মানুষ অনেক ভেবে এমন কিছু করে যা তাকে বিখ্যাত করে তোলে। আবার অনেকে না ভেবেই এমন কিছু করে যাতে সে বিখ্যাত হয়ে যায়। থমাস ফিজপ্যাট্রিক নিঃসন্দেহে দ্বিতীয় দলে। যিনি টম ফিজ নামেই বেশি পরিচিত। তিনি ছিলেন আমেরিকান পাইলট। এমন কান্ড ঘটিয়েছিলেন তিনি যেটা পরবর্তীতে আর কেউ ঘটানোর সাহস করবেন না। তো কি করেছিলেন তিনি? সেটা জানতে আমাদের ফিরে যেতে হবে ১৯৫৬ সালে ৩০শে সেপ্টেম্বরের রাতে।
সেদিন ভীষণ গরম পরেছিলো নিউ ইয়র্কে। নিউ ইয়র্ক সিটি বারে সন্ধ্যা থেকেই ভীষণ ভীড়। টম ফিজও সেখানে গলা ভেজাচ্ছিলেন। হয়তো একটু বেশিই খেয়েছিলেন। তাই বারে অন্য একজনের সাথে ভীষণ তর্ক লেগে গেলো। পাইলট হিসেবে তার গর্বের শেষ ছিলো না। তিনি বাজি ধরে বসলেন নিউজার্সি থেকে ১৫ মিনিটে নিউইয়র্কে প্লেন নিয়ে আসবেন তাও লাইট না জ্বালিয়ে। কেউই তা বিশ্বাস করলো না। তিনিও রেগেমেগে বেরিয়ে গেলেন। তারপর সোজা চলে গেলেন নিউ জার্সির টেরেবরো স্কুলে।
সেখানে বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। টম ফিজ এক ইঞ্জিনের ছোট্ট একটা প্লেন চুরি করে তা নিয়ে উড়াল দিলেন। এবং সত্যি সত্যি সেই বারের সামনে ১৫ মিনিট পর ল্যান্ডিং করলেন। সেটা তিনি করেছিলেন কোনোও লাইট না জ্বালিয়ে এবং রেডিও চালু না করেই। এমন কান্ডের পর আদালত তাকে ১০০ ডলার জরিমানা করে। তবে এই কাজটা এই একবারই করলে হয়তো তিনি এতোটা পরিচিতি পেতেন না। দুই বছর পর তিনি একই কান্ড আবার ঘটান।
৪ই আক্টোবর, ১৯৫৮ সাল। রাত ঠিক একটার আগে ইয়েশিভা ইউনিভার্সিটির সামনের মাঠে একটা ছোট্ট প্লেন ল্যান্ড করে। আশেপাশের লোকজন দৌড়ে জড়ো হয় মাঠে। তারা অবাক হয়ে দেখে টম বেরিয়ে আসছে ককপিট থেকে। এবার তাকে গ্রেফতার করা হয়। আদালতে টম বলেন, আমি প্রচুর মদ খেয়েছিলাম। আর বারের লোকজন বিশ্বাস করছিলো না আমি প্লেন চুরি করে রাস্তায় ল্যান্ড করেছিলাম।
তাই তাদের সাথে বাজি ধরে আমি টেরেবরো স্কুলে যাই প্লেন চুরি করতে এবং ভার্সিটি মাঠে প্লেন ল্যান্ড করাই। বিচারক ধমক দিয়ে বলেন, তোমার যদি প্রথমবার কঠিন শাস্তি হতো তাহলে তুমি দ্বিতীয়বার এমন করতে না। টম জবাব দিলেন, আমি নই, আমার পেটে যাওয়া মদগুলো এমন করেছে। বিরক্ত বিচারক তাকে ছয় মাসের জেল দেন। পরে আর তিনি এমন কান্ড না করলেও ঠিকই বিখ্যাত হয়ে যান।
টমাস ফিজ ২০০৯ সালে নিউইয়র্কে মৃত্যুবরণ করেন।।