পাকিস্তানে তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআিই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানে তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআিই) নেতৃত্বে চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রকৃত স্বাধীনতার লড়াইয়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন দলটির চেয়ারম্যান ইমরান খান। দেশটির শাসকগোষ্ঠীকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেন, বৈধ রাজনৈতিক ম্যান্ডেট পাওয়ার পরও বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগকে দেশ শাসনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করায় পাকিস্তান বিভক্ত হয়েছিল। পিটিআইয়ের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের বর্তমান সরকার একই ধরনের ষড়যন্ত্র করছে বলেও অভিযোগ করেন ইমরান।
ইসলামাবাদমুখী লংমার্চ কর্মসূচির পঞ্চম দিনে গতকাল মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) গুজরানওয়ালা এলাকায় বক্তব্য দেওয়ার সময় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গত শুক্রবার বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে লাহোরের লিবার্টি চকে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ইমরান খান।
পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অপকর্ম উল্লেখ করে সমর্থকদের সামনে পিটিআই চেয়ারম্যান বলেন, আওয়ামী লীগকে তার নির্বাচিত ম্যান্ডেট দিতে অস্বীকৃতি জানানোর ফলে দেশের পূর্ব অর্ধেক (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) বিচ্ছিন্ন হয়েছিল।
১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী সে নির্বাচনের পর বিজয়ী শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা করে। এর জের ধরে শুরু হওয়া তীব্র রাজনৈতিক সংকট শেষ পর্যন্ত গড়ায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ। যার পরিসমাপ্তিতে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। ইমরান খান তার বক্তব্যে সেসব ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেন।
পিটিআইপ্রধান বলেন, একজন চতুর রাজনীতিবিদ (জুলফিকার আলী ভুট্টো) ক্ষমতার লোভে সশস্ত্র বাহিনীকে নির্বাচনে জয়ী তৎকালীন বৃহত্তম দলের (আওয়ামী লীগ) বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছিলেন, যার কারণে দেশটি ভেঙে যায়।
পিটিআইকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তুলনা করে ইমরান খান বলেন, আমার দল সবচেয়ে বড় ও একমাত্র ফেডারেল দল (পার্লামেন্টে আসন সংখ্যায়)। এরপরও নতুন নির্বাচন করতে রাজি হচ্ছে না সরকার।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, সবাই জানেন ১৯৭০ সালের নির্বাচনে মুজিবুর রহমান ও তার দল জয়লাভ করেছিল। ক্ষমতা হস্তান্তরের পরিবর্তে একজন চতুর রাজনীতিবিদ আওয়ামী লীগ ও সেনাবাহিনীকে সংঘর্ষের পথে নামিয়েছিলেন। বর্তমানে নওয়াজ শরীফ ও আসিফ আলী জারদারি একই ভূমিকা পালন করছেন। পিটিআইয়ের ক্ষমতায় ফেরার পথ আটকানোর জন্য তারা এস্টাবলিশমেন্টের (সেনাবাহিনী) সঙ্গে ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছেন।
এ সময় ইমরান খান সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফকে নির্বাচনের জন্য চ্যালেঞ্জ করেন। তিনি বলেন, নওয়াজ শরীফ আমি আপনাকে চ্যালেঞ্জ করছি, আপনি যখন দেশে ফিরবেন- আমি আপনাকে আপনার নির্বাচনী এলাকায় হারাবো।
আগের কর্মসূচি অনুযায়ী ৪ নভেম্বর লংমার্চ রাজধানী ইসলামাবাদে পৌঁছানোর কথা থাকলেও বর্তমানে লংমার্চের গতি অনেক কম। তবে এতে বিপুল জনসমাগম হচ্ছে।