প্রয়োজনে ইউক্রেনে রুশ অভিযানে বেলারুশের সেনারাও অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। তবে এখন পর্যন্ত দেশটির সেনারা ইউক্রেন অভিযানে নামেননি বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার বেলারুশের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা বেলটার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনের বিদ্রোহী–নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চলে সেনা অভিযান শুরু করেছেন রুশ সেনারা। প্রতিবেশী দেশ বেলারুশ থেকেও রাশিয়ার সামরিক বাহিনী প্রবেশ করেছে ইউক্রেনে। কয়েক সপ্তাহ ধরেই বেলারুশে সেনাসজ্জা বাড়িয়েছে মস্কো। এ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো আপত্তি তুললেও ক্রেমলিন জানিয়েছিল, সামরিক মহড়ায় অংশ নিতেই সেখানে অবস্থান করছেন সেনারা।
আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো বলেন, ‘আমি আবার বলছি, আমাদের সেনারা সেখানে (ইউক্রেন) নেই। তবে যদি প্রয়োজন পড়ে, যদি বেলারুশ ও রাশিয়ার দরকার হয়, তাহলে তাঁরাও অংশ নেবেন।’
পুতিনের ঘোষণার পর স্থানীয় সময় আজ ভোর থেকেই ইউক্রেনের স্থল, আকাশ ও নৌপথে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। হামলা শুরুর পরপরই ইউক্রেনের শহরগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া শুরু হয়। রাজধানী কিয়েভেও শোনা যায় বিস্ফোরণের শব্দ। প্রাণভয়ে শহরটির বাসিন্দারা হন্যে হয়ে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছেন। এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের ৪০ সেনাসদস্য ও ১০ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কিয়েভ।
এদিকে হামলার পাল্টা জবাব দেওয়ার দাবি করেছে কিয়েভও। রাশিয়ার ছয়টি বিমান ও একটি হেলিকপ্টার ভূপাতিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটি। এ ছাড়া রাশিয়া-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা একটি শহরে হামলা করার পর তা প্রতিহত করার সময় প্রায় ৫০ জন ‘দখলদার রুশ’ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী।
ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনা মোতায়েনকে ঘিরে সম্প্রতি উত্তেজনা চরমে ওঠে।
দেশটিতে হামলা চালাতেই রাশিয়ার এ তত্পরতা বলে দাবি করছিল পশ্চিমা দেশগুলো। এমন দাবি প্রথম থেকেই উড়িয়ে দিলেও গত সোমবার ইউক্রেনে রুশ সমর্থনপুষ্ট বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেন পুতিন। এর ধারাবাহিকতায় দেশটিতে সরাসরি সামরিক অভিযানের নির্দেশ দিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বিশ্বনেতারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। ইউক্রেনে সামরিক শাসন জারির আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রুশ হামলার আশঙ্কায় গতকাল বুধবার দেশটিতে এক মাসের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।