Image default
আন্তর্জাতিক

অনিশ্চিত ভবিষ্যতের সম্মুখে দাঁড়িয়ে নেতানিয়াহু

বিশ্বের অন্যতম দক্ষ রাজনীতিবিদ হিসেবে বিবেচনা করা হয় তাকে। দেশের ইতিহাসে একটানা সবচেয়ে প্রধানমন্ত্রী পদে থাকার রেকর্ডটিও তার; কিন্তু এসব সত্ত্বেও ইসরায়েলের টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বর্তমানে অনেকটা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে পড়েছে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বুধবারই ইসরায়েলে শেষ হতে চলেছে নেতানিয়াহু যুগ। দেশটির মধ্যপন্থি নেতা ইয়ার লাপিদ ও কট্টর ডানপন্থী নেতা নাফতালি বেনেট বুধবার বেলা ১১ টার দিকে ঘোষণা করতে যাচ্ছেন দেশটির নতুন যৌথ (কোয়ালিশন) সরকার, যেখানে নেতানিয়াহুর দল লিকুদ পার্টির স্থান হবে না।

বুধবার এক বিবৃতিতে ইয়ার লাপিদের রাজনৈতিক দল ইয়েশ আতিদ ও নেতানিয়াহু সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্টজের রাজনৈতিক দল ব্লু অ্যান্ড হোয়াইট পার্টির পক্ষ থেকে এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলের গণতন্ত্র ও সমাজব্যবস্থাকে আরো উন্নততর করে তুলতে যে নতুন সরকার গঠন গঠন হতে যাচ্ছে, তাতে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন ইয়ার লাপিদ ও বেনি গান্টজ।’ ইসরায়েলের দৈনিক পত্রিকতা ইয়েদিওৎ আহরোনোৎ এর বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলের জাতীয় নির্বাচনে দেশটির পার্লামেন্ট নেসেটের বিভিন্ন আসনে জয়ী প্রার্থীরা আসন্ন সরকারে কে কোন দায়িত্বে থাকবেন, সে বিষয়টিও একরকম চুড়ান্ত হয়ে গেছে।

ইয়েদিওৎ আহরোনোৎ জানিয়েছে, দেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ লাভের দৌড়ে এগিয়ে আছেন কট্টর ডানপন্থি নেতা নাফতালি বেনেট। সাম্প্রতিক নির্বাচনে তার রাজনৈতিক দল ইয়ামিনা পার্টি নেসেটে মাত্র ৬ টি আসন পেলেও দেশের রাজনীতির ‘নাটের গুরু’ বা ‘কিং মেকার’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন নাফাতালি বেনেট। নেতানিয়াহু সরকার আমলে দেশটির প্রধান বিরোধী নেতা ইয়ার লাপিদ দেশটির একসময়কার সফল সাংবাদিক ও জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক ছিলেন। সাংবাদিকতা থেকেই রাজনীতিতে তার আগমন। তার পিতা ও ইসরায়েলের সাবেক আইন ও বিচারবিভাগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইউসেফ টমি লাপিদও একসময় সাংবাদিক এবং রাজনৈতিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির অধিকারী ছিলেন।

ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটের আসন সংখ্যা ১২০ টি। এবারের নির্বাচনে দেশটির বৃহত্তম রাজনৈতিক দল লিকুদ পার্টি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হয়। নতুন সরকার গঠনের জন্য ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে ২৮ দিনের সময় বেধে দিয়েছিলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিউভেন রিভলিন। উগ্র ডানপন্থী ইয়ামিনা-সহ দেশটির ছোট ছোট কট্টর ডানপন্থী এবং ধর্মীয় দলগুলোকে নিয়ে জোট গঠনের চেষ্টা চালালেও ব্যর্থ হন নেতানিয়াহু। ডান, মধ্য এবং বামপন্থী দলগুলোর সমন্বয়ে জোট গঠনের মাধ্যমে ‌‌‘পরিবর্তনের সরকার’ গড়ার চেষ্টা করেন ইয়ার লাপিদ। এক পর্যায়ে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট রিভলিনও ঝুঁকে যান লাপিদের দিকে।

ইসরায়েলের রাজনীতি বিশ্লেষক একাংশ বলছেন, করোনা মহামারি দেখা দেওয়ার পর থেকে একের পর এক দীর্ঘমেয়াদি লকডাউন ও এর ফলে সৃষ্ট বেকারত্ব, কর্মহীনতা ও দারিদ্র্য নেতানিয়াহুর জনপ্রিয়তায় ধস নামানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে। অন্যদিকে, ক্ষমতায় থাককালে দুর্নীতিতে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে। ইসলায়েলের আদলতে সেই বিষয়ক তিনটি মামলাও চলছে। এই ব্যাপারটি তার জনপ্রিয়তাকে আরো তলানিতে নিয়ে গেছে বলে মত দিয়েছেন অনেক রাজনীতি বিশ্লেষক।

Related posts

কানাডায় বন্দুক হামলায় নিহত ৬

News Desk

ইলন মাস্কের প্রস্তাব গ্রহণ করছে টুইটার

News Desk

ভারতে একদিনে মৃত্যু প্রায় ৪ হাজার, কমেছে সংক্রমণ

News Desk

Leave a Comment