ইউরোপের করোনাভাইরাস মহামারির ‘তৃতীয় ঢেউ’ আঘাত করতে শুরু করেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা মনে করছেন, ইউরোপে করোনার টিকাদানে ধীরগতি এবং অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ব্যবহার সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার ফলে সংক্রমণ আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) ইউরোপ শাখার আঞ্চলিক ডিরেক্টর হান্স ক্লুগ ফের সাবধান করে দিয়ে বলেন, যতই টিকাকরণ শুরু হয়ে যাক না কেন, পরিস্থিতি এখনো যথেষ্ট ভয়ের। প্রতি সপ্তাহে ইউরোপে নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন ১৬ লাখ মানুষ। অর্থাৎ, ঘণ্টায় ৯ হাজার ৫০০ জন আর মিনিটে ১৬০ জন।
হান্স জানান, প্রথমে কিছু দেশে সংক্রমণ কমার সামান্য লক্ষণ দেখা গিয়েছিল। কিন্তু সেটা দেখে সংক্রমণ হার কমেছে ধরে নেয়া ভুল হবে। শুধুমাত্র প্রবীণদের মধ্যে সংক্রমণ কমতে দেখা যাচ্ছে। হাসপাতালগুলোর অবস্থা এখনো একই রকম রয়েছে।
ডব্লিউএইচও-এর এই কর্মকর্তা জানান, তাদের কাছে নিয়মিত রিপোর্ট আসছে, আইসিইউয়ে জায়গা নেই। ফ্রান্সের উদাহরণ দিয়ে তিনি জানান, এপ্রিল মাসে এ দেশে আইসিইউয়ে রোগী ভর্তি সর্বোচ্চ স্তর ছুঁয়েছে। টিকাকরণ কেমন চলছে, কী পর্যায়ে রয়েছে, এ সব না-ভেবে সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে যা যা করা উচিত, সেই অনুযায়ী করোনা-বিধি তৈরি করার পরামর্শ দিয়েছেন হান্স। না-হলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা যে কোনো দিন ভেঙে পড়তে পারে, তাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি।
ইটালি, ফ্রান্সের পাশাপাশি জার্মানির পরিস্থিতিও ক্রমশ ঘোরালো হচ্ছে। দেশটির স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা রবার্ট কখ ইনস্টিটিউট জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯ হাজার ৪২৬ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। ২৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে একদিনে। এই নিয়ে সংক্রমিতের সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়াল জার্মানিতে। মৃত্যু ৮০ হাজার ছুঁইছুঁই। অর্থাৎ মৃত্যুহার অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেকটাই বেশি। প্রতি ১০ লক্ষ বাসিন্দার মধ্যে হাজারের কাছাকাছি মৃত্যু হয়েছে জার্মানিতে।