয়শ বছর আগে ভূমিকম্প ও সুনামিতে তলিয়ে যায় আলেকজান্দ্রিয়ার বিখ্যাত বাতিঘরও। তখনই নিশ্চিত হওয়া যায় সাগরতলে গুপ্ত রাজপ্রাস ছিল না রানির। এটা কালের পরিক্রমায় ধ্বংস হয়েছে। সাগর তলে ডুবে গেছে।
কিছু কিছু উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল
মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ার একদল ডুবুরি হঠাৎ করেই পেয়ে যান ক্লিওপেট্রার প্রাসাদ ও দুর্গের ধ্বংসাবশেষ। এই ডুবুরি দলের নেতৃত্বে ছিলেন ফ্রান্সের প্রত্নতত্ত্ববিদ ফ্র্যাঙ্ক গর্ডিও। ১৯৯০ থেকে তারা সাগর চষে বেড়ান শুধু ক্লিওপেট্রার হারিয়ে যাওয়া সাম্রাজ্যের খোঁজে। ১৯৯১ সালের ২৩ জানুয়ারি ভূমধ্যসাগরের গভীরে পাওয়া যায় ক্লিওপেট্রার প্রাসাদের অস্তিত্ব। কার্বন ডেটিং পরীক্ষা করে বলা হলো, এই প্রাসাদ তৈরি হয়েছিল রানির জন্মেরও ৩০০ বছর আগে।
ক্লিওপেট্রার প্রেমিক জুলিয়াস সিজারের ছেলে সিজারিয়ানের মাথার পাথরের মুকুট উদ্ধার করেছিল ডুবুরিরা
পানির অতলে ঘুমিয়ে আছে প্রাচীন নগরী, লাল রঙের মিশরীয় গ্র্যানাইটে তৈরি দেবী আইসিসের মূর্তি ক্লিওপেট্রার পরিবারের সদস্যদের মূর্তি প্রচুর অলঙ্কার বাসনপত্র এবং স্ফিংক্সের দুটি মূর্তি। রয়েছে সে সময়ের মুদ্রা থেকে শাসকদের মূর্তি। ডুবুরিরা তুলেও এনেছেন মিশরের শেষ রানি ক্লিওপেট্রার রাজ্যের অনেক মূর্তি, মুদ্রা ইত্যাদি।
প্রত্নতত্ত্ববিদ গর্ডিও ও তার দল ক্লিওপেট্রা এবং তার প্রেমিক জুলিয়াস সিজারের ছেলে সিজারিয়ানের মাথার পাথরের মুকুট উদ্ধার করে। সাগরের নিচে প্রায় এক হাজার ৪০০ বছরের কাদা মাখা ইতিহাসের অমূল্য এই দলিলের বেশ কিছু নিদর্শন তুলে আনা হয়েছে জনসমক্ষে। তবে নানান প্রতিকূলতার জন্য বেশির ভাগই রয়ে গেছে পানির নিচে।
এমন অসংখ্য স্থাপনা পাওয়া যায় কাদা বালিতে
প্রথমে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষকরা বেশ কৌতূহলী হয়ে ছিলেন এই গুপ্ত প্রাসাদ নিয়ে। পড়ে অবশ্য বহু পরীক্ষা নিরিক্ষার পর জানা যায়, এই প্রাসাদ রানি তৈরি করেন নি। তার গুপ্ত কোনো প্রাসাদ বা সাম্রাজ্য ছিল না। বরং তার বাবার প্রাসাদে থেকেই তিনি ২২ বছর শাসন করেছেন তার সাম্রাজ্য।
সবচেয়ে বেশি মিশরের উন্নতি ঘটিয়েছিলেন ক্লিওপেট্রাই। এজন্য প্রজাদের কাছে প্রিয় ছিলেন তিনি। তবে বর্তমান বিশ্বেও আলোচিত এই রানির শেষটা ছিল খুবই করুণ। মৃত্যু নিয়েও রয়েছে নানান বিতর্ক। সেই সঙ্গে সমাধিরও খোঁজ মেলেনি আজো। কেউ বলেন সাপের কামড়ে, কেউ বলেন বিষ পানে আত্মহত্যা করেছিলেন ক্লিওপেট্রা। তার সমাধি অই একই ভূমিকম্প আর সুনামিতে হারিয়ে গেছে সাগরতলে।
তথ্যসূত্র :
১. ক্লিওপেট্রা কুইন অফ ইজিপ্ট
২. ক্লিওপেট্রা ৭ বায়োগ্রাফি
৩. ক্লিওপেট্রা বায়োগ্রাফি : কুইন অফ ইজিপ্ট
৪. ক্লিউপেট্রা: ফ্রম হিস্ট্রি টু লেজেন্ডে, টেমস অ্যান্ড হাডসন
৫. ক্লিউপেট্রা দ্য গ্রেট: দি উম্যান বিহাইন্ড দি লেজেন্ড
৬. উইকিপিডিয়া