Image default
আন্তর্জাতিক

অ্যান্টিবডি তৈরিতে কোভ্যাক্সিনের চেয়ে এগিয়ে কোভিশিল্ড

অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা কোভিশিল্ড ও ভারত বায়োটেকের করোনা টিকা কোভ্যাক্সিনের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরির ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে কোভিশিল্ড। টিকার কার্যকারিতা বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন-ইনডিউসড অ্যান্টিবডি টাইটার (কোভ্যাট) তাদের সাম্প্রতিক গবেষণায় এই তথ্য জানিয়েছে।

শনিবার এক বিবৃতিতে কোভ্যাটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোভ্যাক্সিন ও কোভিশিল্ড— এই দুই করোনা টিকার মধ্যে কোনটি অধিকমাত্রায় অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম সে বিষয়ে সম্প্রতি গবেষণার সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি। কোভ্যাটের গবেষক এ কে সিংহকে প্রধান করে এ বিষয়ক একটি দলও গঠন করা হয়।

গবেষণার জন্য বেছে নেওয়া হয় ৫৫২ জন স্বেচ্ছাসেবী স্বাস্থকর্মীকে। তাদের মধ্যে পুরুষ স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা ছিল ৩২৫ জন এবং নারী ছিলেন ২২৭ জন।

তারপর ৪২৫ জন স্বেচ্ছাসেবীকে কোভিশিল্ড ও বাকি ৯০ জনকে কোভ্যক্সিন টিকার দু’ডোজ টিকা দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট সময় পর দেখা গেছে, যারা কোভিশিল্ডের ডোজ নিয়েছিলেন, তাদের দেহে অ্যান্টিবডির উপস্থিতি রয়েছে ৯৮ দশমিক ১ শতাংশ।

অন্যদিকে, যেসব স্বেচ্ছাসেবী কোভ্যক্সিন টিকার দু’ডোজ নিয়েছিলেন, তাদের করোনা প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে ৮০ শতাংশ।

বিবৃতিতে কোভ্যাট জানিয়েছে, গবেষণায় সেই সব স্বাস্থ্যকর্মীদের বেছে নেওয়া হয়েছিল, যাদের ইতপূর্বে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার রেকর্ড নেই।

আরও বলা হয়, এটি হচ্ছে গবেষণার প্রাথমিক ফল, এখনও এর পিআর রিভিউ হয়নি। এ কারণে ক্লিনিক্যাল পর্যায়ে, অর্থাৎ ব্যবহারিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই তথ্যকে গুরুত্ব না দেওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

অনেক ভারতীয় গবেষক অবশ্য এই গবেষণাকে বেশি গুরুত্ব না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের যুক্তি, টিকার মূল কাজ মানুষের অভ্যন্তরীণ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করা। সেই যুক্তি অনুযায়ী, টিকা নেওয়ার পর দেহে অ্যান্টিবডির মাত্রা বেশি থাকলেও অভ্যন্তরীণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলে পুনরায় করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।

উদাহারণ হিসেবে তারা কোভ্যাটের বিবৃতির একটি অংশের দিকে সবার মনযোগ আকর্ষণ করেছেন সেখানে বলা হয়েছে, টিকার দু’ডোজ নেওয়ার পর ২৭ জন (৮ দশমিক ৯ শতাংশ) স্বেচ্ছাসেবী করোনায় আক্রান্ত হন। তাদরে মধ্যে ২৫ জনের মৃদু ও দুই জনের মাঝারি উপসর্গ দেখা গিয়েছিল।

দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে এগিয়ে আছেন কোভিশিল্ড টিকার ডোজ গ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবীরা। কোভ্যাট জানিয়েছে, কোভিশিল্ড টিকার ২ ডোজ নেওয়া স্বেচ্ছাসেবীদের ক্ষেত্রে আক্রান্তের হার ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ও কোভ্যাক্সিনের ২ ডোজ নেওয়াদের ক্ষেত্রে এই হার ২ দশমিক ২ শতাংশ।

এই প্রসঙ্গে ভারতের চিকিৎসকদের জাতীয় সংগঠন ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ) জ্যেষ্ঠ সদস্য রাজীব জয়দেবন বলেন, ‘একজন কতটা সুরক্ষিত, সেটা কত শতাংশ অ্যান্টি-স্পাইক অ্যান্টিবডি তাঁর মধ্যে রয়েছে, তা নির্ধারণ করার একমাত্র মাপকাঠি নয়।’

ভারতের করোনাটিকা কোভ্যাক্সিন প্রস্তুতকারী কোম্পানির নাম ভারত বায়োটেক। হায়দারাবাদভিত্তিক এই কোম্পানিটি মূলত ওষুধ ও টিকা প্রস্তুতকারী কোম্পানি।অন্যদিকে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ফর্মুলায় কোভিশিল্ড টিকাটি প্রস্তুত করেছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ টিকা প্রস্তুতকারী ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট।

গত ১৬ জানুয়ারি থেকে ভারতে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। কর্মসূচিতে এই দুই টিকাই ব্যবহার করছে দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

Related posts

সেতুর মাঝে দাঁড়িয়েই শুভ বিবাহ সম্পন্ন

News Desk

বিমানবন্দরে বাধা, পুলিৎজার নিতে যেতে পারলেন না কাশ্মিরের সাংবাদিক

News Desk

মালয়েশিয়ায় ইতিহাসের বদল, ঝুলন্ত পার্লামেন্ট

News Desk

Leave a Comment