তালেবানের বিরুদ্ধে আফগান সেনাবাহিনীর লড়াইয়ে বিমান হামলা অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন শীর্ষ এক জেনারেল রোববার এই ঘোষণা দিয়েছেন। আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সেনা প্রত্যাহার শুরু পর থেকেই দেশটিতে তালেবানের হামলা বেড়ে গেছে। ইতোমধ্যেই বহু বিদেশি সেনা নিজ নিজ দেশে ফিরে গেছেন।
তালেবানরা বিভিন্ন শহরে আগ্রাসী হামলা চালাচ্ছে। ক্রমশ তারা একের পর এক এলাকা দখলে নিচ্ছে। তাদের এসব আগ্রাসী হামলা প্রতিহত করতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। স্থানীয় সময় রাত ৮টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত রাজধানী কাবুল ও অন্য দুটি প্রদেশ বাদে সারাদেশে রাত্রীকালীন কারফিউ জারি করা হয়।
আফগানিস্তানের অধিকাংশ এলাকা দখলের দাবি করেছে তালেবান। তবে শতকরা ৯০ ভাগ সীমান্তের ওপর নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করার যে দাবি তালেবান করেছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ফুয়াদ আমান বলেছেন, আফগান সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার পরিধি ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে এবং হাতছাড়া হয়ে যাওয়া জেলাগুলো তালেবানের কাছ থেকে একের পর এক পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে।
ইউএস আর্মি সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল কেনেথ ম্যাকেনজি কাবুল থেকে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘আফগান সেনাবাহিনীকে সহায়তা দিতে গত কয়েকদিনে বিমান হামলা বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তালেবান যদি হামলা অব্যাহত রাখে তবে আফগানিস্তানকে এভাবেই সহায়তা দিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত।’
তবে তিনি এটা স্বীকার করেছেন যে, আফগান সরকারের জন্য সামনের দিনগুলো বেশ কঠিন। আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের কথা রয়েছে। কিন্তু তারপরেও আফগান বিমান বাহিনীকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
ম্যাকেনজি বলেন, ৩১ আগস্টের পরেও আমরা আফগান বাহিনীকে সমর্থন দিয়ে যাব। প্রায় দুই দশকের যুদ্ধের ইতি টেনে সম্প্রতি আফগানিস্তান থেকে সকল মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। ফিরে যাচ্ছে ন্যাটো সেনারাও। তবে সেনা ফেরানোর এই ঘোষণার পর থেকেই আফগান নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে তালেবানের সংঘর্ষ বেড়ে গেছে।
দু’পক্ষের সংঘর্ষে বহু সাধারণ মানুষও নিহত হয়েছে। এছাড়া ঘর-বাড়ি হারিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। এদিকে আফগানিস্তানে শরণার্থী সংকট মোকাবিলা এবং মার্কিন অনুগত আফগানদের বিশেষ ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যবহারের জন্য ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) ডলার জরুরি তহবিলের অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
গত শুক্রবার হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে, আফগানিস্তানের বতর্মান প্রেক্ষাপটে শরণার্থী, বাস্তুচ্যুত ও সহিংসতার শিকারসহ যারা নিরাপত্তার ঝুঁকিতে রয়েছেন, তাদের পাশে দাঁড়াতে এ অর্থ সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।