ইতালির সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী কে এই জর্জা মেলোনি?
আন্তর্জাতিক

ইতালির সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী কে এই জর্জা মেলোনি?

জর্জা মেলোনি। ছবি: সংগৃহীত

আনা মারিয়া তর্তোরা প্রায় চল্লিশ বছর ধরে রোমের বাজারে গ্রাহকদের কাছে পাকা টমেটো এবং তাজা শসা বিক্রি করেছেন। দাদার হাত ধরে তরকারি কেনার জন্য একসময় লাইনে দাঁড়ান ছোট মেয়েটাই এখন ইতালির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন সেটা তিনি ভাবতেই পারেননি।

সেই ছোট্ট মেয়েটি জর্জা মেলোনি। তার দলকে নির্বাচনে প্রথম স্থানে নিয়ে যাওয়ায় আনা মারিয়া গর্ব করছেন। খবর বিবিসির।

তিনি বলেছেন, তার দাদা দারুণ মানুষ ছিলেন এবং তার নাতনিকে খুব ভালোবাসতেন। ও আমার শিম খেয়েই বড় হয়েছে। ভালো খেয়েছে সে এবং ভালোই বেড়ে উঠেছে।

বাজারটি গারবাতেল্লাতে নামে একটি এলাকায় অবস্থিত। রোমের দক্ষিণাঞ্চলের এই জায়গাটিতে শ্রমজীবী শ্রেণীর বাস এবং ঐতিহ্যগতভাবে বামদের একটি ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। বেনিতো মুসোলিনির পর ইতালির প্রথম উগ্র ডানপন্থী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে থাকা এক রাজনীতিকের বেড়ে ওঠার জায়গা হিসেবে এলাকাটি একেবারেই বেমানান।

ইতালির নির্বাচনের ফলাফল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর দেশটির প্রেসিডেন্ট সার্জিও মাতারেলা একটি স্থিতিশীল সরকারের নেতৃত্ব কে দিতে পারবেন সেটি নির্ধারণ করতে দলীয় নেতাদের সাথে পরামর্শ করবেন। জর্জা মেলোনি এই দায়িত্বের জন্যে একদম সম্মুখভাগে রয়েছেন। তিনি সম্প্রতি একটি ভিডিওতে ইংরেজি, স্প্যানিশ এবং ফরাসি ভাষায় কথা বলেছেন।

রোমে জন্মগ্রহণ করা জর্জা মেলোনির বয়স যখন মাত্র এক বছর তখন তার বাবা ফ্রান্সেসকো পরিবারকে ছেড়ে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জে চলে যান। ফ্রান্সেসকো ছিলেন বামপন্থি আর তার মা আনা ডানপন্থি ছিলেন। অনেকে মনে করেন বাবার অনুপস্থিতিতে প্রতিশোধে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি তার রাজনীতির পথ বেছে নিয়েছেন।

তার পরিবার নানাবাড়ির কাছে গারবাতেল্লায় চলে যায়। সেখানেই ১৫ বছর বয়সে নব্য ফ্যাসিবাদী দল ইতালিয়ান সোশ্যাল মুভমেন্টের যুব ফ্রন্টে যোগ দেন তিনি। পরে দলটির উত্তরসূরি ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের ছাত্র শাখার সভাপতি হন তিনি।

১৯৯২ সালে জর্জা মেলোনি তার দরজায় কড়া নেড়েছিলেন। বয়সে দশ বছরের বড় মার্সিলিও তার একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং রাজনৈতিক মিত্র হয়ে ওঠেন। মার্সিলিও আজ আবরুজো অঞ্চলের প্রেসিডেন্ট।

২০০৮ সালে ৩১ বছর বয়সে জর্জা মেলোনি ইতালির সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী হন। তিনি সিলভিও বারলুসকোনির যুব ও ক্রীড়ামন্ত্রী নিযুক্ত হন। ২০১২ সালে নিজের দল গঠন করার পর ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি মাত্র চার শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন।

এখন মারিও দ্রাঘির জাতীয় ঐক্যজোট সরকারের বাইরে থাকা একমাত্র প্রধান দল হিসাবে ব্রাদার্স অব ইতালি ২২ থেকে ২৬ শতাংশ ভোট জিততে পারে বলে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। সিলভিও বারলুসকোনির সাথে তার ডানপন্থি জোট এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাটিও সালভিনির লিগ পার্টি মিলে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার পথে আছে।

মেলোনি যদিও ইতালির পশ্চিমা মিত্রদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করছেন। যেমন দ্রাঘি সরকারের ইউক্রেনপন্থাকে জোরালোভাবে সমর্থন করেছেন, কিন্তু তার কঠোর রক্ষণশীল সামাজিক নীতিগুলো অনেককে উদ্বিগ্ন করছে।

এনজে

Source link

Related posts

পুতিনকে টেলিফোন করে যা বললেন এরদোগান

News Desk

আলোচনায় প্রস্তুত রাশিয়া

News Desk

ভিডিও গেম খেলল পাত্রে রাখা মস্তিষ্ককোষ

News Desk

Leave a Comment