‘প্রবল’ ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সম্ভাব্য তাণ্ডবের আশঙ্কায় ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় উপকূল থেকে ১০ লাখের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। মাত্র ৮ দিন আগে দেশটির পশ্চিম উপকূলে প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড় তওকতের আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই বুধবার প্রবল শক্তি নিয়ে ইয়াস আছড়ে পড়ার শঙ্কায় নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বলছে, বর্তমানে বঙ্গোপসাগরে শক্তি সঞ্চয় করে ভারতের পূর্ব উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। বুধবার পূর্বাঞ্চলীয় ওডিশা, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে আঘাত হানবে এই ঘূর্ণিঝড়।
দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন এবং নৌকায় করে উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল থেকে লাখ লাখ মানুষকে সরকারি বিভিন্ন ভবন, স্কুল ও অন্যান্য শক্ত স্থাপনায় সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন। গর্ভবতী নারী এবং শিশুদের সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। উত্তাল সমুদ্র থেকে জেলেদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আঘাত সবার আগে দেশটির ওডিশা রাজ্যের বালাসোর জেলায় হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে মাইক ব্যবহার করে অনুরোধ জানাচ্ছেন স্বেচ্ছাসেবকরা।
বালাসোরের ত্রাণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণকারী কর্মকর্তা বিশাল কুমার দেব বলেন, লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া সব সময়ই এক ধরনের চ্যালেঞ্জ। স্বাভাবিকভাবেই মানুষের অনীহা থাকে, তার ওপর এবার কোভিড-১৯ মহামারি।
তিনি বলেন, ‘লোকজন বারবার বলছেন, শুধুমাত্র বৃষ্টি বাড়লেই আমরা আশ্রয় কেন্দ্রে যাবো। আমরা তাদের বোঝাচ্ছি।’প্রত্যেক বছরের এই সময়ে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। ভারত এবং বাংলাদেশের সাগর তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতির ঘটনাও ঘটে।
ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। প্রত্যেকদিন লাখ লাখ মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত এবং হাজার হাজার মারা যাচ্ছেন। করোনাভাইরাস মহামারি সামলাতে দেশটি যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সম্ভাব্য আঘাত মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে ভারত।
ওডিশার কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা আশ্রয় শিবিরগুলোতে ঠাঁই নেওয়া মানুষের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা, তাপমাত্রা মাপছেন। যাদের শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা যাচ্ছে, তাদের আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।