ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চল দখলে মরিয়া রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বিশেষ করে দনবাস খ্যাত দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক এই মুহূর্তে রাশিয়ার দখলে। তবে এতেই রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন থামবেন না বলে মন্তব্য করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলোর উদ্দেশে বলেছেন, ‘এখনই থামছেন না প্রেসিডেন্ট পুতিন। আর ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা তার সূচনা মাত্র। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙার প্রতিশোধ নিতে মুখিয়ে আছেন পুতিন। ফলে এবার তিনি তার সেনাদের পশ্চিমের অন্য দেশগুলো দখলের নির্দেশ দেবেন। বস্তুত, ইউক্রেনের পশ্চিমের পড়শি দেশ মলদোভার অংশ ট্রান্সনিস্ট্রিয়া নব্বইয়ের দশক থেকেই রাশিয়ার দখলে।
ইউক্রেনের পশ্চিমের দেশগুলো গ্রাস করতে চাইছে পুতিন
মারিউপোল দখলের পর রুশ জেনারেল রুস্তম মিনেকায়েভ জানিয়েছেন, দক্ষিণ ইউক্রেনে রুশ নিয়ন্ত্রণ কায়েম হলে ট্রান্সনিস্ট্রিয়ার সঙ্গে মস্কোর যোগাযোগের সুবিধা হবে।
আজ ইউক্রেন যুদ্ধ দুই মাসে পড়ল। দিন যত যাচ্ছে রাশিয়া তার হামলার গতি তত জোরালো করছে। গত বুধবার ‘সারমত’ নামে একটি আন্তঃদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় রাশিয়া। পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম এই অস্ত্র যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম। সেই ‘সারমত’ ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে রাশিয়া।
দুই মাসে ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ এলাকা রুশ সেনাদের দখলে। যদিও রুশ দখলে যাওয়া বেশ কিছু এলাকা পুনর্দখল করেছে জেলেনস্কির সেনারা। এই পরিস্থিতিতে কিয়েভমুখী অভিযানের গতি কমিয়ে রুশ সীমান্ত লাগোয়া দনবাস অঞ্চল দখলকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন পুতিন। এ জন্য কিছুদিন আগে রুশ সেনাদের ‘সবচেয়ে দক্ষ এবং নৃশংস’ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত জেনারেল আলেকজান্দার দর্নিকভকে দনবাস দখলের দায়িত্ব দিয়েছেন পুতিন। অতীতে সিরিয়ার যুদ্ধে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের অনুগত বাহিনীর জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন দর্নিকভ।
এদিকে রুশ নৌবাহিনীর কৃষ্ণসাগর বহরের প্রধান যুদ্ধজাহাজ মস্কোভা ডুবির ঘটনায় এই প্রথম হতাহত হওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে রাশিয়া। গত সপ্তাহে মিসাইল ক্রুজার মস্কোভা ডুবে যায়। যদিও ইউক্রেন আগে থেকেই দাবি করে আসছে নিজেদের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে মস্কোভায় আগুন ধরে ডুবে যায়।
এতে একজন প্রাণ হারিয়েছেন বলেও বিষয়টি সামনে আনে তারা। তবে জাহাজডুবির ঘটনায় নিহত এবং নিখোঁজের বিষয়টি স্বীকার করেনি মস্কো। জাহাজে থাকা সব ক্রুকে উদ্ধারের দাবি করে এক ভিডিও প্রকাশ করে রুশ কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি দিমিত্রি শেক্রেবেটস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগপূর্ণ পোস্টে অভিযোগ করেন, তার ছেলে মস্কোভাতে বাবুর্চি হিসেবে কাজ করতেন। কিন্তু মস্কোভা ডুবে যাওয়ার পর থেকেই সে নিখোঁজ। তার এমন পোস্ট দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।