সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে তালেবানের হামলার তীব্রতা বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে বেনামে হামলার সংখ্যাও। এমন পরিস্থিতিতে জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন নতুন সরকার আফগানিস্তান থেকে সব সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। এতে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, আফগান নিরাপত্তা বাহিনী কি দেশের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে ধরে রাখতে পারবে না, নাকি আবারও তালেবান শাসনের অধীনে চলে যাবে আফগানিস্তান?
এদিকে গতকাল এক বিবৃতিতে তালেবান নাগরিকদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তার কথা বলেছে। এতে বলা হয়, আফগানিস্তানের যেসব নাগরিক বিদেশি সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাজ করেছে, তারা যদি অনুশোচনা প্রকাশ করে তা হলে তারা নিরাপদেই থাকতে পারবে। বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের কারণে কোনো বিপদ হবে না, কারোরই দেশ ছেড়ে যাওয়া উচিত হবে না।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসলামিক এমিরেট প্রত্যেককে জানাতে চায় যে, অতীতের কর্মকা-ের জন্য তাদের অনুতপ্ত হতে হবে এবং ভবিষ্যতে ইসলাম এবং দেশের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতক কোনো কাজে জড়ানো যাবে না। প্রসঙ্গত, আগামী ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে মার্কিন সেনাদের আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করে নেবে। তবে ওইদিন শুধু মার্কিন বাহিনীই নয়, আফগানিস্তান থেকে বিদায় নিতে শুরু করবে ন্যাটো সেনারাও।
এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তান ছেড়ে চলে গেলে আবারও তালেবান শক্ত অবস্থান গড়ে তুলবে। এতে আফগান সরকারের অস্তিত্ব অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৯ সালে মার্কিন সরকারের প্রকাশিত এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে- আফগান সরকার ৫৩.৮ শতাংশ জেলা নিয়ন্ত্রণ করে। এ ছাড়া ৩৩.৯ শতাংশ জেলায় দুপক্ষের মধ্যে দখলদারিত্ব নিয়ে লড়াই চলছে। এ ছাড়া ১২.৩ শতাংশ এলাকা তালেবানরা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তবে মার্কিন সেনা যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে দেওয়ার প্রেক্ষাপটে তালেবানরা নিজেদের আধিপত্য বাড়াবে। কিছু কিছু খবরে বলা হচ্ছে- গত দুই বছরে তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকা আরও বেড়েছে।
পুলিশ বাহিনীতে নারী নির্যাতন : আফগান পুলিশ বাহিনীতে নারী সদস্যদের ওপর ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। বিবিসির তদন্তে দেখা গেছে, আফগান পুলিশে নারী সদস্যরা তাদের সহকর্মীর দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আফগান সরকার বলছে- তারা দোষীদের শাস্তি দেবে। কিন্তু মানবাধিকার সংস্থা বলছে- এসব শুধুই কথার কথা।