মৌলিক খাদ্যসামগ্রীর দাম বৃদ্ধির ফলে পৃথিবীব্যাপী খাদ্য সুরক্ষার ওপর চাপ বেড়েছে। এতে বিশ্বের প্রায় চার কোটি ১০ লাখের মতো মানুষ আসন্ন দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ইতালির রোমভিত্তিক ডব্লিউএফপি’র নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলে বলেছেন, ‘এছাড়া আরও পাঁচ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মতো দুরবস্থার মধ্যে রয়েছেন। বর্তমানে চারটি দেশে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪ কোটি ১০ লাখের মতো মানুষের দুয়ারে দুর্ভিক্ষ কড়া নাড়ছে। ঝুঁকিতে থাকা ৪৩ দেশের এসব মানুষের জন্য আমাদের জরুরিভিত্তিতে ৬০০ কোটি ডলার প্রয়োজন।
সংকট মোকাবিলায় দ্রুত তহবিলের যোগান চেয়ে আরও বলেন, ‘আমাদের তহবিল দরকার এবং এটা আমাদের এখনই দরকার। জানা যায়, বিগত কয়েক দশক ধরে বিশ্বজুড়ে প্রতি বেলা খাবার পায় না এমন মানুষের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ার পর দেশে দেশে সংঘাত ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০১৬ সাল থেকে সেই সংখ্যাটা আবার বাড়তে শুরু করেছে।
ডব্লিউএফপির হিসাব অনুযায়ী ২০১৯ সালে দুর্ভিক্ষের মুখে থাকা মানুষের সংখ্যা ছিল দুই কোটি ৭০ লাখ। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে এই সংখ্যাটা দ্রুত বাড়তে থাকে। আর চলতি বছর তা চার কোটি ছাড়িয়েছে। গত মে মাসে বিশ্বে খাদ্যদ্রব্যের দাম এক দশকে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছায়। জাতিসংঘের হিসাবে, গত মাসে বিশ্বে দানাদার খাবার, তেল, দুগ্ধজাত পণ্য, মাংস এবং চিনির মতো জরুরি খাদ্যপণ্যের দাম এক বছর আগের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেড়েছে।
লেবানন, নাইজেরিয়া, সুদান, ভেনেজুয়েলা এবং জিম্বাবুয়ের মতো দেশে মুদ্রার অবমূল্যায়ন এই চাপগুলোকে আরও বাড়িয়ে তুলছে এবং খাদ্যপণ্যের দাম আরও বেশি করে বেড়েছে। আর এতে করে বিশ্বে খাদ্য সুরক্ষায় দেখা দিয়েছে এই বিপর্যয়।