প্রায় দুই দশক ধরে আফগানিস্তানে তথাকথিত ‘শান্তিপ্রতিষ্ঠা’র মিশন চালিয়ে অবশেষে পশ্চিমা দেশগুলোর বোধোদয় হয়েছে, নিজেদের নিরাপত্তায় আফগান সামরিক বাহিনী একাই যথেষ্ট। সম্প্রতি উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট বা ন্যাটোর প্রধান নিজেই এ কথা বলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে টুইন টাওয়ার হামলায় জড়িত আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে সমর্থন করার অভিযোগে ২০০১ সালে আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করে মার্কিন বাহিনী। এর দু’বছর পরেই দেশটিতে নিরাপত্তা ‘রক্ষা’র দায়িত্ব নেয় ন্যাটো। বর্তমানে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের সাড়ে তিন হাজারসহ ন্যাটোর নয় হাজারের মতো সৈন্য রয়েছে। আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিজেদের সব সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। একই পথ অনুসরণ করবে ন্যাটোও।
সম্প্রতি এ সামরিক জোটের মহাসচিব জেনস স্টোলটেনবার্গ বলেন, আমার মনে হয় আফগানরাও বুঝতে পেরেছে, আমরা এখানে ২০ বছর ধরে রয়েছি এবং আফগানিস্তানে প্রচুর রক্ত ও ধন-সম্পদ ব্যয় করেছি।
তিনি বলেন, শক্তিশালী, দক্ষ নিরাপত্তা বাহিনী প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও বহুদূর এগিয়েছে আফগানিস্তান। কোনো একটি পর্যায়ে নিজ দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার পুরো দায়িত্ব আফগানদেরই নিতে হতো।
পশ্চিমা সামরিক জোটের প্রায় দুই দশকের এই অভিযানে আফগানিস্তানের কী অর্জন হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। দেশটিতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সহিংসতা কমার বদলে উল্টো বেড়েছে। জাতিসংঘের হিসাবে, এক বছর আগের তুলনায় চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে আফগানিস্তানে বেসামরিক নাগরিক হতাহতের সংখ্যা অনেক বেশি। বেড়েছে নারী ও শিশুদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও। আফগানিস্তান এখনো বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ। তাছাড়া সেখানকার একটি বড় অংশ আজও তালেবানের নিয়ন্ত্রণে।
স্টোলটেনবার্গ বলেছেন, ন্যাটো দেশগুলো আফগানিস্তানকে বেসামরিক বিশেষজ্ঞ দিয়ে সহায়তা অব্যাহত রাখবে। এ ধরনের বিশেষজ্ঞরা আফগান মন্ত্রণালয়গুলোকে পরামর্শ, নিরাপত্তা বাহিনীতে অর্থায়ন এবং সরকার-তালেবান শান্তি আলোচনা এগিয়ে নেয়ায় সমর্থনের মাধ্যমে সাহায্য করবেন।
তিনি জানিয়েছেন, আফগান বাহিনীর সদস্যদের বিদেশে প্রশিক্ষণ দেয়ার চিন্তাভাবনা করছে ন্যাটো। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।