দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে কানাডায় ইতালীয় কানাডিয়ানদের আটক রাখার ঘটনায় ওই নাগরিকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। বৃহস্পতিবার হাউস অব কমন্সে দেওয়া ভাষণে ৮০ বছর আগের ওই ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন তিনি।
১৯৪০ সালে ইতালি জার্মানির সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার পর দেশটির প্রায় ৬০০ জনকে কানাডার বিভিন্ন ক্যাম্পে আটক রাখা হয়, চারজন নারীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়, আরও প্রায় ৩১ হাজার ইতালীয় কানাডিয়ানকে শত্রুপক্ষ ঘোষণা করা হয়। ফলে ওই সময় তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়। স্থানীয় প্রতিনিধির কাছে তাদের প্রতিদিন রিপোর্ট করতে বাধ্যও করা হয়েছিল ওইসময়।
ওই সময় এমন এক পরিস্থিতি তৈরি হয় যাতে বহু পরিবারে আয় করার মতো কেউ ছিল না। কারণ ওইসব পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কানাডার তৎকালীন সরকারের ওই সিদ্ধান্তের দায় পরবর্তীতে কেউ নেয়নি। তাছাড়া কানাডা যে মূল্যবোধ থেকে যুদ্ধে জড়িয়েছিল ওইসব কর্মকাণ্ড তার পরিপন্থি ছিল।
জাস্টিন ট্রুডো বলেন, বিনা অপরাধে যুদ্ধবন্দিদের ক্যাম্পে বা কারাগারে যাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাদের অনেকেই হয়তো আজ আর বেঁচে নেই, তাদের পরবর্তী প্রজন্ম যারা পূর্বপুরুষের ব্যথা বয়ে বেড়াচ্ছে, তাদের সম্প্রদায়, যে সম্প্রদায় আমাদের দেশের জন্য অনেক করেছে, তাদের কাছে আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
তবে নিজের ভাষণে ট্রুডো এও বলেন যে, নাৎসি জার্মানির সাথে জোট করা ইতালির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর যে সিদ্ধান্ত কানাডা সে সময় নিয়েছিল, সেই সিদ্ধান্ত ভুল ছিল না।
তিনি আরও বলেন, যাদের আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাদের কেউ ছিলেন ব্যবসায়ী, কেউ শ্রমিক কেউ আবার ছিলেন চিকিৎসক। তারা কারও বাবা ছিলেন, কারও মেয়ে, কারও বন্ধু। ক্যাম্পে নেওয়ার পর তাদের সাজার কোনো সীমা থাকতো না। কখনও কেউ হয়তো কয়েক মাস পর ছাড়া পেয়েছেন, কেউ আবার কয়েকবছর পরে ছাড়া পেয়েছেন। কিন্তু এর প্রভাব তারা সারা জীবন মনে রেখেছেন।